শ্রীরামপুরে শ্বাসরোধ করে খুন প্রৌঢ়কে, গ্রেফতার স্ত্রী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর |
এক প্রৌঢ়কে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। বুধবার সকালে শ্রীরামপুরের ঠাকুরবাটি স্ট্রিটের একটি বহুতলের বাসিন্দা তপন বন্দ্যোপাধ্যয় (৫৫) নামে ওই প্রৌঢ়ের মৃত্যুর কথা জানাজানি হয়। তাঁর ভাইয়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তপনবাবুর স্ত্রী, বছর চল্লিশের পাপিয়াদেবীকে ওই দিনই ধরে।
পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত মহিলা অপরাধের কথা কবুল করে জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মঙ্গলবার রাতে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তিনি স্বামীর কফি ও মদে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। স্বামী তন্দ্রাচ্ছন্ন
|
তপন বন্দ্যোপাধ্যায় |
হয়ে পড়লে নাইলনের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। ওই ফ্ল্যাট থেকে মদের বোতল এবং খুনে ব্যবহৃত নাইনলের দড়ি উদ্ধার হয়েছে বলেও দাবি পুলিশের। বৃহস্পতিবার পাপিয়াদেবীকে শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হলে তাঁর ১৪ দিন জেল হাজত হয়।
এ দিন সংবাদমাধ্যমের কাছে পাপিয়াদেবী দাবি করেন, “স্বামী সংসারের কোনও দায়িত্ব নিত না। অধিকাংশ দিন শুধু নিজের জন্য খাবার আনত। স্বামী টাকা না দেওয়ায় ছেলেমেয়ের পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি। স্বামী আমাকে খারাপ পথে নামতে বলত। অত্যাচার সহ্য করতে পারছিলাম না।”
নিহত তপনবাবুর ভাইপো অমলবাবু অবশ্য পাপিয়াদেবীর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেন, “জেঠিমার স্বভাব-চরিত্র ভাল ছিল না। এ নিয়ে পরিবারে অশান্তি ছিল।” তপনবাবুর মৃত্যুর কথা জানাজানি হতেই এলাকাবাসী তাঁর ফ্ল্যাটে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, পাপিয়াদেবীই স্বামীর উপরে নির্যাতন চালাতেন। তাঁর ‘বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক’ও ছিল। পুলিশ মারমুখী জনতার হাত থেকে পাপিয়াদেবীকে উদ্ধার করে।
প্রায় সতেরো বছর আগে তপনবাবুর সঙ্গে পাপিয়াদেবীর বিয়ে হয়। তপনবাবু একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। ওই দম্পতির এক ছেলে, এক মেয়ে। মঙ্গলবার তারা মামাবাড়িতে ছিল। পুলিশের দাবি, ওষুধের দোকান থেকে ঘুমের ওষুধ কিনে এনেছিলেন পাপিয়াদেবী। তপনবাবুর পরিবারের অন্যেরা শ্রীরামপুরের তারাপুকুরে থাকেন। বুধবার সকালে পাপিয়াদেবীর ফোনে তাঁরা জানতে পারেন, তপনবাবু অসুস্থ। নিহতের ভাই নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখি দাদা মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। বৌদি তাড়াতাড়ি মৃতদেহ দাহ করতে চাইছিল। আমরাই জোর করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। দাদার গলায় মোটা দাগ দেখেই বুঝেছি, ওঁকে খুন করা হয়েছে।” |