|
|
|
|
উধাও বিদ্যুৎ, দহন-জ্বালা দ্বিগুণ |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
একে গরমে রক্ষে নেই। তার উপরে বিদ্যুৎ উধাও! লোডশেডিং বলা হোক বা বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। ঘর্মাক্ত ভুক্তভোগীদের কাছে ফল একই দ্বিগুণ দহন-যন্ত্রণা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় দীর্ঘ ক্ষণ বিদ্যুৎ ছিল না। রবিবার একই ঘটনা ঘটল উত্তর কলকাতা এবং উত্তর শহরতলির বিস্তীর্ণ এলাকায়। বাড়ির বাইরে তীব্র গরম। সন্ধ্যাতেও গরম বাতাস। পাখা চালিয়ে ঘরে বসে থাকলে যে একটু স্বস্তি মিলবে, উপায় নেই তারও। কারণ বিদ্যুৎই যে পলাতক! পাখা ঘুরবে কীসে? অগত্যা ছুটির দিনের সন্ধ্যায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা ঘরের মধ্যেও প্রায় নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হল মহানগরীর বড় একটা অংশের মানুষকে। রাত পৌনে ১১টা নাগাদ আরও এক দফা বিদ্যুৎ চলে যায় দমদম ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়। বাদ যায়নি সল্টলেকও। সেখানকার বিভিন্ন অঞ্চলে রাত ৯টা থেকে দীর্ঘ ক্ষণ বিদ্যুৎ ছিল না।
বৃহস্পতিবারের মতো এ দিনেও সিইএসসি-র দাবি, বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোনও ঘাটতি ছিল না। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কাছ থেকেও তারা চুক্তি অনুসারেই বিদ্যুৎ পেয়েছে। এ দিনের বিভ্রাটের কারণ সিইএসসি-র টিটাগড় এবং নিউ কাশীপুর উৎপাদন কেন্দ্রের যান্ত্রিক ত্রুটি। প্রায় একই সময়ে ওই দুই কেন্দ্রে যান্ত্রিক বিভ্রাটের ফলে সেখান থেকে বাইরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়নি। সেই কারণেই উত্তর কলকাতা আর উত্তর শহরতলির গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া যায়নি বলে জানাচ্ছে সিইএসসি।
এ বার গরমে রাজ্যের মানুষকে আর লোডশেডিংয়ের কষ্ট পেতে হবে না বলে সম্প্রতি দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কলকাতাবাসীদের একটা বড় অংশের অভিজ্ঞতা অন্য রকম। গরম পড়তে না-পড়তেই ‘লোডশেডিং’ হানা দিয়েছে খাস কলকাতাতেই। তবে বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা এটাকে ‘লোডশেডিং’ বলতে রাজি নন। তাঁরা বলছেন, এটা বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। বৃহস্পতিবার বা রবিবার, কোনও দিনই বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোনও ঘাটতি ছিল না। কিন্তু স্বাভাবিক উৎপাদন সত্ত্বেও বিদ্যুৎ সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়নি বিভ্রাটের কারণে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দিয়েছিল মধ্য কলকাতার প্রিন্সেপ স্ট্রিট সাবস্টেশনে। তার জেরে অন্ধরকার হয়ে গিয়েছিল মধ্য কলকাতা। বাদ যায়নি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, নীলরতন সরকার ও ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালও। এ দিনের বিদ্যুৎ-বিভ্রাটেও রক্ষা পায়নি হাসপাতাল। সন্ধ্যায় অন্ধকার হয়ে যায় আর জি কর হাসপাতালের কিছু অংশ।
উৎপাদন কেন্দ্র বা সাবস্টেশনে বারবার বিভ্রাট কেন? যথাযথ ভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলির রক্ষণাবেক্ষণই বা করা হচ্ছে না কেন? প্রশ্ন তুলছেন ভুক্তভোগীরা। সরাসরি জবাব মিলছে না। সিইএসসি-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, যেখানেই যান্ত্রিক গোলযোগ হচ্ছে, সেখানেই দ্রুত তা সারিয়ে ফেলার চেষ্টা করছেন তাঁদের কর্মীরা। |
|
|
|
|
|