স্ত্রীকে খুনের অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল স্বামীর। খাতড়া থানার নার্গাসোল গ্রামের বাসিন্দা শেখ কুরবানকে বৃহস্পতিবার এই সাজা দিয়েছেন খাতড়া ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অপরাজিতা ঘোষ। সরকার পক্ষের আইনজীবী অসীম রায় জানান, ২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর নার্গাসোল গ্রামের বাসিন্দা জয়নাবা বিবি নামে এক বধূকে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় নিহত বধূর স্বামী শেখ কুরবানকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং বধূ নির্যাতনের অভিযোগে এক বছর কারাদণ্ড ও ৩০০০ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। দু’টি সাজা একই সঙ্গে চলবে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর নার্গাসোল গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে সাংসারিক গণ্ডগোলের জেরে জয়নাবা বিবি নামে বছর কুড়ির ওই বধূকে বিয়ের তিন বছরের মধ্যে খুন করা হয়েছিল। ওই বধূর বাপের বাড়ি বেলিয়াতোড় থানার লালবাজারে। ঘটনার পরের দিন নিহত বধূর মা সারা বিবি খাতড়া থানায় তাঁর জামাই শেখ কুরবান, কুরবানের বাবা শেখ রহমান, মা আনারজান বিবি, ভাই শেখ ইরফান ও ইরফানের স্ত্রী মর্জিনা বিবি-সহ পাঁচ জনের নামে তাঁর মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল। ওই দম্পতির দুই মেয়ের বয়েস এখন ১১ ও ১০ বছর। মঙ্গলবার এই মামলায় অভিযুক্ত পাঁচ জনের মধ্যে শেখ রহমান, শেখ ইরফান, আনারজান বিবি ও মর্জিনা বিবিকে উপযুক্ত প্রমানের অভাবে বেকসুর খালাস ঘোষণা করেন বিচারক। সরকারি আইনজীবী অসীমবাবু বলেন, “ওই বধূকে খুন এবং নির্যাতনের দু’টি ধারায় শেখ কুরবানকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক। বাকি চারজনকে বেকসুর খালাস বলে রায় দিয়েছেন। এ দিন আদালত কক্ষে বাবার সাজা শুনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে দুই মেয়ে রিনা ও মিনা খাতুন। তারা বলে, “মা নেই। বাবাও জেলে গেল, আমাদের দেখবে কে? আমরা কী করব এখন?” কুরবানের মা আনারজান বিবি বলেন, ছেলের দু’টো ছোট মেয়ে রয়েছে। ওদের কথা ভেবে যাতে কুরবানের সাজা কম হয়, সে জন্য আমরা উচ্চ আদালতে যাব। এই রায়ে আমরা খুশি নই।” সাজাপ্রাপ্তের আইনজীবী বারিদবরণ বাগ বলেন, “এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।” |