জেরায় কবুল নেতার
কলকাতায় অস্ত্র তৈরি করত মাওবাদীরা
যেন অস্ত্রশস্ত্র তৈরি ও মেরামতির কুটির শিল্প। প্রযত্নে, সিপিআই (মাওবাদী)।
খোদ কলকাতায় বসেই দিনের পর দিন আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি ও মেরামতির কারবার চালিয়েছে মাওবাদীরা। এ জন্য ধর্মতলা বা মানিকতলার বাজার থেকে যন্ত্রাংশ কেনা হয়েছে। তারপর তা পৌঁছে গিয়েছে দণ্ডকারণ্যে। কখনও ছত্তীসগঢ় থেকে খারাপ হয়ে যাওয়া একে-৪৭ বা থ্রি নট থ্রি রাইফেল এসে পৌঁছেছে হাওড়া স্টেশনে। তারপর কলকাতায় তা মেরামত হয়েছে।
কলকাতা পুলিশের নাকের ডগায় এই কারবার চললেও এতদিন তা জানা যায়নি। মাওবাদী নেতা সধানালা রামকৃষ্ণ কলকাতায় ধরা পড়ার পরে তাকে জেরা করে এ কথা জানতে পেরেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স। এই অস্ত্রের কারবারের তদন্ত শুরু করেছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)।
জেরায় রামকৃষ্ণ জানিয়েছেন, মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় প্রযুক্তি সংক্রান্ত (টেকনিক্যাল) কমিটির প্রধান হিসেবে তাঁর কাজ ছিল দণ্ডকারণ্যে অস্ত্র সরবরাহ করা। রকেট লঞ্চার, প্রেশার মাইন, পিন গ্রেনেড, বুবি ট্র্যাপ এবং একে-৪৭-এর যন্ত্রাংশ তৈরির কাজ হত কলকাতাতেই। মাওবাদীদের এই শাখাটির নাম ‘কলকাতা প্রোডাকশন ইউনিট’। মাওবাদীদের সাঙ্কেতিক ভাষার যার নাম ছিল ‘ডি-সাপ্লাই’। কলকাতার ধর্মতলা, মাণিকতলা বাজার, স্ট্র্যান্ড রোড, ক্যানিং স্ট্রিট, বিধান সরণির মতো এলাকার ১১টি দোকানের নাম জানিয়েছেন রামকৃষ্ণ। ওই দোকানগুলি থেকে তাঁরা আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির যন্ত্রাংশ কিনতেন। তৈরির পরে কাঠের বাক্সে করে অস্ত্রগুলি শোভাবাজার ও বড়বাজারের পার্সেল অফিসে নিয়ে যাওয়া হত। সেখান থেকে সেগুলি রওনা দিত ছত্তীসগঢ়, অন্ধ্রপ্রদেশে। বিরাটিতে যে বাড়িতে তিনি গা ঢাকা দিয়ে থাকতেন, সেই বাড়িতে এ সব লেনদেনের বিলও রয়েছে বলে রামকৃষ্ণ জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, কলকাতায় তৈরি রকেট লঞ্চার নিয়ে অন্ধ্রের গুন্টুরে থানার উপরে হামলা হয়েছিল বলেও তাঁকে মাওবাদী নেতা বাসবরাজ জানিয়েছিলেন।
রামকৃষ্ণ স্বীকার করেছেন, অনেক সময় একে-৪৭ বা এসএলআরের মতো অস্ত্র কলকাতায় মেরামতির জন্য নিয়ে আসা হত। হাওড়া স্টেশনে তাঁদের হাতে এ সব তুলে দেওয়া হত। তারপর সে সব মেরামত করে আবার দণ্ডকারণ্যে পাঠানো হত। কখনও মুম্বই মেল, কখনও গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসে করে মুম্বই-কলকাতা যাতায়াত করেছেন রামকৃষ্ণ। সব ক্ষেত্রেই ছদ্মনাম নিয়েছিলেন তিনি। এমনকী বেনামে কলকাতায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা, রেশন কার্ড জোগাড় করা, ফ্ল্যাট কেনাও হয়ে গিয়েছিল।
জেরার মুখে রামকৃষ্ণ জানিয়েছেন, তাঁর পেট খারাপের সমস্যা ছিল। বিবেক শর্মা নাম নিয়ে এ জন্য কলকাতায় চিকিৎসাও করিয়েছেন এই মাওবাদী নেতা।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.