রাজ্যসভায় জোড়া চমক, সচিন ও সিলসিলা
তুন ফ্রেমে সচিন তেন্ডুলকর। পুরনো ফ্রেমে ‘সিলসিলা’, অর্থাৎ জয়া বচ্চন এবং রেখা একত্রে।
রাজ্যসভায় মনোনীত সদস্য হিসেবে সচিন তেন্ডুলকর এবং রেখার নাম প্রস্তাব করে একাধারে এই জোড়া চমক উপহার দিল মনমোহন সিংহের সরকার।
ক্রিকেট মাঠের ইনিংসে এখনও ইতি টানেননি, তার আগেই সংসদে নতুন ইনিংস শুরু হতে চলেছে একশো সেঞ্চুরির মালিকের।
পাশাপাশি জয়া বচ্চন যেহেতু আগে থেকেই রাজ্যসভায় সমাজবাদী পার্টির সাংসদ, রেখা রাজ্যসভায় এলে দু’জনের ফের এক ফ্রেমে আসার সম্ভাবনা!
রাজ্যসভার মনোনীত সদস্য হিসেবে আজই সচিনের নাম প্রস্তাব করেছে মনমোহন সরকার। সেই প্রস্তাব গ্রহণও করেছেন সচিন। রাতে সরকারি প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল। সচিনের সঙ্গেই অভিনেত্রী রেখা ও বিশিষ্ট শিল্পপতি অনু আগা রাজ্যসভার মনোনীত সদস্য হবেন বলে জানানো হয়েছে।
স্ত্রী অঞ্জলিকে নিয়ে আজ সকালে দশ জনপথে গিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখাও করেন সচিন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইপিএল চেয়ারম্যান তথা সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রাজীব শুক্ল। বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে সচিনের মনোনয়নের বিষয়টি জানানো হয়। পরে কংগ্রেস সূত্রে বলা হয়, সচিনকে ‘ভারতরত্ন’ দেওয়ার দাবি রয়েছে দলে। কিন্তু এত অল্প বয়সে কাউকে ‘ভারতরত্ন’ দেওয়ার নজির নেই। উপরন্তু সচিন এখনও খেলা ছাড়েননি। বিকল্প হিসেবে তাঁকে রাজ্যসভায় মনোনীত করার ভাবনাচিন্তা শুরু হয় মাসখানেক আগে। এ ব্যাপারে আগ্রহ ছিল রাহুল গাঁধীরও। সচিনই প্রথম ক্রীড়াব্যক্তিত্ব, যিনি মনোনীত সদস্য হিসেবে রাজ্যসভায় যাচ্ছেন।
রেখাকে রাজ্যসভায় মনোনীত করাও কম ‘বেনজির’ হিসেবে দেখা হচ্ছে না। ঘরোয়া আলোচনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাই বলছেন, বলিউড যেটা পারেনি, রাজনীতি সেটা করে দেখাল। এই পরিস্থিতিতে যশ চোপড়ার বিতর্কিত ছবি ‘সিলসিলা’র (১৯৮১) বিখ্যাত একটা গানের লাইন, ‘ইয়ে কহাঁ আ গয়ে হম’, মনে পড়ে যাচ্ছে অনেকেরই। ‘সিলসিলা’-পরবর্তী দু’দশকে জয়া বচ্চন আর রেখা পরস্পরকে এড়িয়েই চলেছেন। এমনকী ‘কুলি’-র শু্যটিং করতে গিয়ে অমিতাভের অসুস্থতার সময়েও জয়ার সঙ্গে রেখার বার্তালাপ হয়েছে বলে শোনা যায়নি। ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’র হাত ধরে বলিউডে অমিতাভের পুনরুত্থানের পরেও নয়। অমিতাভ-অভিনীত কয়েকটি ছবির প্রিমিয়ারে অবশ্য গিয়েছিলেন রেখা। কিন্তু অমিতাভ বা জয়া, কারও সঙ্গে কথা বলেননি। সৌজন্য বিনিময়ও হয়নি। ‘ব্ল্যাক’ ছবির প্রিমিয়ারে যেমন অনেকেই মনে করতে পারেন, অভিষেক বচ্চনের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলেছিলেন রেখা। অমিতাভ বা জয়ার সঙ্গে নয়। বলিউডের বিভিন্ন পুরস্কার-রজনীতে উপস্থিত থাকলেও তাঁরা নিজেদের মধ্যে শীতল দূরত্ব বজায় রেখেছেন। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারাও সেই দূরত্ব বজায় রাখার ‘ব্যবস্থাপনা’ নিয়ে টেনশনে থেকেছেন। সংসদের অলিন্দ সেই দূরত্ব কি কমাবে? দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন সকলেই।
সংবিধানের ৮০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শিক্ষা-শিল্প-সংস্কৃতি জগতের বিশিষ্টদের রাজ্যসভার মনোনীত সদস্য করার বিধি রয়েছে। মোট ১২ জনকে মনোনীত করতে পারে সরকার। এর আগে নার্গিস, লতা মঙ্গেশকর, বৈজয়ন্তীমালা, হেমা মালিনীর মতো অনেককেই এ ভাবে মনোনীত করা হয়েছিল। তবে সচিনকে মনোনীত করার প্রস্তাবটি কংগ্রেসের একটা বড় মাপের রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
বিরোধী নেতাদের মতে, একের পর এক ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তিতে যখন আঁচ পড়েছে, তখন সচিনকে দিয়ে একটা ‘ফিল গুড’ বাতাবরণ তৈরি করতে চাইছে কংগ্রেস। ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলের মতে, “সচিনের প্রশাসনিক বা সমাজসেবার বিশেষ অভিজ্ঞতাও নেই। তাঁকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ‘মাইলেজ’ নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।” হর্ষ যাই বলুন, বিসিসিআই সচিনের মনোনয়নকে স্বাগত জানিয়েইছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির পক্ষেও এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বলার অবকাশ থাকেনি। বিজেপির প্রকাশ জাভড়েকরকেও বলতে হয়েছে, “এতে ক্রীড়াজগতে ইতিবাচক বার্তা যাবে।”
বর্তমান সাংসদদের মধ্যেও সাড়া পড়ে গিয়েছে সচিনের মনোনয়ন নিয়ে। মজার প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন “রাজ্যসভার একশো নম্বর আসনটি কি সচিনকে দেওয়া হবে?” ডেরেক টুইট করেছেন, ওই আসনে এখন বসেন হিন্দুস্তান লিভারের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। অশোকবাবু সচিনের জন্য আসনটি ছেড়ে দিতে তিনি প্রস্তুত।
তৃতীয় মনোনীত সদস্য অনু আগা থার্মাক্স সংস্থার চেয়ারম্যান এবং কমনওয়েলথ মানবাধিকার কমিশনের সদস্য। সনিয়ার নেতৃত্বাধীন জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যও তিনি। রাজনৈতিক সূত্রে বলা হচ্ছে, গাঁধী পরিবারের সঙ্গে সখ্যের কারণেই তাঁকে মনোনীত করা হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.