কর্মাধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে নালিশ
দরপত্র বাতিল করলেন বিডিও
ধিকারিককে ‘চাপ’ দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের দরপত্র পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে। তাঁদের বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েছেন খোদ রামপুরহাট ১ ব্লকের বিডিও শান্তিরাম গড়াই। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি এই সব অভিযোগ আনেন। শুধু তাই নয়, ২০১১-১২ আর্থিক বছরে মহাত্মা গাঁধী জাতীয় কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্পের আওতায় পঞ্চায়েত সমিতির দেওয়া ৩৪টি ‘অবৈধ’ দরপত্র ও তার ওয়ার্ক অর্ডার বাতিল করে দিয়েছেন শান্তিরামবাবু।
এ ব্যাপারে শান্তিরামবাবু বলেন, “মহাত্মা গাঁধী জাতীয় কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্পের কাজ পঞ্চায়েত স্তরে প্রধান ও সদস্যদের করার কথা। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতির কর্মধ্যক্ষেরা এক্তিয়ার বহির্ভুত ভাবে ১০০ দিন প্রকল্পে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ৬০\৪০ অনুপাতে কাজ করাচ্ছিলেন। নিজেরা ৬০ শতাংশ মেটেরিয়ালের কাজ করেছেন এবং বাকি ৪০ শতাংশ মাটির কাজ গ্রামপঞ্চায়েতকে দিয়ে করাচ্ছেন। প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ ভাবে বেআইনি। কর্মধ্যক্ষেরা এক্তিয়ার বহির্ভুত ভাবে ওই জাতীয় প্রকল্পের কাজের টেন্ডার তৈরি করেছিলেন।” এ দিকে শান্তিরামবাবুর পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছেন মহাত্মা গাঁধী জাতীয় কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্পের জেলা অধিকারিক সুপ্রিয় অধিকারী। তিনি বলেন, “বিডিও আইন মোতাবেক কাজই করেছেন।”
বিডি-র দাবি, এতদিন পঞ্চায়েত কর্মধ্যক্ষেরা তাঁর উপর চাপ প্রয়োগ করে প্রকল্পের বিভিন্ন কাজের অ্যাকশন প্লানের অনুমোদন আদায় করে আসছিলেন। তাঁর অভিযোগ, “২০১২-১৩ আর্থিক বছরের জন্য প্রায় ৩ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকার কাজ মহাত্মা গাঁধী জাতীয় কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে পাইয়ে দেওয়ার জন্য কর্মাধ্যক্ষেরা কয়েকদিন ধরে আমার উপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন। কিন্তু আমি তাঁদের কাছে নতি স্বীকার করিনি।” কিন্তু এতদিন পর হঠাৎ মুখ খুললেন কেনও? শান্তিরামবাবু বলেন, “নতুন রাজ্য সরকার আসার পর মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বিডিওদের স্বাধীন ভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ মোতাবেক প্রশাসনিক স্তরে ভরসা পেয়ে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষদের চাপের কাছে আর নতি স্বীকার করিনি। তা ছাড়া তাঁদের কথা মেনে পরের আর্থিক বছরের অ্যাকশন প্লানে সই না করার জন্য তাঁরা আমার উপর নানা মিথ্যে অভিযোগও নিয়ে আসেন। এরপরেই মুখ খোলার সিদ্ধান্ত নিই। ২০১১-১২ আর্থিক বছরের বেআইনি ৩৪টি টেন্ডার বাতিলের সিদ্ধান্ত নিই।”
বিডিও এ দিন যেসব দরপত্র বাতিল করে দিয়েছেন তার মধ্যে আছে ৫টি নিকাশি নালা, যার প্রত্যেকটির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা করে। ছিল ১৫টি পুকুরের ঘাট বাঁধানোর দরপত্র। যার প্রত্যেকটির ধার্য ব্যয় ছিল ১ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা করে। এ ছাড়া ১২টি সাংস্কৃতিক মঞ্চ তৈরির দরপত্রও বাতিল করেছেন বিডিও। যেগুলির প্রত্যেকটির ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ১ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা মত। বাতিল দরপত্রগুলির মধ্যে আছে দু’টি ঢালাই রাস্তা তৈরির কাজও। বোনহাট পঞ্চায়েতের বোনহাট গ্রাম থেকে দুমকা রোড পর্যন্ত এবং রদিপুর গ্রামের জন্য রাস্তা তৈরির দরপত্র বাতিল হয়েছে। প্রতিটি ঢালাই রাস্তার জন্য ব্যয় নির্ধারিত হয়েছিল ৯ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা মত।
এ দিকে বিডিও শান্তিরামবাবুর জানান, নিজেদের দফতরের কাজ না দেখে, ওই কর্মধ্যক্ষেরা নিজেদের পদের অপব্যবহার করে মহাত্মা গাঁধী জাতীয় কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্পের কাজে অন্যায় সুবিধে আদায়ে সচেষ্ট থেকেছেন। তাঁর আরও দাবি, “২০১০-১১ আর্থিক বছরে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের টাকায় অ্যাকশন প্ল্যান অনুযায়ী পঞ্চায়েত সমিতি ১ কোটি ৫ লক্ষ টাকার কাজ করেছে। অথচ জেলা থেকে রামপুরহাট ১ ব্লকের জন্য ওই প্রকল্পে ৭১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ছিল। বরাদ্দাতিরিক্ত ৪৩ লক্ষ টাকা মেটানোর জন্য কর্মধ্যক্ষেরা এখন আমার উপর চাপ দিচ্ছেন।”
সমস্ত অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সিপিএমের রুমকি চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “বিডি-র ওয়ার্ক অর্ডার ছাড়া কোনও কাজ কর্মাধ্যক্ষেরা করেননি।” এ ছাড়া তাঁর যুক্তি, “সমস্ত কাজের ক্ষেত্রেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে সমস্ত প্রয়োজনীয় অংশের অনুমোদন ছিল। সেক্ষেত্রে অবৈধতার প্রশ্ন কেনও আসছে বুঝছি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.