ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালের ন’জন ডিরেক্টর এবং তিন জন আধিকারিক ইতিমধ্যে জামিন পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তিন ডিরেক্টর এখনও ফেরার। আইনগত ত্রুটির জেরে তাঁদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারির নির্দেশের উপরেও স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত। গত ৮ ডিসেম্বর রাতে ওই হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে ৯৩ জনের প্রাণহানির ঘটনায় এখন জেল-হাজতে স্রেফ এক জন আধিকারিক। এই পরিস্থিতিতে অধরা তিন ডিরেক্টরকে বাগে আনার জন্য বৃহস্পতিবার ফের তাঁদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারির তোড়জোড় শুরু করে দিল পুলিশ। স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছে তারা।
নিয়ম অনুযায়ী কোনও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারির পরে আদালতে ধরা দেওয়ার জন্য তাঁকে এক মাস সময় দেওয়া হয়। ওই সময়সীমার মধ্যে তিনি ধরা না-দিলে তাঁর যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করতে বলে আদালত। আমরি-কাণ্ডে তিন ফেরার ডিরেক্টর প্রীতি সুরেখা, আদিত্যবর্ধন অগ্রবাল ও রাহুল তোদির বিরুদ্ধে হুলিয়া জারির জন্য গত জানুয়ারিতেই আলিপুরে মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আর্জি জানিয়েছিল পুলিশ। ম্যাজিস্ট্রেট হুলিয়া জারির নির্দেশ দেন। কিন্তু অভিযুক্তদের ৩০ দিন সময় না-দিয়ে ১৪ দিনের মধ্যে আদালতে হাজির হতে বলা হয়।
তিন ফেরার অভিযুক্তের আইনজীবীদের আবেদনের ভিত্তিতে আলিপুরে জেলা ও দায়রা জজের আদালত হুলিয়ার নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে। ওই স্থগিতাদেশ যাতে তুলে নেওয়া হয়, এ বার সেই ব্যাপারেই উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ। আলিপুরের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে হুলিয়ার বিষয়টি নিয়ে এ দিন শুনানি হয়। আগামী ১৪ মে বিচারক এ বিষয়ে তাঁর সিদ্ধান্ত জানাবেন।
অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই গা-ঢাকা দিয়ে আছেন তিন অভিযুক্ত। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং ‘লুক-আউট নোটিস’ও জারি করা হয়েছে। জেলা ও দায়রা জজের আদালতে আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পরেও তাঁদের সাড়াশব্দ মেলেনি। দিন সতেক আগে প্রীতি সুরেখার তরফে কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করা হয়। তবে সেই আবেদনের শুনানি এখনও হয়নি।
অধরা তিন ডিরেক্টর-সহ মোট ১৬ জন অভিযুক্তের (১২ জন ডিরেক্টর ও চার জন আধিকারিক) বিরুদ্ধে আগেই আদালতে চার্জশিট পেশ করেছে পুলিশ। ঘটনার রাতে হাসপাতালে নাইট ইনচার্জ ছিলেন সাজিদ হোসেন। তিনি জেল-হাজতে আছেন। তাঁর জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানির সময় খোদ বিচারকই প্রশ্ন তোলেন, আগুন লেগেছে জেনেও তিনি দমকলে খবর দিতে দেরি করেছিলেন কেন? ৪ মে সাজিদের জামিনের আবেদন নিয়ে ফের শুনানি হওয়ার কথা। |