খুদেদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ভাল খেলোয়াড় গড়াই ব্রত ওঁর
কাপ, মেডেল, শংসাপত্রের সঙ্গে সযত্নে রাখা আছে ভাল খেলার সুবাদে পাওয়া চাকরির নিয়োগপত্র। আরও ভাল খেলার তাগিদে যে চাকরিতে যোগই দেওয়া হয়নি শোভনদা-র। তা নিয়ে অবশ্য আক্ষেপ নেই তাঁর। আক্ষেপ শুধু একটাই, অত্যধিক ‘কেরিয়ার মনস্কতা’ বর্তমান প্রজন্মকে খেলার মাঠ থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
সাঁইথিয়া স্টেশন পাড়ার বাসিন্দা শোভনদার পোশাকি নাম বিশ্বরূপ দত্ত। জেলার ভলিবল জগতে অতি পরিচিত নাম। বিশ্বরূপবাবুর খেলা শুরু স্থানীয় ‘ব্লু স্টার’ ক্লাবে। জেলা দলের হয়ে দু’বছর বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় প্রতিনিধিত্ব করেছেন। টানা ছ’বছর খেলেছেন বর্ধমান জেলা দলের হয়ে। তার মধ্যে দু’ বছর অধিনায়কত্বও করেছেন। খেলেছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সাঁইথিয়া কলেজেও। কলকাতা ফার্স্ট ডিভিশনে সন্তোষপুর লেক ইয়ুথ, হাওড়া ইউনিয়ন, ছাত্র সম্মিলনী, বিজয়ী সঙ্ঘ প্রভৃতি স্বনামধন্য ক্লাবে সুনামের সঙ্গে খেলেছেন। ১৯৮৯ সালে বিশ্বরূপবাবু অসমে সিনিয়র ন্যাশনাল প্রতিযোগিতাতেও যোগ দেন। ১৯৮৯-৯০ সালে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় খেলেছেন রাঁচি ও কানপুরে। দিল্লিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন অল ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি প্রশিক্ষণ শিবিরে। মাঝে অবশ্য জুনিয়র স্তরের ক্রিকেটে জেলা দলের হয়ে পুরুলিয়া এবং মানভূমকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নও হন।
নিজস্ব চিত্র।
ভাল খেলার জন্য নানা প্রতিযোগিতায় বহু কাপ, মেডেল এবং শংসাপত্র পেয়েছেন। পেয়েছিলেন এজি বেঙ্গলে চাকরিও। কিন্তু খেলার মাঠ ছেড়ে সে চাকরিতে যোগ দেননি। বিশ্বরূপবাবু খেলোয়াড় হিসেবে অভিনয় করেছেন ভলিবলের উপর তৈরি ‘সাধনা’ নামে একটি টিভি সিরিয়ালেও। বাবা-মা, স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং ভাইকে নিয়ে ছোট্ট সংসার বিশ্বরূপবাবুর। বাবার কাপড়ের দোকান এবং নিজের ঠিকাদারি ব্যবসার আয়েই সংসার চলে। নিজে খেলা ছেড়েছেন দীর্ঘকাল। কিন্তু খেলার মাঠ তাকে আজও আষ্ঠে-পৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে। স্থানীয় রেলমাঠে কচিকাঁচাদের নিয়ে শুরু করেছেন ভলিবলের প্রশিক্ষণ। ২০ জন খুদেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বিনা পারিশ্রমিকে। ঋক সেন, শুভমিত দাস-রা বলেন, “শোভনদার কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভলিবলের নানা কলাকুশল জানতে পারছি। খেলাধুলায় উৎসাহও পাচ্ছি।”
‘শোভনদা’র অবশ্য আক্ষেপ, “ক্রিকেট-ফুটবল নিয়ে যে উন্মাদনা লক্ষ করা যায়, ভলিবলে তার ছিটেফোটাও নেই। তা ছাড়া বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভাল খেলার মানসিকতাও তেমন লক্ষ করা যায় না। বরং সময় কাটানোর জন্য কিছুদিন মাঠে আসে। তারপর ছেড়ে দেয়।” তাঁর অনুযোগ, অভিভাবকেরাও ছেলেমেয়েদের খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকাটাকে গোল্লায় যাওয়া বলেই মনে করেন। ভাল খেলে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে অধিকাংশ বাবা-মাই ছেলেমেয়েদের উৎসাহিত করেন না। বিশ্বরূপবাবু মনে করেন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবও ভলিবলকে অন্যান্য খেলার তুলনায় জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে দিচ্ছে। ভলিবলের মত আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত একটি খেলাকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে সরকারকে উদ্যোগী হওয়া উচিত বলে তাঁর অভিমত।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.