সমীক্ষা-রিপোর্টের ভিত্তিতে নয়ানজুলি বাঁচানোর উদ্যোগ
ল্টোডাঙা থেকে দমদম পার্ক পর্যন্ত ভিআইপি রোডের পাশে আবর্জনায় ঢাকা নয়ানজুলি দ্রুত আগের চেহারায় ফেরাতে দক্ষিণ দমদম পুরসভাকে কাজ শুরু করতে বলল রাজ্য পরিবেশ দফতর। দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারপার্সন অঞ্জনা রক্ষিতকে চিঠি দিয়ে এ কথা জানান পরিবেশ সচিব রাজ সিংহ কাহালো। এ কাজে ইতিমধ্যেই টাকা বরাদ্দ করেছে পুরসভা। অঞ্জনাদেবীর আশা, আগামী বর্ষার আগেই ওই কাজ হয়ে যাবে।
ওই বিস্তীর্ণ নয়ানজুলি নিয়ে যৌথ সমীক্ষা চালায় সাউথ এশিয়ান ফোরাম ফর এনভায়রনমেন্ট (সেফ) ও রাজ্য পরিবেশ দফতর। সেই রিপোর্ট পরিবেশ সচিবের কাছে জমা পড়ার পরেই নয়ানজুলিগুলি সংস্কারের বিষয়ে তৎপরতা শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট পুরসভাকে দেওয়া চিঠিতে পরিবেশ সচিব ওই নয়ানজুলিকে ‘অতি বিপন্ন’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “ওই নয়ানজুলি সংস্কার করে ফের কেষ্টপুর খালের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। তা হলে লেকটাউন-বাঙুৃর অঞ্চলে জলমগ্নতার সমস্যা মিটবে।”
এমনই হাল সেই নয়ানজুলির। ছবি: সুমন বল্লভ
দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (জঞ্জাল সাফাই) প্রবীর পাল বলেন, “ওই নয়ানজুলির পাঁক তোলার জন্য পুরসভা টাকা বরাদ্দ করেছে। টেন্ডারও ডাকা হয়েছে। কোন সংস্থা কাজ করবে, ঠিক হলেই কাজ শুরু হবে।” ‘সেফ’-এর চেয়ারম্যান দীপায়ন দে বলেন, “আশা করছি নয়ানজুলি সংস্কারের সময়ে বেদখল অংশ উদ্ধার করা হবে।”
উল্টোডাঙা থেকে দমদম পার্ক পর্যন্ত ভিআইপি রোডের পূর্ব দিকে কেষ্টপুর খাল আর পশ্চিম দিকে প্রশস্ত নয়ানজুলি। বর্ষায় সংলগ্ন এলাকার বাড়তি জল সেখানে পড়ে কেষ্টপুর খাল দিয়ে বয়ে যেত। এই সব নয়ানজুলি শহরের অন্যতম প্রাচীন জলাশয়ও বটে। অথচ সেগুলি কখনওই নগর পরিকল্পনায় সম্পদ হিসেবে চিহ্নিত হয়নি। গত দশ বছরে বেআইনি দখলদারি এবং সরকারি অবহেলায় কলকাতার মানচিত্র থেকে দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে নয়ানজুলি। ভিআইপি রোডের পাশে বড় বড় আবাসন হয়েছে। তার জন্য অবাধে নয়ানজুলি ভরাট করে রাস্তা হয়েছে। নয়ানজুলি ভরাট করে পার্কিং-এর জায়গাও করা হয়েছে। নয়ানজুলি ভরাট করেই শ্রীভূমিতে তৈরি হয়েছে জঞ্জাল ফেলার ভ্যাটও।
দীপায়নবাবু বলেন, “প্রায় গোটা বছর ধরে সমীক্ষা চলেছে। দেখা গিয়েছে, নয়ানজুলির ৪২% ভরাট হয়েছে জঞ্জালে, ৩৬% বেদখল, ২২% ভরেছে পানায়। অবশিষ্ট ৭% কার্যত ডোবা। ওই জলাশয়গুলির গভীরতা এখন কোথাওই ৭৫ সেন্টিমিটারের বেশি নয়।” রিপোর্ট অনুযায়ী ৭৫ হেক্টর নয়ানজুলি সংস্কার করতে হবে। দীপায়নবাবুর কথায়, “প্রতি হেক্টর জলাভূমির কাদামাটি বছরে ১.০৩ টন কার্বন শোষণ করতে সক্ষম। জলাভূমিটি এখন পচা ডোবায় পরিণত হওয়ায় সেখান থেকে বিষাক্ত মিথেন গ্যাস বেরোচ্ছে। ডোবাগুলি এখন নানা রোগের আঁতুড়ঘর।” সমীক্ষা-রিপোর্ট জানাচ্ছে, ওই নয়ানজুলি উদ্ধার হলে, তা বৃষ্টির জল জমে থাকা এবং সেই জল মাটির নীচের জলস্তরে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।
‘সেফ’-এর রিপোর্টে ওই জলাভূমি বাঁচাতে কিছু সুপারিশও করা হয়েছে। নয়ানজুলির স্থায়ী সংরক্ষণে স্থানীয়দের সচেতনতা বাড়ানোয় জোর দেওয়া হয়েছে। জঞ্জাল সরিয়ে, পলি তুলে, পানা সাফের পরে নয়ানজুলির জলও দূষণমুক্ত করতে হবে। সংস্কারের পরে সবুজায়নের সুপারিশও করা হয়েছে রিপোর্টে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.