|
|
|
|
খড়্গপুরে ৪৪০ কেভি সাব-স্টেশন |
জটিলতা এড়াতে নতুন করে সমীক্ষা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতার ক্ষেত্রে জটিলতা এড়াতে নতুন করে সমীক্ষার কাজ শুরু হচ্ছে। খড়্গপুরে নতুন যে ৪০০ কেভি সাব-স্টেশন তৈরির কাজ চলছে, তার জন্য ওই সমীক্ষা শুরু হবে আজ, সোমবার থেকেই।
খড়্গপুরের এই সাব-স্টেশন থেকে মেদিনীপুরের ধর্মার কাছে ২২০ কেভি সাব-স্টেশনে সংযোগ আনা হবে। এই সংযোগ আনার ক্ষেত্রেই জটিলতা দেখা দিয়েছিল। খড়্গপুরের চাঙ্গুয়াল, সিজুয়া, শ্যামনগর প্রভৃতি এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি কোথায় পোঁতা হবে, তা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। স্থানীয় মানুষের একাংশ জানান, তাঁদের জমিতে খুঁটি পোঁতা যাবে না। শেষমেশ আলোচনার মাধ্যমেই জট কাটতে চলেছে। কোথায় খুঁটি পোঁতা হবে, তা চিহ্নিত করতেই নতুন করে সমীক্ষার কাজ শুরু হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, জাতীয় সড়কের খুব কাছ দিয়ে যাতে বিদ্যুৎ সংযোগ না নিয়ে যেতে হয়, সেই দিকে নজর রাখা হবে। রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন কোম্পানির ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়র কৌশিক ভৌমিক বলেন, “সমস্যা এড়াতে সমীক্ষা শুরু হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে গ্রামবাসীরাও সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।”
মেদিনীপুরের ধর্মার কাছে ২২০ কেভি সাব-স্টেশন রয়েছে। আরামবাগের ৪০০ কেভি সাব-স্টেশন থেকে এখানে বিদ্যুৎ আসে। কিন্তু বিদ্যুতের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। তাই খড়্গপুরে নতুন একটি ৪০০ কেভি সাব-স্টেশন তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সাব-স্টেশন তৈরির কাজ প্রায় শেষও হয়ে যায়। কিন্তু, সমস্যা দেখা দেয় অন্যত্র। এই সাব-স্টেশন থেকে ধর্মার কাছে সংযোগ আনতে কোথায় বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতা হবে, তা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, ৮০ শতাংশ খুঁটি পোঁতার কাজ হয়ে গিয়েছে। বাকি রয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ কাজ। আর এই কাজ বাকি রয়েছে খড়্গপুরের চাঙ্গুয়াল, সিজুয়া, শ্যামনগর ও তার আশপাশের এলাকায়। কেন এখানে সমস্যা হল? স্থানীয় সূত্রে খবর, এই এলাকার পাশ দিয়েই চলে গিয়েছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। আশপাশে একাধিক কারখানা রয়েছে। আরও কারখানা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। এই এলাকা খড়্গপুর শিল্পতালুকের মানচিত্রের মধ্যে ইতিমধ্যে ঢুকে পড়েছে। একাংশ স্থানীয় গ্রামবাসীর আশঙ্কা, তাঁদের জমিতে খুঁটি পোঁতা হলে সংশ্লিষ্ট জমির দাম কমে যাবে। জমির উপর দিয়ে হাই-ভোল্টেজের বিদ্যুতের তার গেলে শিল্পোদ্যোগীরা সেই জমি কিনতে চাইবেন না।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গত ১৩ এপ্রিল মেদিনীপুর আসেন বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা ডব্লুবিএসইডিসিএল-এর চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজেশ পাণ্ডে। শহরের সার্কিট হাউসে তিনি প্রশাসনিক বৈঠক করেন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর পরামর্শ দেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, সেই মতো গত শুক্রবার খড়্গপুরের মহকুমাশাসকের দফতরে এক বৈঠক হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই নতুন করে সমীক্ষা শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “জমিতে খুঁটি পোঁতা থাকলে সংশ্লিষ্ট জমির দাম কমে যাবে, এই আশঙ্কাতেই একাংশ গ্রামবাসী আপত্তি জানিয়েছিলেন। তবে, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। জাতীয় সড়ক লাগোয়া জমির দামই বেশি থাকে। তাই গ্রামবাসীদের একাংশ চাইছেন যাতে সড়কের খুব কাছ দিয়ে যাতে বিদ্যুতের সংযোগ না- যায়। সমীক্ষায় এই বিষয়টি নজরে রাখা হবে।” খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদত্ত চৌধুরীর বক্তব্য, “আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলেই এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। এ বার দ্রুত কাজ এগোবে বলেই আশা করা যায়।” |
|
|
|
|
|