বেআইনি বাড়ি ভাঙার পক্ষে সরব সিপিএম কাউন্সিলর দীপু দাসের বাড়িতে হামলা হয়েছিল। তার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা পুরসভায় বিক্ষোভ দেখান বাম কাউন্সিলরেরা। বিক্ষোভ দেখানো হয় মেয়রের ঘরের সামনেও।
স্থানীয় কাউন্সিলরের অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বেআইনি বাড়ি ভাঙতে শুরু করে পুরসভা। অভিযোগ, সেই সময় ভাঙার কাজে পুরকর্মীদের বাধা দেন বাড়িটির মালিক ও প্রোমোটারের লোকজন। বন্ধ করে দেওয়া হয় ভাঙার কাজ। পরে ওঁদের নেতৃত্বে এক দল দুষ্কৃতী তাঁর বাড়িতে হামলা চালায় বলে দীপু দাসের অভিযোগ। পুরসভা ও দীপুদেবীর পরিবার এই নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। ওই ঘটনায় উত্তম সাউ ও রাজেশ সাউ নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হাতিবাগান বাজারের বিপজ্জনক অংশ ভাঙার কাজও বন্ধ করে দিতে হয়েছে। সেখানে অবশ্য ভাঙাভাঙি নিয়ে আপত্তি তুলেছেন এক দল ব্যবসায়ী।
দীপুদেবীর বাড়িতে হামলার প্রতিবাদ জানাতে বাম কাউন্সিলরেরা এ দিন মেয়রের কাছে যান। পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী রূপা বাগচি বলেন, “পুরসভার কাজ করতে গিয়ে তৃণমূলের হাতেই আক্রান্ত হয়েছেন দীপু দাস। এতে তো তৃণমূলের বোর্ডেরই বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।” তিনি জানান, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বেআইনি ভাবে গজিয়ে ওঠা ১২টি বাড়ির তালিকা মেয়রকে দেওয়া হয়েছে। ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বাড়ির বাকি অংশ ভাঙার কাজ শুরু করার দাবিও জানান তাঁরা।
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাড়িটি বেআইনি। তেতলার কিছু অংশ ভাঙা হয়ে গিয়েছে। একতলা ও দোতলায় বাসিন্দা থাকায় ওই দিন সেখানে ভাঙার কাজ করা যায়নি। খুব শীঘ্রই ভাঙা হবে।” কাউন্সিলরের বাড়িতে তৃণমূলের লোকজনের হামলা অভিযোগের ব্যাপারে মেয়রের বক্তব্য, “তৃণমূলের নামে দোষ দেওয়া দুর্ভাগ্যজনক।”
বৃহস্পতিবার পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে জানানো হয়, এক দল ব্যবসায়ী আপত্তি তোলায় হাতিবাগান বাজারের বিপজ্জনক অংশ ভাঙার কাজ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এ দিন ওই বাজারের কয়েক জন ব্যবসায়ী মেয়রের সঙ্গে দেখা করে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত ভাঙাভাঙির কাজ বন্ধ রাখার আর্জি জানান। ওই ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, পয়লা বৈশাখ তাঁরা দোকান খোলা রাখতে চান। কিন্তু ভাঙার কাজ চললে তো দোকান বন্ধ রাখতে হবে। তাই ভাঙাভাঙি বন্ধ রাখার আর্জি জানান তাঁরা। মেয়র এই নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মেয়র-পারিষদ অতীন ঘোষের সঙ্গে কথা বলেন। পরে অতীনবাবু বলেন, “ওই ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দিয়েছি, এর মধ্যে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় নিতে হবে ব্যবসায়ীদেরই।” তিনি জানান, পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হচ্ছে। সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হবে বিপজ্জনক অংশের ব্যবসায়ীদেরও। |