চৈত্রমাসের শেষ ক’টা দিন আমুল বদলে যায় বৈষ্ণবতীর্থ নবদ্বীপ। সারা মাস জুড়েই গোটা গ্রাম বাংলার মতোই নবদ্বীপের নানা প্রান্তে চলে শিবের উপাসনা। তবে চৈত্র সংক্রান্তির পাঁচ দিন আগে থেকে শুরু হয়ে যায় সাত শিবের সাড়ম্বর গাজন উৎসব। নবদ্বীপের চার দিকে রয়েছেন চার শিব। উত্তরে যোগনাথ, দক্ষিণে আলোকনাথ, পুবে হংসবাহন এবং পশ্চিমে বুড়ো শিব। এঁরা নবদ্বীপের দিক্দেবতায় পরিণত হয়েছেন। আরও রয়েছেন বালকনাথ, বাণেশ্বর, দণ্ডপাণি ও পলেশ্বর।
একটা সময়ে নবদ্বীপের এই সাত শিবের গাজন ছিল অন্যতম বড় উৎসব। প্রতিটি শিবের কয়েকশো করে সন্ন্যাসী। কোনও শিবের সন্ন্যাসীদের ধুতিরল রং ছিল হলুদ। কেউ পরেন গেরুয়া, কোউ সাদা। গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। হাতে কমণ্ডুলু। খালি পা। তাঁদের মুখে শিবভজনা। সঙ্গে গাজনের ঢাকের গাঢ় স্বর। স্থানীয় গবেষক প্রদ্যোৎকুমার গোস্বামী ‘নবদ্বীপ সমাজ ও সংস্কৃতি’ গ্রন্থে লিখেছেন, “বছরের অন্য সময়ে এঁরা পূজিত হন বর্ণহিন্দুদের দ্বারা। কিন্তু চৈত্রমাসে তাঁরা হয়ে ওঠেন গণদেবতা। শিবের সন্ন্যাসীরা সবাই অব্রাহ্মণ। চৈত্র সংক্রান্তির ৫ দিন আগে থেকে শুরু হয় গাজন উৎসব। ২৭ চৈত্র সাত গাজন, ২৮ চৈত্র ফুল, ২৯ চৈত্র ফল, ৩০ চৈত্র নীল ও ৩১ চৈত্র সংক্রান্তির দিন চড়ক।” |
পুরাতত্ত্ব পরিষদের শান্তিরঞ্জন দেব বলেন, “নবদ্বীপের প্রতিটি শিবই কোনও না কোনও সম্প্রদায়ের দেবতা। গোপ, মালো, মৎস্যজীবী, তাঁতিরা ভিন্ন ভিন্ন শিবের উপাসক। তাই পুরুষানুক্রমিক ভাবেই এই উৎসব চলে আসছে। তাই এখানকার মতো সাতটি শিবের গাজন আর কোথাও হয় না।”
গাজন ঘিরে এক সময়ে আয়োজিত হত নানা লোক উৎসবেরও। রাতে পোড়া মা তলায় বসত লাঠি খেলার আসর। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রামগোপাল দাস বলেন, “আশেপাশের ওস্তাদ লাঠিয়ালেরা আসতেন। আমরা ছোটরা হাঁ করে দেখতাম। পরের দিন তৈরি হত দেড়শো ফুট লম্বা মশাল। এই মশাল জ্বালিয়ে ঝলমলে চতুর্দোলায় চেপে সাত শিব আসতেন পোড়া মা তলায়।”
দুর্ঘটনায় আহত। গাড়ি চাপা পড়ে গুরুতর জখম হল দুই সাইকেল আরোহী। আহতদের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে চাপড়ার ন ’মাইলের কাছে কৃষ্ণনগর-করিমপুর রাজ্য সড়কের উপর। ওই ঘটনার প্রতিবাদে প্রায় তিন ঘণ্টা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। |