বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দফতরের এক অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী গৌতম দেবের পাশে দাঁড়িয়ে কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা অভিযোগ করলেন, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ব্যর্থ। দফতরের মধ্যে পরিষেবার দেওয়ার সম্মিলিত প্রচেষ্টাই নেই। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা স্বাস্থ্য দফতর নিয়ে রাজ্য সরকারের শরিক কংগ্রেস বিধায়কের মন্তব্যে মঞ্চে বসা মন্ত্রী গৌতমবাবু কার্যত অস্বস্তিতে পড়ে যান। পরে মন্ত্রী বলেন, “ব্যর্থতার জন্য ৩৪ বছরের বাম শাসনের বা বাঙালি মানসিকতার দোষ দিতে পারি, কিন্তু তাতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা গড়ে উঠবে না। মানুষের আরও কাছে যেতে হবে, আরও বেশি পরিষেবা দিতে হবে।” অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে বিধায়কের মন্তব্য প্রসঙ্গে মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, “উনি বারবার বলার চেষ্টা করলেন যে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ব্যর্থ। বিধায়ক যখন মঞ্চে বলছিলেন তখনম ওঁকে আটকাতে পারতাম না। তবে এবিষয়ে আমার মন্তব্য সংরক্ষিত রাখলাম। ১০ মাস হল একটা সরকার এসেছে। অনেকেই এই সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ ইচ্ছাকৃতভাবে দেখতে চাইছেন না। তাই বিধায়কের মন্তব্যকে উপেক্ষাই করলাম।” এদিন জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে সদ্যোজাত শিশুদের জন্য বিশেষ ইউনিটের উদ্বোধন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। সেখানে জলপাইগুড়ির বিধায়কও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী গৌতমবাবুর পরে বিধায়ক বক্তব্য রাখেন। বিধায়ক বলেন, “রাজ্য সরকারের সব দফতরের মধ্যে স্বাস্থ্য সবচেয়ে ব্যর্থ। কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পের টাকা রাজ্য সরকার খরচ করতে পারে না। বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে অত্যাধুনিক যন্ত্র থাকলেও সেগুলি কার্যকর করা যায় না। রাজ্য সরকারও স্বাস্থ্য খাতে কম টাকা বরাদ্দ করে না, কিন্তু সেগুলি খরচ করা হয় না।” প্রসঙ্গত গত মাসে জলপাইগুড়িতে এসে বিধায়ক সুখবিলাস বর্মাকে ‘উন্নয়ন বিরোধী’ বলে অভিযোগ করেন গৌতমবাবু। বিধায়ক সুখবিলাসবাবু সার্কিট বেঞ্চ সহ অনান্য প্রকল্পে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রকের টাকা দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাধা সৃষ্টি করছেন বলে মন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন। পরে গৌতমবাবু ও সুখবিলাস বাবু এ দিনই প্রথম একসঙ্গে কোনও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। গত মাসে মন্ত্রীর কথার জবাব দিতে বিধায়ক এ দিন সরকারি মঞ্চকে ব্যবহার করেছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। দুই জনে পাশাপাশি চেয়ারে বসলেও পরষ্পরের মধ্যে তেমন কথা হয়নি। মন্ত্রী গৌতমবাবু জানান, নতুন সরকার এসেছে। আমার দফতরও নতুন হয়েছে। দফতর থেকে জলপাইগুড়ি সহ বিভিন্ন হাসপাতালের অত্যাধুনিক যন্ত্র কেনার টাকা দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের দেওয়া প্রতিশ্রুতির ৯৬ শতাংশ রূপায়িত হয়েছে। তবে রাতারাতি সব হবে এটাও ভাবা ঠিক নয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জলপাইগুড়ি হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির জন্য স্বাস্থ্য সচিব জলপাইগুড়ি আসছেন। স্পোটর্স কমপ্লেক্স সংস্কারের টেন্ডারের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবন তৈরির কাজ আগামী মাসে শুরু হতে পারে। ইতিমধ্যে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। |