আলিপুর জেল থেকে বেরিয়েই অপেক্ষায় থাকা আত্মীয়পরিজনদের দিকে হাসিমুখে হাত নাড়লেন তিনি। তার পরে দ্রুত ঢাউস কালো গাড়িটায় উঠে কাচ তুলে দিলেন।
ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালের অন্যতম ডিরেক্টর তথা ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শ্রবণ তোদির জামিন বৃহস্পতিবার সকালেই মঞ্জুর হয়ে গিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। বিকেলে জেল থেকে বেরিয়ে বাড়ি যান তিনি। শ্রবণ জামিন পাওয়ায় আমরি হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে অভিযুক্তদের মধ্যে সেখানকার কোনও ডিরেক্টর আপাতত জেলে থাকলেন না। |
গত ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে ওই হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। হাসপাতালের বোর্ড অফ ডিরেক্টর্সের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১২ জনের বিরুদ্ধেই মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। শুধু ডিরেক্টর বোর্ডে রাজ্য সরকারের তিন প্রতিনিধির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযুক্ত ডিরেক্টরদের মধ্যে তিন জন আদিত্যবর্ধন অগ্রবাল, প্রীতি সুরেখা ও রাহুল তোদির নাগাল পায়নি পুলিশ। বাকি ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত ডিরেক্টরদের মধ্যে আট জন আগেই একে একে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। বাকি ছিলেন শুধু শ্রবণ তোদিই।
এ দিন হাইকোর্টের বিচারপতি অসীম রায় ও বিচারপতি অসীম রায়ের (দু’জনের একই নাম) ডিভিশন বেঞ্চ শ্রবণ তোদির জামিন মঞ্জুর করে। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, আমরির অন্য কর্তাদের যে-যুক্তিতে জামিন দেওয়া হয়েছে, সেই যুক্তিতেই এই অভিযুক্তেরও জামিন মঞ্জুর করা হল। অগ্নিকাণ্ডের মামলায় আমরির চার জন আধিকারিক ভাইস-প্রেসিডেন্ট (মেনটেন্যান্স) সত্যব্রত উপাধ্যায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রশাসন) পৃথা বন্দ্যোপাধ্যায়, মেনটেন্যান্স ম্যানেজার সঞ্জীব পাল এবং বিপর্যয়ের রাতে আমরির অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ের নাইট ইনচার্জ সাজিদ হুসেনকেও পুলিশ গ্রেফতার করে। তাঁদের মধ্যেও সাজিদ ছাড়া বাকিরা এখন জামিনে মুক্ত। আমরি-কাণ্ডে ইতিমধ্যে চার্জশিটও পেশ করেছে পুলিশ। আমরি মামলায় এখন জেলে আছেন শুধু সাজিদ হুসেন। তাঁর তরফে এ দিনই আলিপুরে জেলা ও দায়রা জজের আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়েছে।
আগামী ২৩ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য হয়েছে বলে জানান সাজিদের আইনজীবী সেলিম রহমান। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন শ্রবণ তোদির জামিন মঞ্জুর করার আগে থেকেই এজলাসের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন আমরির অন্যতম অভিযুক্ত ডিরেক্টর রাধেশ্যাম গোয়েনকার ভাই সুশীল গোয়েনকা। আদালত থেকে রায়ের প্রতিলিপি সংগ্রহ করার পর অভিযুক্তকে জেল থেকে বার করে বাড়ি নিয়ে যেতে উদ্যোগী হন তিনিই। |