আর এক মাস পরেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। তার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসন্ন দিল্লি সফরে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কংগ্রেস এবং তৃণমূল উভয় সূত্রেই জানানো হচ্ছে। কংগ্রেস সূত্রে খবর, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নই ওই বৈঠকে প্রধান আলোচ্য হবে। জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র গঠনের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মেলনে যোগ দিতে ৪ মে দিল্লি আসার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ৬ মে পর্যন্ত সম্ভবত দিল্লি থাকবেন তিনি। কংগ্রেস-তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, তার মাঝেই কোনও এক সময়ে সনিয়া-মমতা বৈঠক হবে। দিনক্ষণ অবশ্য এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
কংগ্রেসের শীর্ষ সারির এক নেতা আজ জানান, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রসঙ্গে কিছুদিন আগেই তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে একপ্রস্ত কথা বলেছেন সনিয়ার রাজনৈতিক সচিব অহমেদ পটেল। মমতাকে পটেল বলেছেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের ব্যাপারে তিনি যেন এখনই অন্য কোনও রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে আলোচনা না করেন। কারণ, ইউপিএ-র তরফে সর্বসম্মত ভাবে এক জন প্রার্থী মনোনয়ন করার স্বার্থে শরিক দলের নেতানেত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করতে চান সনিয়া। তার আগে শরিক নেতারা সমান্তরাল আলোচনা শুরু করে দিলে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, পটেলের কথাই রেখেছেন মমতা। শরদ পওয়ার বা ফারুক আবদুল্লারা প্রার্থী মনোনয়নের প্রসঙ্গে নানা মন্তব্য করা শুরু করে দিলেও মমতা এখনও তা করেননি। কংগ্রেসের অন্য কোনও নেতা বা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও তিনি এ ব্যাপারে কথা বলেননি। তৃণমূল নেত্রীর এই অবস্থান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করছেন কংগ্রেস নেতারাও।
কংগ্রেসের ওই শীর্ষ নেতা আজ জানান, কংগ্রেস সভানেত্রী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে অন্য শরিকদের সঙ্গে আলোচনাও শুরু করে দিয়েছেন। গত কালই তিনি এ ব্যাপারে আলোচনা করেছেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারের সঙ্গে। ডিএমকে নেতা করুণানিধি অসুস্থতার কারণে দিল্লি আসতে পারছেন না। তাই প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনিকে কাল চেন্নাই পাঠাচ্ছেন সনিয়া। শরিক নেতাদের সঙ্গে প্রাথমিক কথা বলার পর মুলায়ম-মায়াবতী-লালুপ্রসাদের মতো ইউপিএ-র সমর্থক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন সনিয়া।
তবে সনিয়া-মমতা বৈঠক অবশ্য আরও নানা কারণেই রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ছাড়াও কংগ্রেস-তৃণমূল সম্পর্কের ক্ষেত্রে অন্য অনেক বিষয় রয়েছে। কেন্দ্রে সংস্কারের কর্মসূচিতে মমতার সাহায্য চায় কংগ্রেস। তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, মমতাও এ বার সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক করতে আগ্রহী। গত বার দিল্লি সফরে এসেও কংগ্রেস সভানেত্রীর শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে বিব্রত করতে চাননি মমতা। তবে সনিয়ার শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে বরাবরই খোঁজ নিয়েছেন। আমেরিকায় সনিয়া গাঁধীর চিকিৎসার সময়েও বারবারই অহমেদ পটেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে খোঁজখবর নিয়েছেন মমতা। |