রাজ্যসভা ভোটের অঙ্ক মেলাতে তৎপরতা তুঙ্গে
রাজ্যসভা ভোট ঘিরে ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ৩ মে রাজ্যসভার এই দু’টি আসনের ভোটের উপর এক দিকে, শাসক জোটের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। অন্য দিকে, নির্ভর করছে রাজ্যের বিজেপি-বিরোধী তথা ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির সমীকরণও। রাজনৈতিক অঙ্ক মেলানোর বিষয়টি এখন আর ঝাড়খণ্ডের চৌহদ্দিতে নেই, পৌঁছেছে দিল্লিতে। আকবর রোডে কংগ্রেস সদর দফতর ও অশোক রোডে বিজেপি সদর দফতরে ইউপিএ এবং এনডিএ-র বড় শরিকরা সেই অঙ্ক কী ভাবে মেলায়, তা দেখার অপেক্ষায় ঝাড়খণ্ডবাসী।
এক কংগ্রেস বিধায়কের মৃত্যুর পর এই মুহূর্তে ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় মোট সদস্য সংখ্যা ৮০। দলীয় শক্তির বিন্যাস এই রকম: বিজেপি ১৮, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ১৮, কংগ্রেস ১৩, ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা ১১, আরজেডি ৫, আজসু ৫, জেডিইউ ২, সিপিআই (এমএল) ১। নির্দল বা ছোট দলের বিধায়ক সংখ্যা ৭। দু’টি আসনের জন্য প্রার্থীর সংখ্যা তিন। কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ বালমুচু, বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া এবং জেএমএম প্রার্থী সঞ্জীব কুমার।
সাধারণ নিয়মে জিততে গেলে প্রার্থীকে পেতে হবে ২৭টি প্রথম পছন্দের ভোট। একক ভাবে কারও পক্ষেই তা সম্ভব নয়। দরকার অন্যের সমর্থন। কিন্তু শাসক জোটের (বিজেপি-জেএমএম) দুই প্রার্থী হওয়ায় তাদের সমস্যা শরিকদের ভোট নিয়েই। আবার বিজেপি-বিরোধী অন্যতম প্রধান দল জেভিএম নেতৃত্ব ভোট দানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সমস্যায় পড়েছে কংগ্রেস। বিজেপি-ও তাকিয়ে আছে জেভিএমের দিকেই। তারা ভোট না-দিলে শরিক জেএমএমের সঙ্গে তাঁদের মতান্তরের সম্ভাবনা কমে যাবে। কারণ জেভিএমের সমর্থন না-পেলে কংগ্রেসের জেতার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
রাজ্যসভায় অহলুওয়ালিয়ার মেয়াদ শেষ হওয়ায় বিজেপি-র উপনেতার পদটি এখন খালি। তিনি জিতবেন এই আশায় বিজেপি সংসদীয় নেতৃত্ব অহলুওয়ালিয়ার জন্য পদটি খালিই রেখেছেন। সুতরাং জেএমএমের চাপে বিজেপি তাঁর প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নেবে, এমন সম্ভাবনা নেই। যদিও জোট-সরকারের ‘সুস্থিতির জন্য’ জোটধর্ম পালনের প্রয়োজনীয়তার কথা নরমে-গরমে বিজেপি-কে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে জেএমএম। জেএমএমের তরফে রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবু সোরেনের পুত্র হেমন্ত সোরেন গত কাল এই মর্মে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি নিতিন গডকড়ীকে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে হেমন্ত বিজেপি-কে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। একই সঙ্গে জোটধর্ম পালন করে জেএমএম প্রার্থীকে সমর্থন করার জন্যও আবেদন জানিয়েছেন তিনি। মুুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা ও রাজ্য নেতৃত্বকে এড়িয়ে ভোটের জন্য গডকড়ীকে হেমন্ত চিঠি পাঠানোয় বিস্মিত রাজ্য বিজেপি-র একাংশ। তবে এ নিয়ে প্রকাশ্যে তাঁরা নীরব। দলের রাজ্য সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামী বলেন, “জেএমএমের চিঠির বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।”
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির কাছে জেএমএম-এর পাঠানো ওই চিঠিতে ‘রাজ্যের সুস্থিতির জন্য জোটধর্ম পালনের’ কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মধ্যে হুমকির গন্ধ পাচ্ছেন বিজেপি নেতাদের একাংশ। রাজ্যের জোট সরকারের স্থায়িত্বের শর্ত হিসেবে রাজ্যসভার ভোটকেই যেন হাতিয়ার করা হচ্ছে বলে তাঁরা মনে করছেন।
অন্য দিকে, দীর্ঘ দিন ধরে ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেসের নির্বাচনী সঙ্গীর ভূমিকায় দেখা গিয়েছে বাবুলাল মরান্ডির জেভিএমকে। এ বার রাজ্যসভার ভোটের লড়াইয়ে না-নামলেও কংগ্রেসের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে বেঁকে বসেছে জেভিএম। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাটিয়ায় কংগ্রেস বিধায়কের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া বিধানসভা আসনটি জেভিএম-কে ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলছে দলের একাংশ। এ নিয়ে মরান্ডির সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় নেমেছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। আরজেডি এবং চার নির্দল নিয়ে কংগ্রেসের পক্ষে বিধায়ক সংখ্যা এখন ২২। জেভিএমের ১১ জন বিধায়কের সমর্থন পেলে কংগ্রেস প্রার্থীর জয় নিশ্চিত। আর সে ক্ষেত্রে জাতীয় রাজনীতিতে কোণঠাসা কংগ্রেস খানিকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.