তারকেশ্বরে গুদামে পাহারাদারকে খুন করে পালাল সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তারকেশ্বর |
গুদামের এক পাহারাদারকে খুন করে এবং অন্য জনকে বেঁধে একটি পুকুর পাড়ে ফেলে রেখে পালাল দুষ্কৃতীরা। পুলিশের অনুমান, লুঠপাট চালাতে এসে বাধা পেয়ে যায় দুষ্কৃতীরা খুন করে। যদিও গুদাম থেকে কিছু লুঠ হয়নি। বুধবার রাতে তারকেশ্বরের চাউলপট্টির ঘটনা।
পুলিশ জানায়, নিহতের নাম ভানুপ্রসাদ পাল (৫১)। বাড়ি তারকেশ্বর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাহাপুরে। ওই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। চন্দননগরের এসডিপিও তথাগত বসু বলেন, “আমরা সব দিক খোলা রেখেই তদন্ত চালাচ্ছি। ঘটনার নেপথ্যে ডাকাতি না অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা পুলিশ দেখছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চাউলপট্টির বর্ধমান রোডে এক ব্যবসায়ীর কয়েকটি গুদাম রয়েছে। গত বছর দুর্গাপুজোর সময় শাটার ভেঙে তাঁর একটি গুদাম থেকে প্রচুর সিগারেট হাতিয়ে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এর পর থেকেই তিনি ভানুপ্রসাদবাবু এবং ওই এলাকারই বাসিন্দা গোপী দাসকে রাতপাহারার কাজে নিযুক্ত করেন।
বুধবার রাতেও দু’জনে পাহারা দিচ্ছিলেন। রাত সওয়া ১টা নাগাদ ৮-১০ জন দুষ্কৃতী সেখানে চড়াও হয়। সকলেরই হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র এবং ছুরি। ভানুপ্রসাদবাবু ভয়ে দমে না গিয়ে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করেন। এ জন্যই দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করে বলে পুলিশের অনুমান। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর গলায় এবং পিঠে আঘাতের চিহ্ন পেয়েছে পুলিশ। যাওয়ার আগে দুষ্কৃতীরা গোপীবাবুর হাত-পা পিছমোড়া করে বেঁধে তাঁকে পাশের পুকুর পাড়ে ফেলে যায়। ভেঙে দিয়ে যায় গুদামের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা।
গোপীবাবু বলেন, “আচমকাই কয়েক জন আমার মাথায় পিস্তল এবং গলায় ছুরি ধরে খুনের হুমকি দিল। তিন জনে টানতে টানতে আমাকে বন্ধ একটি গুদামের পিছনে নিয়ে গেল। পিঠে ঘুষি মারল। তার পরে মুখে লিউকোপ্লাস্ট আটকে পিছমোড়া করে হাত-পা বেঁধে ফেলে দিল। সারা রাত ওই ভাবে পড়েছিলাম। ভয়ে গলা শুকিয়ে গিয়েছিল।”
এ দিন সকালে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নিহত ভানুপ্রসাদবাবু এবং গোপীবাবুকে কয়েক হাতের তফাতে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন। গোপীবাবুকে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। মৃতদেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়। দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং পুলিশি টহল বাড়ানোর দাবি তোলেন স্থানীয় মানুষজন। তাঁদের অভিযোগ, এর আগেও ওই এলাকায় বড়সড় চুরি হয়েছে। কিন্তু দুষ্কৃতীদের আনাগোনা ঠেকাতে পারেনি পুলিশ। স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী রচপাল সিংহ এ দিন নিহতের বাড়িতে যান। |