|
|
|
|
ফের নালিশ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের |
১০০ দিনের কাজ ‘আটকে’ ২৮ দিনে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
একশো দিনের প্রকল্পে কাজের গতি গত বছরের শেষ দিকেই একেবারে শ্লথ হয়ে গিয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরে। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় কয়েক দফা বৈঠকও হয়। বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের সঙ্গে কথা বলেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত। নজরদারি বাড়ানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়। তা-ও প্রত্যাশিত লক্ষ্যে পৌঁছনো গেল না। ২০১১-১২ অর্থবর্ষ শেষের হিসাবে একশো দিনের প্রকল্পে জেলার মানুষ গড়ে কাজ পেয়েছেন মাত্রই ২৮ দিন। আগের বছর, অর্থাৎ ২০১০-’১১ সালে ছিল ৩৫ দিন। কেন এই অবনমন? জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, কয়েক দফা বৈঠক-নজরদারির ফলে অন্তত ২৮ দিনে পৌঁছনো গিয়েছে, না হলে তা-ও হত না। প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “গত আর্থিক বছরে বেশ কিছু সমস্যার জন্যই কাজ ব্যাহত হয়েছে। এক সময়ে জেলার একাংশ পঞ্চায়েত অচল হয়েও পড়েছিল। ফলে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতে এই প্রকল্পের কাজ এক সময়ে দারুণ ভাবে ব্যাহত হয়।” |
|
একশো দিনের প্রকল্পে মাটি তোলার কাজ চলছে পাঁচখুরিতে। নিজস্ব চিত্র। |
কেন এ বার গত বারের ‘সাফল্য’ ধরে রাখা গেল না? একশো দিনের প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার প্রিয়াঞ্জন দাস বলেন, “মাঝে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তাই কাজ ব্যাহত হয়। তবে এখন সেই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা গিয়েছে।” সংশ্লিষ্ট দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, “এ বারের সঙ্গে গত বারের তুলনা টানা অনুচিত। বিধানসভা নির্বাচনের জন্য শুরুতেই কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়। পরে আবার জেলার বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত অচল হয়ে পড়ে।” সিপিএম পরিচালিত জেলা পরিষদ অবশ্য এ জন্য রাজ্য সরকারকেই দুষছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “সঠিক দেখভালের অভাবেই এ বার কাজ সে ভাবে এগোয়নি। সরকারের উচিত এই প্রকল্পে গতি আনা। তা হলে গরিব মানুষ উপকৃত হবেন।” একশো দিনের প্রকল্পে প্রয়োজনীয় অর্থ না মেলায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় কাজ থমকেও গিয়েছে। নতুন প্রকল্প রূপায়ণেও ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রশাসন। অনেক ক্ষেত্রে আগের কাজের মজুরিও দেওয়া যায়নি। প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রয়োজনীয় অর্থ চেয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের মাধ্যমে কেন্দ্রের কাছে দরবার করা হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গত আর্থিক বছরে, অর্থাৎ ২০১১-র এপ্রিল থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত একশো দিনের প্রকল্পে জেলায় মোট ১৭ হাজার ১৯০টি প্রকল্পের কাজ হয়েছে। আরও ১৩ হাজার ৭১০টি প্রকল্পের কাজ চলছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ৪৪ শতাংশ পরিবার বিপিএল তালিকাভুক্ত। জেলায় ১১ লক্ষ ৬৮ হাজার পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে বিপিএল তালিকাভুক্ত ৫ লক্ষ ৯ হাজার পরিবার। যে সংখ্যক মানুষের কাছে জব-কার্ড রয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৫০ শতাংশ মানুষ কাজ চেয়ে আবেদন করেছিলেন। সেই মতো তাঁদের কাজ দেওয়া হয়েছে। জেলার ৩ হাজার ৯৬৩টি পরিবারকে ১০০ দিনই কাজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে প্রকল্পে মাঝেমধ্যেই দুর্নীতির অভিযোগও ওঠে। ভুয়ো মাস্টার-রোল তৈরি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসনের কাছে এমন অভিযোগ এলে তা খতিয়েও দেখা হয়। দুর্নীতি ধরা পড়লে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করা হয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, গত এক বছরে মোট ১৫৪টি অভিযোগ এসেছে। এর মধ্যে ১১২টি অভিযোগই খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হয়েছে। |
|
|
|
|
|