|
|
|
|
আইনজীবীদের ‘কটূক্তি’, অভিযুক্ত বিএলএলআরও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বনগাঁ |
আইনজীবীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠল বনগাঁর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি পরেশনাথ চৌধুরী নামে গাইঘাটার ঘোঁজার এক ব্যক্তির সঙ্গেও তিনি দুর্ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার বনগাঁ আদালতের এসিজেএমের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন পরেশবাবু। বনগাঁ ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সমীর দাস বলেন, “বিচারক মামলাটি গ্রহণ করেছেন। ঘটনার সাক্ষী হিসাবে কয়েক জন আইনজীবীর নাম আছে।” বিএলএলআরও কিরীটিপ্রসাদ সিংহ অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
আদালতে দায়ের করা অভিযোগে পরেশবাবু জানিয়েছেন, বুধবার তিনি জমি নিয়ে জেলাশাসকের একটি নির্দেশের কপি বিএলএলআরওকে দেখাতে যান। পরেশবাবুর কথায়, “বিএলএলআরও তখন অফিসে বসে ধূমপান করছিলেন। নির্দেশের কপি তাঁকে দেখতে অনুরোধ করলে তিনি ক্ষেপে গিয়ে আমায় আপদ-পাগল এ সব বলে কটূক্তি করেন। পরে কয়েক জন কর্মীকে ডেকে আমায় মারধর করে অফিস থেকে বের করে দেন।” তিনি জানান, ঘটনার পর তিনি বনগাঁ আদালতের সিভিল বারের আইনজীবীদের সেরেস্তায় গিয়ে বসেছিলেন। অভিযোগ, “কিছু ক্ষণ পর কিরীটিবাবু সেখানে কয়েক জন কর্মী এবং পুলিশ নিয়ে হাজির হন। গালিগালাজ করে পুলিশকে আমায় কান ধরে আনার নির্দেশ দেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত আইনজীবীরা এর প্রতিবাদ করলে তাঁদেরকেও গালিগালাজ করেন।” |
|
আইনজীবীদের মিছিল। নিজস্ব চিত্র। |
যদিও কিরীটিবাবুর দাবি, পরেশবাবু বুধবার তাঁর অফিসেই ঢোকেননি। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, পরেশবাবুই অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে হাতে ইট নিয়ে কিরীটিবাবুকে গালিগালাজ করছিলেন। এরপরে তিনি পুলিশে খবর দেন। আইনজীবীদের সেরেস্তায় পুলিশকে নিয়ে গিয়েছিলেন পরেশবাবুকে শনাক্ত করিয়ে দেওয়ার জন্য। তাঁর কথায়, “ওই ব্যক্তি যে জন্য এ দিন দফতরে এসেছিলেন তার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্কই নেই। অভিযোগ মিথ্যা। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আইনজীবীদের সঙ্গে কোনও দুর্ব্যবহার করিনি।”
এ দিকে, এ দিনই বনগাঁ বার অ্যাসোসিয়েশন, ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বনগাঁ ল’ক্লাকর্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ওই দফতরের বিরুদ্ধে নানা বেনিয়ম এবং বেআইনি কাজের অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু হয়েছে। ওই তিনটি সংগঠনের সদস্যেরা এ দিন প্রতিবাদ মিছিল করেন। আদালত চত্বরে সভাও হয়েছে। শেষে ১২ দফা দাবিতে মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। সমীরবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী, জেলাশাসক এবং অতিরিক্ত জেলাশাসকের (ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক) কাছে প্রতিলিপি পাঠানো হচ্ছে।” কিরীটিবাবুর বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা’ নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। সংগঠনের সদস্যদের অভিযোগ, পরচার সার্টিফায়েড কপি এবং আবেদন করা সত্ত্বেও তথ্য দেওয়া হয় না। ৩০০-৫০০ টাকা দিলে তা পাওয়া যায়। অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মী বিএলএলআরও-র মদতে অফিস ঘরে বসে একটি চায়ের দোকানের মাধ্যমে টাকা নিয়ে রেকর্ড পাচার করছেন। তথ্য বা পরচা প্রদানের অবৈধ কাজ করছেন। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কিরীটিবাবু বলেন, “পরচার সার্টিফায়েড কপি যাতে সাধারণ মানুষ ওই দিনই পান তার জন্য ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সে জন্য কম্পিউটার বসানো হয়েছে। ১৫ দিন পর থেকে সাধারণ মানুষ হাতে হাতে তা পাবেন।” অবসরপ্রাপ্তকর্মীর ব্যাপারে তিনি বলেন, “অবসরপ্রাপ্ত অনেক কর্মীই দেখা করতে আসেন। তাঁরা কী করেন, তা কী ভাবে জানব।” বনগাঁর মহকুমাশাসক অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “বিষয়টি মহকুমা ভূমি রাজস্ব আধিকারিককে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। এডিএমএলআরও-কেও অভিযোগ জানানো হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|