টু-জি স্পেকট্রাম নিলামের নির্দেশ প্রসঙ্গে আটটি বিষয়ের ব্যাখ্যা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে গেল কেন্দ্র। শুক্রবার রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল ‘প্রেসিডেন্সিয়াল রেফারেন্স’-এ সই করার পরই দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় তারা। যেখানে যে কোনও প্রাকৃতিক সম্পদ বণ্টনে নিলামই একমাত্র পন্থা কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। একই সঙ্গে জানতে চাওয়া হয়েছে, টু-জি সম্পর্কে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের মধ্যে দিয়ে কি সরকারের নীতি নির্ধারণের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ করছে না বিচার বিভাগ?
এ দিনই অবশ্য ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে ‘প্রেসিডেন্সিয়াল রেফারেন্স’ নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। এনডিএ সরকারের আমলে হওয়া লাইসেন্স বণ্টনকেও যে রেফারেন্সের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তা নিয়েই তীব্র আপত্তি জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল।
মূলত যে চারটি প্রশ্নকে ঘিরে বিজেপির আপত্তি, সেগুলি হল l এত দিন নিলাম ছাড়া যা স্পেকট্রাম বিভিন্ন সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, সবই কি তবে আইনবিরুদ্ধ?
• যদি স্পেকট্রাম বণ্টনের ওই নীতি (আগে এলে আগে পাবে) ভ্রান্তই হয়, তবে কি ১৯৯৪ থেকে শুরু করে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ওই পদ্ধতিতে দেওয়া সব স্পেকট্রামই বেআইনি এবং বাতিলযোগ্য?
• আর যদি ওই সব স্পেকট্রাম বণ্টন বেআইনি বলে গণ্য হয়, তা হলে এখন কেন্দ্রের করণীয় কী?
• কেন্দ্রের কি তবে উচিত ওই সমস্ত লাইসেন্স ফিরিয়ে নিয়ে ফের নতুন দামে তা বণ্টন করা? সে ক্ষেত্রে তার মূল্য কেমন হওয়া উচিত? স্পেকট্রাম বণ্টন নিয়ম মেনে হয়েছে কিনা, তা-ই বা দেখা উচিত কখন থেকে?
এই সব প্রশ্নেই বেজায় চটেছে বিজেপি। এই বিতর্কে পিঠ বাঁচাতে সরকার অকারণে এনডিএ জমানার স্পেকট্রাম বণ্টনকেও টেনে আনছে বলে মনে করছে তারা। এ প্রসঙ্গে এ দিন দলের মুখপাত্র নির্মলা সীতারমন বলেন, তাঁদের সময়ে ওই স্পেকট্রাম বণ্টন হয়েছে পুরোদস্তুর নিয়ম মেনে। তবুও তাকে রেফারেন্সের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে, সরকারি এক্তিয়ারের একটি বিষয়কে পরামর্শের জন্য আদালতের দরজায় টেনে নিয়ে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা। তবে এই অভিযোগ খারিজ করে কংগ্রেস মুখপাত্র রশিদ আলভি বলেন, “এমন রেফারেন্স চাইলে ক্ষতি কি? আইন মেনেই এ কাজ করা হয়েছে।”
অন্য যে সব বিষয়ে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের ‘পরামর্শ’ চাওয়া হয়েছে, তার মধ্যে প্রধান হল
• স্পেকট্রাম-সহ সব ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে সব পরিস্থিতিতেই কি নিলাম করা অপরিহার্য?
• স্পেকট্রাম বণ্টনের যে পদ্ধতি সঠিক নয় বলে আদালত চিহ্নিত করেছে, তা মেনেই (দ্বিপাক্ষিক বা বহু পাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে) দেশে লগ্নি করেছে বিভিন্ন বিদেশি সংস্থা। সেই বিষয়টি কি আদালত বিবেচনা করেছে?
• টু-জি মামলায় যে সব সংস্থার হাত থেকে স্পেকট্রাম ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে, ২০১০ সালে নিলামের মাধ্যমে থ্রি-জি লাইসেন্স হাতে পেয়েছে তাদের অনেকেই।
সে ক্ষেত্রে তাদের ওই পরিষেবা চালিয়ে যাওয়ায় কোনও বাধা আছে কি?
• আদালতের দৃষ্টিকোণ থেকে ২০০৮ সালের ডুয়াল টেকনোলজি (জিএসএম এবং সিডিএমএ) লাইসেন্স বণ্টনের পদ্ধতিও কি বেআইনি? |