হাবরার বাণীপুর পোস্ট গ্র্যাজুয়েট বেসিক ট্রেনিং (বর্তমানে গভর্নমেন্ট কলেজ অব এডুকেশন) কলেজে স্থাপিত রয়েছে একটি প্রাচীন সূর্যমূর্তি। আনুমানিক দশম শতকে নির্মিত মূর্তিটির কিছুটা ভেঙে গিয়েছে। কিরীটশোভিত দণ্ডায়মান সূর্যমূর্তিটির দুই হাতে দু’টি সনাল পদ্ম। দুই পাশে ঊষা ও প্রত্যুষা। পায়ের কাছে ধাবমান অশ্ব ও সারথি অরুণ।
মালদহ থেকে মূর্তিটি আনা হয়েছিল। পাল ও সেনবংশীয় রাজাদের বিশেষ অধিষ্ঠানক্ষেত্র রূপে মালদহ প্রসিদ্ধ। এই জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে অসংখ্য হিন্দু ও বৌদ্ধ মূর্তি (অধিকাংশই কষ্টিপাথরের) সংগৃহীত হয়েছে। মালদহ সদর সংগ্রহালয়ে মূল্যবান মূর্তিগুলির মধ্যে সূর্যমূর্তির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। বাণীপুরে স্থাপিত মূর্তিটি মালদহ মিউজিয়মের সূর্যমূর্তিগুলির সমগোত্রীয়।
হাবরার পুরাতত্ত্ব গবেষক ড গৌরীশঙ্কর দে দীর্ঘ দিন মূর্তিটির যথাযথ সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে আসছেন। বর্তমানে মূর্তিটি চরম অযত্নে, অবহেলায় ঝোপঝাড়ের আড়ালে পড়ে আছে। মূর্তিটিকে কেন্দ্র করেই একটি ছোট সংগ্রহশালা তৈরি করা যেত। কিন্তু কিছুই হয়নি। |
হাওড়া জেলার আমতার রসপুর একটি ঐতিহাসিক গ্রাম। এই গ্রামের রায় পরিবারে জন্ম নেন মধ্যযুগের কবি রামকৃষ্ণ রায়। সতেরোশো শতাব্দীর মধ্যভাগে তিনি-ই রচনা করেন ‘শিবায়ন’ কাব্য। পরবর্তী কালে আরও দুই কবি ‘শিবায়ন’ রচনা করলেও কবি রামকৃষ্ণ রায়ের কাব্যটি পুরাতন। কবির বংশধর প্রয়াত পাঁচুগোপাল রায় শিবায়নের নির্ভুল পুঁথি ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের’ হাতে তুলে দেওয়ার পর এখান থেকেই বাংলা ১৩৬৩-তে প্রথম শিবায়ন কাব্য প্রকাশ করা হয়। কিন্তু কবি আজ বিস্মৃত। তাঁর স্মৃতিরক্ষার্থে তৈরি হয়েছে ‘রামকৃষ্ণ কবিচন্দ্র রায়’ স্মৃতিরক্ষা কমিটি। কমিটির দাবি, আমতা-বালিচক রাস্তাটি হোক রামকৃষ্ণ রায়ের নামে এবং তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের কাছে কমিটির আবেদন, অবলুপ্ত শিবায়নের পুনঃপ্রকাশ করা হোক। |
বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে সুন্দরবনের অবস্থান ও উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগী হয়েছেন। শোনা গেছে, এ জন্য ক্যানিং-কে ‘গেটওয়ে অব সুন্দরবন’ করে একটি তথ্যকেন্দ্র তৈরি করবে রাজ্য বনদফতর। উত্তর চব্বিশ পরগনায় ৬টি ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় ১৯টি ব্লক নিয়ে সুন্দরবনের প্রশাসনিক এলাকা। সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র মূলত সজনেখালি অভয়ারণ্যকে ঘিরে। সজনেখালি সংলগ্ন গোসাবা, বাসন্তী ও শেষে ক্যানিং। গোসাবা ভূখণ্ড এখনও নদীবেষ্টিত। মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়নি। বাসন্তী হোগল ও মাতলা পরপর দুটি সেতু নির্মাণের ফলে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। কলকাতার এলাকা বৃদ্ধি পেয়ে এখন তা সোনারপুর পর্যন্ত বিস্তৃত। আর কয়েক বছরের মধ্যে ক্যানিং-ও হয়ত কলকাতার মধ্যে চলে আসবে। তা ছাড়া ক্যানিং আগামী দিনে পৌরসভা হবে, সে প্রস্তাব ছিল বামফ্রন্ট আমলেই। সুতরাং ক্যানিং সুন্দরবনের গেটওয়ে হতে পারে না। বরং বাসন্তীকে সুন্দরবনের গেটওয়ে হিসেবে চিহ্নিত করা হোক। এখন ক্যানিং থেকে জলযান আর বাসন্তী আসে না। মানুষ-মালপত্র সবই স্থলপথে যাতায়াত করে। সুন্দরবন ট্যুরের ট্রাভেল এজেন্সিগুলির অফিস ক্যানিং-এ হলেও ভ্রমণের ব্যবস্থা হয় বাসন্তী থেকে। কলকাতা থেকে আধ ঘণ্টাতেই বাসন্তী চলে যাওয়া যায়। সুতরাং সুন্দরবন সম্পর্কিত তথ্যকেন্দ্র বাসন্তীতে হওয়াই বাঞ্ছনীয়। এ ব্যাপারে মাননীয় বনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। |
৩৪ নং জাতীয় সড়কটি সম্প্রসারণের জন্য রাস্তার দু’ধারের নানা প্রজাতির সব বয়সের অগণিত গাছদের নিধন ‘নেসেসারি ইভিল’-এর মতো দরকার হয়ে পড়েছে। তাদের নিধনযজ্ঞ শুরুও হয়ে গিয়েছে। সারা জীবন ধরে নির্মল বাতাস ও ছায়া দেওয়া ছাড়াও অসংখ্য প্রাণের ধারক গাছগুলোকে কাটতে দেখলে চোখে জল আসে। রাস্তার গাছগুলোকে ডিভাইডার বানিয়ে রাস্তা সম্প্রসারণের চেষ্টা করলে হয়ত অর্ধেক প্রাণ বেঁচে যেত। গাছ কাটার আগে এই বিষয়টা এক বার ভেবে দেখলে হয় না? |