|
|
|
|
কী ভাবে, দিশা নেই |
ধর্মতলা থেকে বাস টার্মিনাস সরবে, কোর্টে জানাল রাজ্য |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
চার বছর আগে আদালত বলেছিল, এসপ্ল্যানেড থেকে বাস টার্মিনাস সরাতে হবে। মার্বেলশোভিত ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের শুভ্রতায় যাতে দূষণের কালো ছোপ না-ধরে, সে জন্য তিন মাসের মধ্যে নির্দেশটি কার্যকর করতে রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। নির্দেশ মানার সিদ্ধান্ত এত দিনে নিল সরকার। যদিও কী ভাবে, এবং কত দিনে কাজটা করা যাবে, তার কেনও দিশা তাদের সামনে নেই।
পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের দায়ের করা একটি জনস্বার্থ-মামলার জেরে হাইকোর্ট চার বছর আগে ধর্মতলার বাস টার্মিনাস অন্যত্র স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়। কোর্টের বক্তব্য ছিল: ভিক্টোরিয়া স্মৃতিসৌধের সংরক্ষণ ও শহরের কেন্দ্রে যানবাহনের ভিড় কমাতে এটা জরুরি। শহিদ মিনারের সংরক্ষণের প্রসঙ্গও উঠেছিল। নির্দেশটি কার্যকর করতে সরকারকে সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল তিন মাস। একে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে যায়। সেখানেও হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল থাকে।
তবু পরের চার বছরেও নির্দেশটি বাস্তবায়িত হয়নি। কিছু দিন আগে সুভাষবাবু বিষয়টি হাইকোর্টের গোচরে আনলে বিচারপতিরা উষ্মা প্রকাশ করেন। গত ফেব্রুয়ারিতে বিচারপতি পিনাকীচন্দ্র ঘোষ ও মৃণালকান্তি চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, বাস টার্মিনাস সরানোর ব্যাপারে রাজ্য কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, চার সপ্তাহের মধ্যে তা কোর্টকে জানাতে হবে।
এর পরে সরকার কিছুটা নড়েচড়ে বসে। প্রথমে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের প্রস্তাব ছিল, ধর্মতলার বাস টার্মিনাস না-সরিয়ে সেখানেই মাটির নীচে বাস রাখার ব্যবস্থা হোক। প্রস্তাবটি ধোপে টেকেনি। এ বার পরিবহণ দফতর হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে, সুবিধাজনক জায়গা চিহ্নিত করে এসপ্ল্যানেড থেকে বাস টার্মিনাস সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে তার
জন্য যে সময় লাগবে, রিপোর্টে তা-ও জানিয়ে রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, নতুন জায়গা চূড়ান্ত করার আগে যাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধার দিকটাও খতিয়ে দেখা হবে।
সরকারের এই ‘ভাষ্য’ শুনে মূল মামলাকারী অবশ্য খুব একটা আশ্বস্ত হতে পারছেন না। সুভাষবাবুর প্রতিক্রিয়ায় বরং কিছুটা সংশয়েরই সুর। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “বাস টার্মিনাস নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তে নির্দিষ্ট কোনও পদক্ষেপের কথা বলা নেই। কোনও সময়সীমা দেওয়া হয়নি। কোনও প্রস্তুতিও নেওয়া হয়নি। ফলে সরকার কাজটা কত দূর করবে, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।”
এ দিকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের আশপাশে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আদালত পুলিশকে যে সব ব্যবস্থা নিতে বলেছিল, সেগুলো এ বার কার্যকর করা হবে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার। তাঁর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভিক্টোরিয়ার চার পাশে লরি চলাচল নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি ২০০৭ সালেই দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের কর্মী-অফিসারদের এখন বলা হয়েছে নিষেধাজ্ঞাটি দৃঢ় ভাবে বহাল রাখতে। ভিক্টোরিয়ার চারপাশে পার্কিংও নিষিদ্ধ হয়েছে। উপরন্তু এসএসকেএমের সামনে থেকে হো চি মিন সরণি পর্যন্ত রাস্তায় যান চলাচল অবাধ করতে পুলিশ বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে বলে রিপোর্টের দাবি। |
|
|
|
|
|