|
|
|
|
দুর্ঘটনায় বাস |
মোটরবাইকে কনের বাড়ি পৌঁছল বরপক্ষ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মাঝপথে দুর্ঘটনায় পড়েছিল বরযাত্রীর বাস (একটি স্কুল বাস ভাড়া করা হয়েছিল)। আহত হয়েছিলেন কয়েক জন। আর তাতেই বিয়ে না করতে গিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন বর। আহত বরযাত্রীদের উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বরের বাড়ির অন্য লোকজনও তখন হাসপাতালেই ভিড় করেছেন। এ দিকে সময় গড়িয়ে যাচ্ছে। বর না পৌঁছলে যে বিয়েই ভেস্তে যাবে! কনেপক্ষের মাথায় হাত। শেষমেশ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশই উদ্যোগী হয়ে বরকে একটি গাড়িতে তুলে নিজেরা মোটরবাইকে কনের বাড়ি পৌঁছলেন। বিয়েও হল। স্বস্তি ফিরল দুই পরিবারেই। তবে দুর্ঘটনার জেরে বাতিল করতে হয়েছে বৌভাতের অনুষ্ঠান। বরের দাদা বিদ্যুৎ বাগ বলছিলেন, “আহতরা এখনও হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। এই অবস্থায় বৌভাতের অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়। পরে এক দিন অনুষ্ঠান হবে।” |
|
নিজস্ব চিত্র। |
মেদিনীপুর শহরের লালদিঘিতে থাকেন প্রদ্যোৎ বাগ। বুধবার তাঁর সঙ্গেই বিয়ে হয়েছে কেশপুরের বুড়াপাট পাঁচখুরির চন্দনা দেওয়ানের। বিয়ে করতে যাওয়ার পথেই দুর্ঘটনায় পড়ে বরযাত্রীর বাস। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসে ছিলেন ৪০ জন। তার মধ্যে আহত হন ১৮ জন। বাকি সকলেও কমবেশি জখম হন। রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ লালদিঘি থেকেই ছেড়েছিল বরযাত্রীর বাস। সওয়া দশটা নাগাদ মেদিনীপুর সদরের তেঁতুলতলায় বাসটি দুর্ঘটনায় পড়ে। উল্টোদিক থেকে আসা একটি লরিকে পাশ কাটাতে গিয়ে রাস্তার পাশে বোল্ডারের উপর উঠে মুহূর্তে উল্টে যায় বাসটি। তবে ‘বর’ প্রদ্যোৎ ছিলেন অন্য একটি গাড়িতে। সঙ্গে কয়েক জন আত্মীয়। দুর্ঘটনার পরে তাঁরাও আর কনের বাড়ির দিকে না গিয়ে মেদিনীপুরেই ফিরে আসেন। এ দিকে, স্থানীয় বাসিন্দারাই দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসের যাত্রীদের উদ্ধার-কাজে হাত লাগান। একে একে আহত সবাইকেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়।
এই করতে করতেই গভীর রাত। এই অবস্থায় বর কী ভাবে আর কনের বাড়ি পৌঁছবে, কেউ ভেবেই পাচ্ছেন না। সকলেই তখন ব্যস্ত আহতদের চিকিৎসার বন্দোবস্তে। এই সময়েও ফের সেই স্থানীয়রাই হলেন উদ্ধার-কর্তা। তাঁরাই বরকে কনের বাড়িতে পাঠাতে উদ্যোগী হন। ঠিক হয়, বর ও তাঁর কয়েক জন আত্মীয় একটি গাড়িতে কনের বাড়ি যাবেন। কয়েক জন বরযাত্রীও মোটরবাইকে রওনা দেবেন। শেষমেশ তাই-ই হল। রাত তিনটে নাগাদ বরপক্ষ পৌঁছল কনের বাড়ি। বিয়ের অনুষ্ঠান মিটল ঠিকঠাক। বৃহস্পতিবার ভোরে নববধূকে নিয়ে লালদিঘির বাড়িতে ফিরলেন প্রদ্যোৎ। পেশায় গাড়ি চালক প্রদ্যোৎ বলছিলেন, “দুর্ঘটনার পর পরিবারের সবাই খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। শেষমেশ অবশ্য সব ভালয় ভালয় মিটেছে।”
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পরিচিতদের নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন সৌরভ বসু। শহরের বাসিন্দা সৌরভের কথায়, “প্রদ্যোৎকে আগে থেকেই চিনি। বরযাত্রীর বাস দুর্ঘটনায় পড়েছে শুনেই পাড়ায় খোঁজ নিই। পরে আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়।” |
|
|
|
|
|