বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিক-নিগ্রহের অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিশের ভূমিকা কী ছিল, তা জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বৃহস্পতিবার নির্দেশ দেন, ওই ঘটনায় পুলিশ এ-পর্যন্ত কী করেছে, বিস্তারিত ভাবে তা জানিয়ে ৩ মে আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে হবে বর্ধমান থানার আইসি-কে। অভিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তারদের কেন গ্রেফতার করা হয়নি, জানাতে হবে তা-ও। সেই সঙ্গে কেস ডায়েরিও জমা দিতে হবে।
২৮ মার্চ সকালে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সাংবাদিক ও আলোকচিত্রীরা সেই খবর সংগ্রহ করতে গেলে কিছু জুনিয়র ডাক্তার তাঁদের আক্রমণ করেন। কয়েক জন সাংবাদিক ও আলোকচিত্রী গুরুতর আহত হন। তার পরেই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে ওই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআই-কে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন বর্ধমানে কতর্র্ব্যরত ন’জন সাংবাদিক। আবেদনকারীদের অভিযোগ, পুলিশ ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেনি। তার বদলে সে-দিন যাঁরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে সাংবাদিকদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন, তাঁদের কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ দিন মামলার শুনানিতে আবেদনকারীদের আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, সাংবাদিকেরা আক্রান্ত হলেন। এফআইআরে অভিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তারদের নাম দেওয়া হল। অথচ পুলিশ যাঁদের গ্রেফতার করল, তাঁদের মধ্যে এক জনও জুনিয়র ডাক্তার নেই। সে-দিন মারমুখী জুনিয়র ডাক্তারদের আক্রমণের মুখে দাঁড়িয়ে যাঁরা সাংবাদিকদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন, উল্টে তাঁদেরই গ্রেফতার হতে হল। সুব্রতবাবু জানান, বর্ধমান জেলা আদালত অভিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তারদের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পরেও পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেনি।
সরকার পক্ষের আইনজীবী বলেন, এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি গ্রহণযোগ্য নয়। বিচারপতি বলেন, সিবিআই তদন্তের দাবি গ্রহণযোগ্য কি না, সেটা পরের বিষয়। কিন্তু অভিযুক্তদের কেন গ্রেফতার করা হল না, সেটা আগে জানা প্রয়োজন। সুব্রতবাবু বলেন, ঘটনার পরে এক মাস কেটে গিয়েছে। অভিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তারদের অনেকেই হাসপাতালে কাজ করছেন। কাজেই তাঁরা পলাতক, এমন কথা বলা যাবে না। পুলিশের চোখের সামনেই রয়েছেন তাঁরা। |