ছত্তীসগঢ়ের অপহৃত জেলাশাসক অ্যালেক্স পল মেননকে ছাড়াতে মধ্যস্থতাকারীদের তরফে চূড়াম্ত তৎপরতা শুরু হল। বৃহস্পতিবার রায়পুরে চার মধ্যস্থতাকারীর মধ্যে প্রথম দফার বৈঠক হয়। আজ শুক্রবার সকালে তাঁদের মধ্যে দ্বিতীয় দফার বৈঠক হবে। পাশাপাশি, মেননের কাছে ওষুধপত্র পৌঁছে দিয়ে ফিরে এসেছেন সিপিআই নেতা তথা আদিবাসী মহাসভার সভাপতি মণীশ কুঞ্জম। তিনি জানিয়েছেন, মেনন সুস্থই আছেন। মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ এ দিন বলেন, “অপহরণকে মাওবাদীরা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরেও মাওবাদীরা সহযোগিতা পাচ্ছে।”
মাওবাদীদের দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে বুধবারই। তার পর থেকে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলও মাওবাদী নেতৃত্ব কিন্তু প্রকাশ্যে এই সময় বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেননি। প্রশাসনিক এবং বিভিন্ন মহল মনে করছে, মাওবাদীরা অঘোষিত ভাবে সময়সীমা বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ মধ্যস্থতাকারীদের তৎপরতার কথা তাদের কানেও পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবারই মাওবাদীদের তরফে প্রস্তাবিত দুই মধ্যস্থতাকারী বি ডি শর্মা এবং জি হরগোপাল রায়পুরে গিয়ে পৌঁছন। তার আগেই সরকারের তরফে দুই মধ্যস্থতাকারী নির্মলা বুচ এবং সুযোগ্য মিশ্র রায়পুরে পৌঁছেছিলেন। চার মধ্যস্থতাকারী রায়পুরের একটি অতিথিশালায় প্রায় সওয়া তিন ঘণ্টা বৈঠক করেন। রাতে বি ডি শর্মা ফোনে বলেন, “বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর, তাই সাবধানে সব দিক বিবেচনা করে এগোতে হবে।” এ দিন রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ জানান, সেই জেলাশাসকদেরই নিশানা বানাচ্ছে মাওবাদীরা, যাঁরা উন্নয়নের পক্ষে কাজ করছেন।
এ দিন বৈঠকের পরেই নির্মলা বুচ এবং সুযোগ্য মিশ্র রমন সিংহের সঙ্গে দেখা করতে যান। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন মন্তব্য করেন, “আইনের উপরে কেউ নয়। মাওবাদীরা যাদের মুক্তির দাবি তুলেছে, তাদের কেউ কেউ সাজাপ্রাপ্ত। ফলে আইনের মধ্যে থেকেই প্রত্যেকের বিষয় নিয়ে আলাদা-আলাদা ভাবে আলোচনা করতে হবে। তবে এই ব্যাপারে অনেক আইন বিশেষজ্ঞ আছেন। আলোচনা হচ্ছে।”
সিপিআই নেতা মণীশ কুঞ্জম মেননকে ওষুধ পৌঁছে দিয়ে প্রায় ৪৫ ঘণ্টা পরে সুকমা ফিরলেও সংবাদমাধ্যমের কাছে সবিস্তার কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু জানান, মেননের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি। রাতে আনন্দবাজারকে ফোনে কুঞ্জম বলেন, “আমার কাজ ছিল শুধু ওষুধ পৌঁছে দেওয়া। আমি সেই কাজটাই করেছি। তবে জেনে এসেছি, জেলাশাসক ভাল আছেন।” সিপিআইয়ের সর্বভারতীয় কর্মসমিতির সদস্য তথা আদিবাসী মহাসভার সহ-সভাপতি চিত্তরঞ্জন বক্সী মন্তব্য করেন, “মণীশ কুঞ্জমের সঙ্গে মধ্যস্থতার কোনও সম্পর্ক নেই।” এর মধ্যেই মেননের স্ত্রী আশাকে দেখতে জগদলপুর থেকে দু’জন চিকিৎসক এ দিন সুকমায় আসেন। তবে আশার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে। |