তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে বল বাউন্ডারি ছোঁয়ার আগেই দু’ হাত তুলে ডাগআউটের দিকে দৌড় শুরু করলেন রবীন্দ্র জাডেজা। পিছনে ডোয়েন ব্র্যাভো। ডাগ আউট থেকে তখন হলুদের স্রোত নেমে আসছে মাঠে। চিদাম্বরম স্টেডিয়াম জুড়ে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। এ উচ্ছ্বাস অবিশ্বাস্য এক স্বপ্নপূরণের। এ উচ্ছ্বাস হারের মুখ থেকে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার।
বেঙ্গালুরু যখন গেইল (৩৫ বলে ৬৮) তাণ্ডবের পরে ২০৫ তুলে দিল, অনেকেই ধরে নিয়েছিল তিন নম্বর ম্যাচটাও বোধহয় হারতে চলেছে মহে সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপারকিংস। রান তাড়া করতে গিয়ে অঙ্কটা শেষ দু’ ওভারে এসে দাঁড়াল ১২ বলে ৪৩। আগের ওভারেই ধোনি আউট। ওই সময় হঠাৎ বিরাট কোহলির হাতে বল তুলে দিলেন ভেত্তোরি। উল্টো দিকে তখন অ্যালবি মর্কেল। যাঁকে গত বছর থেকে নিজেদের টিমে ধরে রেখেছে চেন্নাই। তার পরের ছ’বলের হিসাবটা দাঁড়াল এ রকম: ৪, ৬, ৪, ৬, ২, ৬। এক ওভারে ২৮। সংহারকের নাম মর্কেল।
ক্যামেরা যখন ক্লোজ আপে কোহলির মুখ ধরছে, ফুটে উঠল অবিশ্বাস আর প্রচণ্ড হতাশা মেশানো এক দৃষ্টি। যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, কী হয়ে গেল। শেষ ওভারে ১৫। তখনও কিন্তু নাটকের শেষ হয়নি। ২০তম ওভারে বল করতে এলেন বিনয় কুমার এবং তুলে নিলেন বিধ্বংসী মর্কেলকে। হিসাবটা তখন চার বলে ১৪। ম্যাচ তখনও যে কোনও দিকে যেতে পারে। ওই অবস্থায় পর পর দুটো ফুলটস বেরোল বিনয় কুমারের হাত থেকে। যার মধ্যে একটা নো বল। প্রথম বলটা স্কোয়ার লেগ দিয়ে বাউন্ডারিতে। দ্বিতীয়টা উড়ে গেল পয়েন্টের উপর দিয়ে। দু’বলে ব্র্যাভো দশ তুলে দেওয়ার পরে বেঙ্গালুরুর আর ম্যাচে ফেরা সম্ভব ছিল না। সেটা হয়ওনি। দুশো রান তাড়া করতে নেমে চেন্নাই শুরুতে মুরলী বিজয়কে হারালেও আস্কিং রেটের কাছাকাছি ছিল ফাফ দু প্লেসির (৪৬ বলে ৭১) ঝোড়ো ইনিংসের সৌজন্যে। শুরুটা দু প্লেসি করেছিলেন, শেষটা করলেন মর্কেল (৭ বলে ২৮)।
এ বারের আইপিএলে প্রথম দুশো তুলল কোনও দল। চিদাম্বরমে তখন হলুদ চাপা পড়ে গিয়েছে লালের ঝলকানিতে। শেষ বল হওয়ার পরে অবশ্য স্টেডিয়াম জুড়ে শুধুই হলুদের ঝলকানি। |