১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে নয়া নির্দেশিকা
০০ দিনের কাজ প্রকল্পে হুগলি জেলায় বহু পঞ্চায়েতে শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া রয়েছে। তা নিয়ে শ্রমিকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভও রয়েছে। এর মধ্যেই ওই প্রকল্প নিয়ে জেলা প্রশাসনের একটি নতুন নির্দেশিকায় তাঁরা সঙ্কটে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধানরা। ব্লক প্রশাসনগুলি নির্দেশিকা রূপায়ণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। বকেয়া না পাওয়ায় শ্রমিকেরা কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন বলেও অভিযোগ।
চলতি এপ্রিল ও মে এই দু’মাসে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে জেলার সব পঞ্চায়েতে ৪০ দিন কাজের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ওই নির্দেশিকাটি দিন কয়েক আগে পৌঁছেছে ১৮টি ব্লকের বিডিওদের কাছে।
অবশ্য নতুন নির্দেশিকায় কোনও রকনের সমস্যা হবে না বলে মনে করছে হুগলি জেলা প্রশাসন। এ ব্যাপারে জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন বলেন, “সব ব্লকের বকেয়া টাকা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মিটে যাবে। দফায় দফায় টাকা আসছে। সে ভাবেই দেওয়া হচ্ছে। সারা বছরে এপ্রিল ও মে এই দু’মাসেই ওই প্রকল্পে বেশি কাজ হয়। প্রকল্পটি যথার্থ ভাবে রূপায়ণের জন্যই ওই লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত আর্থিক বছরে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে হুগলির ১৮টি ব্লকে গড়ে আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা শ্রমিকদের মজুরি এবং কাজের উপকরণ কেনা বাবদ বকেয়া রয়েছে। কাজ হয়েছে ২৭.৫ দিন। চলতি আর্থিক বছরে পুরো ১০০ দিনই কাজের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তার ভিত্তিতেই দু’মাসের মধ্যে ৪০ দিন কাজ করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু বাস্তবে তা কতখানি সম্ভব, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধানেরা। ব্লক প্রশাসনগুলিও মনে করছে, বকেয়া না মেটানো হলে শ্রমিকদের দিয়ে কাজের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে না। বেশ কয়েক জন বিডিও জানিয়েছেন, নির্দেশিকার সঙ্গে সঙ্গে এপ্রিল মাসের প্রথমেই যদি তহবিল পাওয়া যেত, তবেই লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছনো যেত।
জেলায় মোট পঞ্চায়েতের সংখ্যা ১০৭। তার মধ্যে বহু পঞ্চায়েতের প্রধানেরাই নতুন নির্দেশিকার রূপায়ণ নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন। যেমন, তারকেশ্বর ব্লকের কেশবচক পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের রানিবালা সর্দার বলেন, “ওই প্রকল্পে কাজের ১৫ দিনের মধ্যে মজুরি দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু অনেক টাকা বকেয়া রয়েছে। তহবিল না পেলে কোনও কাজই সম্ভব নয়। এই অবস্থায় শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হলে ঝুঁকি হয়ে যাবে।” ধনেখালির গোপীনাথপুর-২ পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের চিত্তরঞ্জন সাঁতরা বলেন, “প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে আগের আর্থিক বছরে। নতুন করে টাকা পাইনি। টাকা পেলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা করতাম।”
সিঙ্গুর-২ পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের অরূপ দাস বলেন, “আগের আর্থিক বছরে ওই প্রকল্পে উপকরণ কেনা বাবদ বেশ কিছু টাকা বকেয়া রয়েছে। এই আর্থিক বছরে এখনও কোনও টাকা পাইনি। এপ্রিল মাসের ১১টি দিন চলে গেল। কবেই বা টাকা আসবে, কতদিনই বা কাজ হবে? এমনিতেই শ্রমিকদের ক্ষোভ সামলানো দায় হচ্ছে।” আরামবাগ ব্লকের মায়াপুর-১ পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের অভয়পদ খাঁ বলেন, “শ্রমিকদের মজুরি এবং উপকরণ কেনা বাবদ প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে। এখনও পর্যন্ত টাকা মেলেনি। অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে।”
একই বক্তব্য আরও পঞ্চায়েত প্রধানদের। তাঁরা অন্য একটি সমস্যার কথাও বলছেন। তাঁদের বক্তব্য, প্রকল্পের পর্যাপ্ত তহবিল থাকলেও এপ্রিল-মে মাসে ৪০ দিন কাজ হবে না। কারণ, এপ্রিলের শেষ থেকে বোরো ধান কেটে ঘরে তুলবেন চাষিরা। ধান কাটা ফেলে রেখে কেউ ১০০ দিনের কাজে এগিয়ে আসবেন না।
এই সমস্যাকে অবশ্য বড় করে দেখতে রাজি নন জেলাশাসক। তিনি জানিয়েছেন, ধান কাটার জন্য খুব বেশি হলে ১০-১২ দিন সময় যাবে। তার পরে প্রকল্পের কাজে গতি আনা যায়। রাজ্য সরকার প্রকল্পটির যথাযথ রূপায়ণে উদ্যোগী হতে বলেছে সব জেলা প্রশাসনকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.