মেট্রো স্টেশনগুলিতে যাতায়াতের জন্য শুধুই ‘অটো-নির্ভরতা’ কমিয়ে এ বার ওই সব রুটে ছোট ছোট বাস-পরিষেবা চালু করার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার বণিকসভার এক আলোচনাচক্রে এ কথা জানিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। তিনি জানান, এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁর ইতিমধ্যেই একপ্রস্ত কথা হয়েছে। অনেকের মতে, অটোকে ‘শৃঙ্খলা’য় বাঁধতেই সরকারের এই ভাবনা।
মেট্রো স্টেশনগুলিকে কেন্দ্র করে কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘ দিন ধরেই অটো-পরিষেবা রয়েছে। এ বার ওই সমস্ত ছোট রুটে বাস চালু হলে নিত্যযাত্রীদের আরও সুবিধা হবে। পরিবহণমন্ত্রী জানিয়েছেন, নতুন এই ব্যবস্থা চালু করার আগে মেট্রো স্টেশনগুলির আশপাশে বাসস্ট্যান্ড তৈরি করা যাবে কি না, স্বল্প দূরত্বে এ ভাবে বাস চালানো লাভজনক হবে কি না, সে সব খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি, অটোচালকদের শৃঙ্খলায় আনতে সরকার আরও কড়া হবে বলে জানিয়েছেন মদনবাবু। পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “ভাড়া না বাড়িয়ে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অটোচালকদের আয় বাড়ানোর কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। কিন্তু অটোকে অনুশাসনে বাঁধতে সরকার এ বার আরও কড়া হবে।”
সেই সঙ্গে পরিবহণমন্ত্রী এ দিন জানান, পারমিটবিহীন বাণিজ্যিক গাড়ির দৌরাত্ম্য কমাতেও এ বার বেআইনি শাট্ল এবং স্কুলগাড়ি ধরার অভিযানও শুরু হবে। তিনি বলেন, “বাণিজ্যিক কর ফাঁকি দিয়ে বেসরকারি গাড়ি ব্যবসা করবে, এটা হতে পারে না।”
অন্য দিকে, জরিমানা দিয়ে ট্যাক্সির কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত মিটার ও প্রিন্টারের জন্য আবেদনের সময়সীমা আরও দু’দিন বাড়ানো হল বলে জানান পরিবহণমন্ত্রী। এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ৩১ মার্চের মধ্যে যে সব ট্যাক্সিমালিকেরা মিটার ও প্রিন্টারের আবেদন করতে পারেননি, তাঁদের জন্য সেই সময়সীমা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ বার তা হল ১৬ এপ্রিল।
এ দিন মদনবাবুর সঙ্গে বৈঠক করেন ‘ক্যালকাটা ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রতিনিধিরা। তাঁরা মন্ত্রীকে জানান, ১৯ তারিখ ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’ (বিটিএ)-এর ডাকা ধর্মঘটে তাঁরা সামিল হচ্ছেন না।
ট্যাক্সির পারমিট ও লাইসেন্স শুধুমাত্র আবেদনকারীর হাতে দেওয়ার যে নতুন নিয়ম ১ মার্চ থেকে চালু হয়েছে, ট্যাক্সিমালিকদের দাবি মেনে নিয়ে তা কিছুটা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ দিন পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “আমি চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেলের সঙ্গে কথা বলেছি। আবেদনকারী বাড়িতে না-থাকলে উপযুক্ত প্রমাণ-সহ তাঁর পরিবারের কেউ পরিবহণ দফতরের পাঠানো চিঠি সই করে নিতে পারেন।” সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিটিএ-র সভাপতি বিমল গুহ। |