|
|
|
|
বাঁকুড়া, জলপাইগুড়ি |
দু’জেলায় অনলাইনে তফসিলি শংসাপত্র |
সুপ্রকাশ চক্রবর্তী • কলকাতা |
পশ্চিমবঙ্গের দুই জেলায় তফসিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) মানুষকে জাতিগত শংসাপত্র নেওয়ার জন্য আর সরকারি অফিসে দৌড়তে হবে না। কম্পিউটার মারফত (অনলাইনে) ওই সার্টিফিকেট দেওয়ার কাজ আজ, শুক্রবার থেকে চালু হয়ে যাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়া ও উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে। আজ বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যের কিছু জেলায় তফসিলি-ওবিসিদের জাতিগত শংসাপত্র বা ‘কাস্ট সার্টিফিকেট’ সরবরাহের ই-প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হলেও তা অসম্পূর্ণ। হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান ও দুই ২৪ পরগনা এই পাঁচ জেলায় সার্টিফিকেটের জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায় বটে, তবে আবেদন মঞ্জুর হল কি না, তা জানতে বিডিও বা এসডিও অফিসে যেতে হয়। আবেদন মঞ্জুর হলে শংসাপত্র অফিস থেকেই নিতে হয়, হাতে-হাতে। নতুন ব্যবস্থায় বাঁকুড়া-জলপাইগুড়ির তফসিলি-ওবিসিদের সেই ঝক্কি দূর হবে বলে প্রশাসনিক মহলের দাবি। সুবিধাটি শুধু দু’টি জেলায় কেন?
সরকারি সূত্রের খবর: তফসিলি শংসাপত্র জোগানোর দায়িত্ব মূলত রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের। কিন্তু সরকারি কাজকর্মে ‘অনলাইন জমানা’ আনতে কেন্দ্রীয় সরকার দেশ জুড়ে যে ‘ই-ডিস্ট্রিক্ট’ প্রকল্প পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করেছিল, সেই ‘পাইলট প্রজেক্টের আওতায় এসেছে পশ্চিমবঙ্গের শুধু দু’টো জেলা বাঁকুড়া ও জলপাইগুড়ি। আর তারই দৌলতে সেখানে ওবিসি-তফসিলিদের অনলাইনে জাতিগত শংসাপত্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করছে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দফতর। পদ্ধতিটা কী রকম হবে?
সরকারি সূত্রের খবর: গ্রাম পঞ্চায়েতের ‘কমন সার্ভিস সেন্টার’ কিংবা ইন্টারনেট সংযোগবিশিষ্ট যে কোনও কম্পিউটার টার্মিনাল থেকে শংসাপত্রের জন্য অনলাইনে আবেদন করা যাবে। সঙ্গে জাতিসত্ত্বার প্রামাণ্য নথি ‘স্ক্যান’ করে অনলাইনেই জমা দেওয়া যাবে। প্রাপ্তি স্বীকার করে আবেদনকারীকে দেওয়া হবে একটি টোকেন নম্বর। চাইলে আবেদনের সঙ্গে দেওয়া যাবে মোবাইল নম্বরও। শংসাপত্র তৈরি গেলে ওই নম্বরে এসএমএস করে প্রার্থীকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। আবেদনকারী তখন ইন্টারনেট ও প্রিন্টার সংবলিত কম্পিউটারে বসে বার করে নিতে পারবেন এসডিও-র ‘ডিজিট্যাল’ স্বাক্ষর সংবলিত ‘ওরিজিন্যাল’ সার্টিফিকেট।
পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারি চাকরিতে তফসিলি জাতি ও উপজাতির জন্য যথাক্রমে ২২% ও ৬% সংরক্ষণ চালু আছে। পাশাপাশি ২০১০-এ তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকার ওবিসি-দের জন্য চাকরিতে সংরক্ষণের হার ৭% থেকে বাড়িয়ে ১৭% করেছে। সংরক্ষণের সুবিধা পেতে জাতিগত শংসাপত্রের জন্য আবেদনকারীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। দফতর সূত্রের তথ্য: ২০১০-এ রাজ্যে প্রায় পাঁচ লক্ষ কাস্ট সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছিল। ২০১১-য় অন্তত ছ’লক্ষ। ২০১২-র প্রথম তিন মাসেই সংখ্যাটা পৌনে দু’লক্ষে দাঁড়িয়েছে।
এবং এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে নতুন ব্যবস্থাটি যথেষ্ট কার্যকর ও উপযোগী হয়ে উঠবে বলে সরকারি কর্তাদের আশা। এক সরকারি মুখপাত্র জানান, পশ্চিমবঙ্গের সব ক’টা জেলাকেই ‘ই-ডিস্ট্রিক্ট’ প্রকল্পের আওতায় আনতে এ বার দিল্লির কাছে আবেদন জানাবে রাজ্য। |
|
|
|
|
|