|
|
|
|
অবৈধ নির্মাণ নিয়ে পুরসভায় সরব বামেরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শহরে বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ নির্মাণ চললেও তার বিরুদ্ধে পুর কর্তৃপক্ষ সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারছে না বলে সরব হলেন বিরোধী বামেরা। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি পুরসভার মাসিক সভায় এ ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। অভিযোগ, বাম জমানায় নিয়ম না-মানায় যে সমস্ত ভবনের নকশা অনুমোদন করা হয়নি বর্তমানে সেগুলি ছাড়পত্র দিয়ে দিচ্ছেন বর্তমান পুর কর্তৃপক্ষ। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বর্তমান পুরবোর্ড এ ব্যাপারে উদাসীন। তাতে শহরে ‘ওই সমস্যা ক্যান্সারের আকার নিয়েছে’ বলে অভিযোগ তোলেন সিপিএম কাউন্সিলর শরদিন্দুু চক্রবর্তী।
বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা অবশ্য দাবি করেন, “এই পুরবোর্ড শহরে অবৈধ নির্মাণ রুখতে সচেষ্ট। ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বেশ কিছু অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনও অবৈধ নির্মাণ হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সীমাদেবীর পাল্টা অভিযোগ, শহরে পুরনো যে সমস্ত অবৈধ নির্মাণ রয়েছে সে সমস্তই বাম জমানায় তৈরি হয়েছে। তাঁরা যথাযথ ব্যবস্থা নেননি বলেই এখন ফল ভুগতে হচ্ছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, মুখে বলা হলেও কাজে তা করছেন না এই পুরবোর্ড। শহরের বিধানমার্কেট, সেবক রোড, হিলকার্ট রোড এলাকায় বিভিন্ন অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। শরদিন্দু চক্রবর্তী বলেন, “অবৈধ নির্মাণ ক্যান্সারের আকার নিয়েছে। এখনও সতর্ক না হলে এর পরিণাম ভয়াবহ হবে।”
সিপিএম কাউন্সিলর শরদিন্দুবাবু, দিলীপ সিংহরা জানান, রাস্তার জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা না থাকলেও ডন বস্কো স্কুল লাগোয়া এলাকায় পাঁচ তলা ভবনের নকশা সম্প্রতি অনুমোদন করেন পুর কর্তৃপক্ষ। কী ভাবে ওই নকসা অনুমোদন হল তা তদন্ত করে দেখার দাবি তোলেন তাঁরা। পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার-সহ অন্যান্য বাস্তুকাররা নকশা অনুমোদনের আগে তা খতিয়ে দেখেন। এ ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত পাঁচ তলা ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় রাস্তা না-থাকার বিষয়টি কী ভাবে তাঁদের দৃষ্টি এড়িয়ে গেল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর পিছনে আর্থিক লেনদেন রয়েছে কি না তদন্ত করে দেখার দাবি তোলেন তাঁরা। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “বিরোধী কাউন্সিলরদের আশ্বস্ত করছি বিষয়টি খতিয়ে দেখে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর সঙ্গে জড়িতদের কাউকেই ছাড়া হবে না।”
সম্প্রতি নিজেদের জমি না থাকলেও নকশা ছাড়াই বিধানমার্কেটে ৩ তলা ভবন নির্মাণ করে ব্যবসায়ী সমিতি। শিলিগুড়ি কোর্ট চত্বরে বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। এ সব ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত পুর কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থাই নিতে পারেননি। এ দিন পুরসভার মাসিক সভায় তৃণমূলের একাধিক মেয়র পারিষদ অনুপস্থিত থাকায় অভিযোগ তোলেন বামেরা। জল এবং বিদ্যুৎ বিভাগের মেয়র পারিষদ অসুস্থ থাকায় তিনি আসতে পারেননি বলে মেয়র সভায় জানিয়ে দেন। তা ছাড়াও স্বাস্থ্য, সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদরা ছিলেন না। সাফাই বিভাগের বেহাল পরিষেবা নিয়ে সিপিএম কাউন্সিল সালিনী ডালমিয়ার প্রশ্নের উত্তর সংশ্লিষ্ট মেয়র পারিষদ না থাকায় পরে লিখিত ভাবে তাঁকে জানানো হবে বলে মেয়র জানিয়ে দেন। কংগ্রেসের কাউন্সিলর তথা ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের মেয়র পারিষদও অনুপস্থিত ছিলেন। ডেপুটি মেয়র এবং পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ উপস্থিত থাকলেও সভার মাঝপথে তাঁরাও চলে যান। কৃষ্ণবাবু জানিয়েছেন, প্রশ্ন উত্তর পর্বে তাঁর যা বক্তব্য ছিল তা বলার পরেই তিনি সভা ছেড়ে গিয়েছেন। এ দিন দলের অনুষ্ঠান সূচি থাকায় এবং জল-সহ পুর পরিষেবার কয়েকটি বিষয়ে মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য চেয়ারম্যানের অনুমতি নিয়েই গিয়েছি।” ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা জানান, বিরোধীরা গঠনমূলক ভূমিকা নিতে পারছেন না। তাই এ সব দেখছেন। |
|
|
|
|
|