গরমে যেন বনধের চেহারা
প্রবল গরমে নবদ্বীপ-মায়াপুরের পর্যটন বাণিজ্যে এখন ভাঁটার টান। চল্লিশ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে তাপমাত্রা। বেলা বাড়তেই দারুণ অগ্নিবাণের দাপটে পথঘাট সুনসান। মঠ-মন্দিরের শহর নবদ্বীপে প্রাচীন দেবালয়গুলিতে অবশ্য গঠনরীতির জন্যই তাপের হাত থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা মেলে। কিন্তু তপ্ত বৈশাখে তীর্থদর্শনের পুণ্য অর্জনে উৎসাহ নেই ভক্তদেরও। তাই বারো মাসে তেরো পার্বণের এই শহরে এখন কার্যত দর্শনার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ কারণ ছাড়া কেবল বেড়ানোর জন্য পর্যটকের সংখ্যা লক্ষণীয় ভাবে কমেছে নবদ্বীপ বা মায়াপুরে। নবদ্বীপে ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণে বহিরাগতদের যাতায়াত যদিও বা কিছুটা রয়েছে, কিন্তু পর্যটকপ্রধান মায়াপুরের ছবিটা আরও করুণ। পর্যটকের অভাবে বহু ছোট ছোট দোকানদার সকালের দিকে দোকান পর্যন্ত খুলছেন না। সন্ধ্যার পর এক বেলা দোকান খুলছেন। ইসকন মন্দিরের গা-ঘেঁষা মায়াপুর হুলোরঘাট রোডের দু’ধারের দোকানে প্রতিদিনই সকালের দিকে বনধের চেহারা।
নিজস্ব চিত্র।
নবদ্বীপ-মায়াপুর যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম জলপথ। জলপথ সমবায় সমিতির সম্পাদক মুরারী হালদার বলেন, “দিন-পনেরো ধরে পর্যটক একদম নেই। নিত্যযাত্রীরাই ভরসা। গত মাসের ২৬ তারিখে খেয়াঘাটের টিকিট বিক্রি আর চলতি মাসের ২৬ তারিখের টিকিট বিক্রিচার ভাগের এক ভাগ। বৃষ্টি নেমে আবহাওয়া ঠান্ডা না হওয়া পর্যন্ত এ ভাবেই চলবে। পর্যটকদের সংখ্যা সত্যিই এ বার মাত্রা ছাড়া রকম কম।” ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস বলেন, “আমাদের মন্দিরের অতিথি-আবাসগুলিতে পর্যটকের সংখ্যা ৪০ শতাংশের মতো কমে গিয়েছে। কিছু মানুষ আসছেন ভিন্ন রাজ্য থেকে। তবে সাধারণ দর্শনার্থীর ভিড় নেই বললেই চলে। রথের সময় থেকে আবার ভিড়টা বাড়বে।”
নবদ্বীপ প্রাচীন মায়াপুরের চৈতন্য-জন্মস্থান আশ্রমের প্রধান অদ্বৈতদাস বাবাজি বলেন, “মন্দিরের নিজস্ব শিষ্য ছাড়া সাধারণ পর্যটক একেবারেই আসছেন না। এই প্রবল গরম এবং রোদে যাঁরা আসছেন, তাঁরাও অবশ্য খুব একটা স্বস্তিতে নেই। বেলা ৯টার পর আর কেউ ঘরের বাইরে বার হচ্ছেন না। আর বাইরে থেকে যাঁরা আসছেন, সবই রাতের দিকে আসছেন। তাও সকালেই কাজ সেরে ফিরে যাচ্ছেনযাতে রোদ এড়িয়ে যাওয়া যায়।” পর্যটকের অভাবের কথা জানালেন রিকশাচালকেরাও। নবদ্বীপের পোড়ামাতলা রিকশা স্ট্যান্ডের সম্পাদক সুভাষ দত্ত বলেন, “এই সময় খুব কম মানুষই আসছেন। যাঁরা আসছেন, তাঁরাও কোনও না কোনও একটা নির্দিষ্ট মন্দিরে চলে যাচ্ছেন। রিকশা ঠিক করে মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে বেড়ানোর লোক খুব কম। প্রচণ্ড গরমে বহু চালকও শহরের রাস্তায় রাস্তায় সওয়ারি নিয়ে ঘুরতে চাইছেন না। কেননা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই।” নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তম সাহা বলেন, “নবদ্বীপের ব্যবসা-বাণিজ্যের একাংশ হল পর্যটননির্ভর। ফলে পর্যটকদের সংখ্যা কমছে মানেই স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর তার প্রভাব পড়ছে। যত দিন না আবহাওয়ার উত্তাপ কাটবে, তত দিন এই গ্রীষ্মকালীন মন্দা চলতে থাকবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.