|
|
|
|
বন্ধ নন্দীগ্রাম-হলদিয়া খেয়া পারাপার |
১০ দিন ধরে ভোগান্তি কয়েক হাজার নিত্যযাত্রীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
কর্মী-সমস্যায় ১০ দিন ধরে বন্ধ নন্দীগ্রামের বাসুলিচক থেকে হলদিয়ার রায়রায়চক ঘাট পর্যন্ত খেয়া পারাপার। এর ফলে নন্দীগ্রাম থেকে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে নিত্য ভুগছেন কয়েক কয়েক হাজার মানুষ।
খেয়া পারাপার বন্ধ নিয়ে খেয়া মালিক ও পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের মধ্যে চাপানউতোর চলছে। খেয়া পারাপার বন্ধ থাকার জন্য সম্পূর্ণ দায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের উপর চাপিয়েছেন ফেরি চালানোর দায়িত্বে থাকা খেয়া মালিক রবীন্দ্রনাথ দাস। তিনি বলেন, “খেয়া চালানোর জন্য আগে যে সব কর্মী ছিল, নন্দীগ্রামের স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধির দাবি মেনে মাস ছয়েক আগেই তাদের বাদ দেওয়া হয়। ওদের সুপারিশ মতো তারপর যাদের নিয়োগ করা হয়, তারাই খেয়া পারাপার বন্ধ করে দিয়েছে।” বাসুলিচকের পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের পঙ্কজ দাসের পাল্টা অভিযোগ, “খেয়া মালিকরাই পুরনো কর্মীদের বাদ দিয়েছেন। তারপর ওঁদের কথা মতো খেয়া পারাপারের জন্য আমরা কর্মী জোগাড় দিই। কিন্তু তাদের উপযুক্ত পারিশ্রমিক না দেওয়ায় তারা কাজ করতে চায়নি।”
পাশাপাশি হলদিয়া পুরসভার লিজ দেওয়া এই খেয়া পরিষেবা নিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে যাত্রীদের সংগঠন। নন্দীগ্রাম-হলদিয়া ফেরি যাত্রী সমন্বয় কমিটির সহ-সভাপতি ভবানীপ্রসাদ দাসের অভিযোগ, “নন্দীগ্রাম-হলদিয়ার মধ্যে হলদি নদীতে যাত্রী পারাপারের জন্য দু’টি খেয়াঘাট পরিচালনার দায়িত্ব হলদিয়া পুরসভার হাতে রয়েছে। অথচ দীর্ঘদিন ধরে যাত্রীদের সমস্যা সমাধানে পুরসভা কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়নি। অথচ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এ বারও বন্ধ খেয়া-পরিষেবা চালুর ক্ষেত্রে পুরসভা তৎপর নয়।” হলদিয়ার উপ-পুরপ্রধান নারায়ণ প্রামানিক অবশ্য বলেন, “খেয়া চালানোর কাজে যুক্ত কর্মীদের ইউনিয়নের মধ্যে গণ্ডগোলের জেরেই খেয়া পারাপার বন্ধ রয়েছে বলে জেনেছি। আমরা লিজ নেওয়া খেয়া মালিককে বলেছি, যাতে তাড়াতাড়ি ফেরি পরিষেবা চালু করা যায়।”
হলদিয়া ও নন্দীগ্রামের মাঝে দু’টি রুটে খেয়া চলাচল করে। নন্দীগ্রামের কেন্দেমারি থেকে হলদিয়া টাউনশিপ ও নন্দীগ্রামের বাসুলিচক থেকে হলদিয়ার রায়রায়চক। দু’টি ক্ষেত্রেই পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে হলদিয়া পুরসভা। এই জলপথে রোজ প্রায় কয়েক হাজার যাত্রী নন্দীগ্রাম থেকে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে আসেন চাকরি-ব্যবসা-সহ নানা প্রয়োজনে। হলদিয়া থেকে নন্দীগ্রাম যাতায়াতের ক্ষেত্রেও প্রধান ভরসা এই যন্ত্রচালিত নৌকা। নন্দীগ্রাম-হলদিয়া ফেরি যাত্রী সমন্বয় কমিটির সম্পাদক কালীপদ মেইকাপ জানান, কেন্দেমারি-টাউনশিপ রুটে খেয়া চলাচল করলেও বাসুলিচক-রায়রায়চক রুটে ২ এপ্রিল থেকে তা বন্ধ রয়েছে। কালীপদবাবু নিজে হলদিয়া বন্দরের কর্মী। তাঁর কথায়, “দিনে প্রায় তিন হাজার যাত্রী এই পথে যাতায়াত করেন। ফেরি বন্ধ থাকায় যাতায়াতের খরচ বেড়েছে, সময়ও বেশি লাগছে। প্রতিদিন হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।”
|
|
|
|
|
|