দাদাগিরি, অভিযুক্ত নেতা
পুলকার না চলায় অবরোধ, অভিযান চলছেই
পুলকার চালকদের একটা বড় অংশ আইন মানতে না চাওয়ায় বিপাকে পড়ছেন আসানসোলের ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকেরা। মরিয়া হয়ে তাঁদের একাংশ বৃহস্পতিবার পথ অবরোধে নামেন। ভোগান্তি হয় বহু মানুষের। আবার, অবরোধ তুলতে গিয়ে আইন হাতে তুলে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে।
আসানসোলে বেআইনি পুলকার ধরতে সোমবার থেকে পুলিশ রাস্তায় নামতেই কার্যত ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ বাজি রেখে হুমকির রাস্তা নিয়েছেন গাড়ি মালিকদের একাংশ। তাঁরা গাড়ি না চালানোয় অভিভাবকেরা বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে হিমশিম খাচ্ছেন। বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায় প্রতিকার দাবি করে পথ অবরোধে নামেন শ’দুয়েক অভিভাবক।
পুলিশ জানায়, সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ কল্যানপুরের সেন র্যালে রোডে আচমকা অবরোধ শুরু হওয়ায় প্রবল যানজট হয়। স্থানীয় নার্সিংহোমে যাওয়ার পথে একাধিক রোগীর গাড়ি আটকে যায়। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আটকে পড়ে। সরকারি-বেসরকারি দফতরে যাওয়ার পথে কর্মীরা রাস্তার মাঝে আটকে পড়েন। গোটা এলাকায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
সেন র্যালে রোডে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র।
বুধবার পুলকার মালিকদের নিয়ম না মানার দাবি সমর্থন করে প্রকাশ্যেই আন্দোলনের হুমকি দিয়েছিল তৃণমূল অনুমোদিত পরিবহণ কর্মী সংগঠন। এ দিন আর তাদের দেখা মেলেনি। বরং সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ঠেকানোর জন্য পথ অবরোধ তুলতে গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন তৃণমূলের মেয়র পারিষদ অনির্বাণ দাস। বিক্ষোভরত অভিভাবকদের অভিযোগ, “অবরোধ চলাকালীন অনির্বাণবাবু সদলবলে সেখানে হাজির হন। আমাদের গায়ে হাত তোলেন। ধাক্কা মেরে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেন।”
কয়েক দিন আগেই কলকাতায় অটো চালকদের অবরোধের সময়ে দু’এক জনকে মারধর ও কান ধরে ওঠ-বস করানোয় তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পালের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল। তবে অনির্বাণবাবু বলপ্রয়োগের অভিযোগ স্বীকার করতে চাননি। তাঁর দাবি, “ওই সময়ে ওঁরা রাস্তা আটকানোয় রোগী, স্কুল পড়ুয়া ও সরকারি-বেসরকারি কর্মীরা বিপদে পড়েছিলেন। অভিভাবকদের অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেছি। কয়েক জনের সঙ্গে কথা কাটাকাটিও হয়েছে। কিন্তু গায়ে হাত দেওয়ার বা ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেওয়ার প্রশ্নই নেই।”
ঘটনা যা-ই হোক, মেয়র পারিষদ যাওয়ার পরেই অভিভাবকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের আক্ষেপ, প্রশাসনের কর্তারা এসে যাতে তাঁদের সমস্যার কথা শোনেন, সেই উদ্দেশ্যে তাঁরা এই রাস্তা নিয়েছিলেন। দীপক মিশ্র নামে এক অভিভাবক বলেন, “পুলিশের পুলকার অভিযান আমরা সমর্থন করছি। কিন্তু হঠাৎ অভিযান শুরু হওয়ায় পুলকার রাস্তায় নামছে না। আমরা বিপদে পড়েছি। বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না। আমরা বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য পুলিশের কাছে সময় চেয়েছি। পুলিশ শুনছে না। তাই অবরোধে নেমেছি।”
কিন্তু অবরোধ তুলতে এসে মেয়র পারিষদ এসে কার্যত এলাকার ‘দাদা’র মতো আচরণ করেন বলে অভিভাবক ও কিছু স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগ। তার জেরে আরও ঘণ্টা দেড়েক এলাকায় উত্তেজনা থাকে। অবরোধও চলে। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান আসানসোল উত্তর থানার অফিসারেরা। বিক্ষোভ থামিয়ে অবরোধ তুলতে গিয়ে তাদেরও বেগ পেতে হয়।
এ দিনও যথারীতি আসানসোলের অধিকাংশ স্কুলে পড়ুয়া নিয়ে যায়নি পুলকার। তবে পুলিশ যথারীতি নিয়ম ভাঙা পুলকার ধরার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। তৃণমূলের মেয়র পারিষদ অভিজিৎ ঘটক এ দিন এসিপি (ট্রাফিক) সুবিমল পালের সঙ্গে দেখা করে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। তাঁর মতে, “পুলিশের এই অভিযানে ভুল নেই। তবে পুলকারের বেনিয়মের অভ্যাস বহু দিনের। তা বদলাতেও সময় লাগবে। পুলিশকে মধ্যপন্থা অবলম্বন করার অনুরোধ করেছি।”
আসানসোলের এডিসিপি (ট্রাফিক) ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানান, বুধবারই কমিশনারের উপস্থিতিতে অভিভাবক, গাড়ি মালিক এবং স্কুল কর্তৃপক্ষদের জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট আইন মেনে পুলকার চালাতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ কোনও আপস করবে না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.