জামুড়িয়ায় ফের দ্বন্দ্ব, অভিযুক্ত ‘লাল তৃণমূল’
নি এলাকার পুনর্বাসন প্রকল্পে কাঁচামালের বরাত নিয়ে ফের প্রকাশ্যে চলে এলে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বৃহস্পতিবার দুপুরে জামুড়িয়ার চুরুলিয়ায় এক গোষ্ঠীর এক কর্মীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পাল্টা হিসেবে কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর হয়।
দু’পক্ষই পুলিশে হামলার অভিযোগ দায়ের করেছে। যদিও রাত পর্যন্ত কাউকে ধরা হয়নি। আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি (শিল্পাঞ্চল) তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “খোঁজ নিয়ে দেখছি। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ হয়ে থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গত বেশ কিছু দিন ধরেই জামুড়িয়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বারবার প্রকাশ্যে আসছে। এ দিন সকালে চুরুলিয়ার মধুডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে দলের মদনতোড় অঞ্চল কমিটির সভাপতি কাজল মাজি আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। তাঁর কথায়, “ওই স্কুলে বিদ্যুৎ আনার ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মণিলাল বাউরির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। স্কুল থেকে বেরোতেই দলের কিছু লোক আমায় এসে মারতে শুরু করে।” তিনি জামুড়িয়া থানায় ফোন করলে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। এর পরেই কাজলবাবুর গোষ্ঠীর কিছু লোকজন পাঁচ ‘হামলাকারী’র বাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।
পরে পুলিশের কাছে শেখ হামিদুল, শেখ মহিবুল, সাবির মোল্লা, প্রভাস মণ্ডল, ইসরাইল সাগা-সহ ২০-২২ জনের বিরুদ্ধে তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এঁরা সকলেই এলাকায় কাজলবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা, জামুড়িয়া ব্লক যুব তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য অলোক দাসের অনুগামী বলে পরিচিত। কাজলবাবুর অভিযোগ, “হামলাকারীরা সবাই ‘লাল তৃণমূল’। আগে সিপিএমের গুন্ডাবাহিনীতে ছিল। এখন তৃণমূলে ভিড়েছে।” অলোকবাবুরা আবার কাজলবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত শেখ আশরাফ ও মহম্মদ সোহরাবের নামে বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “ওরাই সিপিএমের লোক। দলে গোলমাল করার চেষ্টা করছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগুলি গ্রামে খনি করার প্রয়োজনে সেখানকার ১২০টি পরিবারকে স্থানীয় মধুডাঙার শীতলবাঁধে পুনর্বাসন দেওয়ার বন্দোবস্ত করছে একটি বেসরকারি কয়লা সংস্থা। ঠিকাদারের মাধ্যমে সেখানে বাড়ি তৈরি শুরু হয়েছে। মধুডাঙার মদনতোড় ও চুরুলিয়ার তৃণমূল কর্মীদের একাংশ বালি, ইট-সহ নানা নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহে যুক্ত। এই কাজের বরাত নিয়েই দলের সংগঠন কাজলবাবু ও অলোকবাবুর গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে গিয়েছে। তিন দিন আগে আসরাফ ও সোহরাবের নেতৃত্বে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এ দিন সকালে কাজ শুরু হলে ফের হুমকি দেওয়া হয় ও মজুরেরা কাজ ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।
আসরাফের দাবি, আবাসন প্রকল্পের সঙ্গেই রাস্তাঘাট, পানীয় জল, কালীমন্দির, দু’টি পুকুর খোঁড়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও কাজই হয়নি। এরই প্রতিবাদে তাঁরা কাজ আটকে দেন। তবে এর সঙ্গে কাজলবাবুর সম্পর্ক নেই। তাঁকে ‘বিনা কারণে’ মারধর করা হয়েছে। অলোকবাবুর পাল্টা বক্তব্য, নির্মাণকাজের ‘নিয়ন্ত্রণ’ আসরাফদের হাতেই রয়েছে। মধুডাঙা গ্রামে ইদগাহ, হরিমন্দির ও হনুমান মন্দির তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সেই কাজেও কাঁচামাল জোগানের বরাত পেতে চাইছে আসরাফরা। গ্রামবাসীরা তা না মানতে চাওয়াতেই তারা কাজ আটকে দিয়েছে। কাজলবাবুকে মারধরের কথা তিনি জানেন না দাবি করে অলোকবাবু বলেন, “২০০৩ সালে আমি পঞ্চায়েতে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। আমাদের ‘সিপিএমের লোক’ বলা হাস্যকর।” পুলিশ জানান, দু’পক্ষেরই অভিযোগের তদন্ত চলছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.