নোনাডাঙার বস্তি উচ্ছেদ বিরোধী অবস্থান মঞ্চ থেকে গ্রেফতার করলেও বাম জমানায় নন্দীগ্রাম পর্বে রুজু হওয়া অন্য তিন মামলায় সিআইডি হেফাজতে গেলেন মাতঙ্গিনী মহিলা সমিতির নেত্রী দেবলীনা চক্রবর্তী। রবিবার নোনাডাঙার অবস্থান মঞ্চ থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। সেই সংক্রান্ত অভিযোগের সঙ্গে বাম সরকারের দায়ের করা মাওবাদী নাশকতা, নন্দীগ্রামে খুন ও রাষ্ট্রদোহিতার তিনটি মামলা জুড়ে সিআইডি বৃহস্পতিবার দেবলীনাকে ১০ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় আদালতে। আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সুপর্ণা রায় তা মঞ্জুর করেন। প্রসঙ্গত, রবিবার গ্রেফতার করার পর সোমবার পুলিশ দেবলীনাকে আদালতে তুলেছিল। তখন তাঁকে এ দিন পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। এ দিন ফের সেই মামলা আলিপুর আদালতে উঠলে দেবলীনার সিআইডি হেফাজতে যাওয়ার নির্দেশ হয়।
সিআইডি হেফাজতে এ দিন রাতে অনশন শুরু করেছেন দেবলীনা। তাঁর অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে আনা মাওবাদী নাশকতা, খুন ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাগুলি ‘সাজানো’। তিনি এর কোনওটির সঙ্গেই যুক্ত নন বলে তাঁর দাবি। তবে সিআইডি সূত্রের খবর, ২০১০ সালে মাওবাদীদের নন্দীগ্রাম জোনাল কমিটির সম্পাদক মধুসূদন মণ্ডল ওরফে নারায়ণকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁর সঙ্গেই ধরা পড়েন শচীন ঘোষাল, সিদ্ধার্থ মণ্ডল, সঞ্জয় মণ্ডল ও রাজেশ মণ্ডল। ধৃত শচীনের কাছ থেকে একটি চিঠি উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা। ওই চিঠির তলায় প্রেরকের নাম লেখা ছিল ‘দেবু’। শচীনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ওই ‘দেবু’ আসলে দেবলীনারই নাম। গোয়েন্দাদের দাবি, সাংগঠনিক বিষয়ে লেখা ওই চিঠিটি নারায়ণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য শচীনকে দেন দেবলীনাই। সিআইডি-র অভিযোগ, নন্দীগ্রাম ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’র নেতাদের সঙ্গেও দেবলীনার যোগাযোগ ছিল। ওই মামলার তদন্তের জন্যও দেবলীনাকে জেরা করা দরকার বলে আদালতের কাছে আবেদন করে সিআইডি।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি তৈরি হওয়া নোনাডাঙা উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নেতৃত্বেও রয়েছেন দেবলীনা। ওই কমিটির হয়ে তিনি বিভিন্ন জায়গায় মিছিল ও অবস্থান বিক্ষোভে যোগ দিচ্ছেন। সিআইডির দাবি, নোনাডাঙা এলাকায় কয়েকটি নকশালপন্থী সংগঠন সক্রিয় আন্দোলন শুরু করেছে। জঙ্গলমহলের কিছু মাওবাদী নেতাও নোনাডাঙার কয়েকটি বস্তিতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে গোয়েন্দারা খবর পেয়েছেন। সিআইডির বক্তব্য, উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির আড়ালে শহরে বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা সৃষ্টির করার পরিকল্পনা করছেন ওই মাওবাদী নেতারা। |