হাসপাতাল থেকে দূরে হদিস বৃদ্ধের
শারীরিক অসুস্থতার জেরে ঘোরে থাকা রোগী হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে চলে গেলেন চার কিলোমিটার দূরে। নার্স থেকে স্বাস্থ্যকর্মী, এমনকী হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরাও কেউই টের পেলেন না। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে। বেলা ১১টা নাগাদ বালুরঘাট শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের খাদিমপুর বটতলায় রাস্তার উপরে অচেতন অবস্থায় ওই রোগীকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা খবর দেন তাঁর বাড়িতে। পরিবারের লোক জন গিয়ে ওই রোগীকে দুপুর দেড়টা নাগাদ ফের হাসপাতালে পৌঁছে দেন। হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের বিরুদ্ধে রোগীর পরিবারের ক্ষুব্ধ লোকজন গাফিলতির অভিযোগ তুললে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে আত্মীয়দের ধস্তাধস্তি হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ওই রোগীর নাম পৃত্থীশ সেন। বয়স ৬৮ বছর। ভারতীয় সেনা বাহিনীর ওই প্রাক্তন কর্মীর দুটি কিডনি অকেজো। উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তিনি। গত শুক্রবার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল চিকিৎসক নিরঞ্জন করের অধীনে। চিকিৎসক বলেন, “রোগীর দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ

ছবি: অমিত মোহান্ত
অবস্থায় রোগীর ভুল বকা এবং নিজে থেকে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।” চিকিৎসকের বক্তব্য, এ দিন কিছুটা সুস্থ ছিলেন বলে রোগীকে বাইরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। রোগীর পরিবারের লোকেদের বাড়ি বালুরঘাট থেকে বেশ খানিকটা দূরে তিওড় এলাকায়। সে জন্য পরিবারের লোকেরা রোগীর সবসময়ের দেখাশোনার জন্য একজন আয়া রেখেছিলেন। যে ওয়ার্ডে পৃত্থীশবাবুকে ভর্তি করা হয় সেখানকার অন্য কয়েকজন রোগী জানান, সকাল ৭টা নাগাদও তাঁরা পৃত্থীশবাবুকে ওয়ার্ডের বারান্দায় ঘোরাঘুরি করতে দেখেছেন। তার পরে কী করে ওই রোগী দোতালা থেকে নেমে হাসপাতাল ছেড়ে বার হয়ে গেলেন সেই প্রশ্ন উঠেছে। রোগীর স্ত্রী জ্যোৎস্না দেবীর অভিযোগ, “বাড়ি দূরে বলে আয়া রাখা হয়েছিল। ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স ছিলেন। গেটে নিরাপত্তা কর্মী পাহারায় থাকেন। এদের অবহেলা ও গাফিলতিতে মুমুষর্র্ স্বামীর মৃত্যু হতে পারত। খাদিমপুর বটতলার বাসিন্দারা সহায়তায় এগিয়ে না এলে কী হত ভেবে শিউরে উঠছি।” এই ব্যাপারে হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মন্ডল মুখ খুলতে চাননি। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাস বলেন, “এরকম ঘটনা বাঞ্ছনীয় নয়। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের দেখভালের প্রতি কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব থাকে। ঘটনায় গাফিলতি থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” খাদিমপুর এলাকার বাসিন্দারা জানান, হাতে স্যালাইনের ‘চ্যানেল’ লাগানো ওই অচেতন ব্যক্তি যে হাসপাতালের রোগী সেটা বুঝতে তঁদের অসুবিধে হয়নি। চোখেমুখে জল দিয়ে তাকে সাময়িক সুস্থ করে তোলা হলেও তিনি কথা বলতে পারচিলেন না। পরিচয় জানতে না পেরে বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। ছুটে যান ওয়ার্ড কাউন্সিলর অরিজিৎ চন্দ। খবর পাওয়ার পরে দু ঘন্টা কেটে গেলেও পুলিশ সেখানে যায়নি বলে অভিযোগ। এরপর বিদ্যুৎ সিংহ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি রোগীর জামার কলারে দর্জির দোকানের ঠিকানা দেখে জানতে পারেন হিলি থানার তিওড় এলাকায় খবর দেন। তিওড় থেকে আত্মীয়রা খাদিমপুর এলাকায় ছুটে আসেন। কাউন্সিলর অরিজিতবাবু বলেন, “সকাল ১১টা থেকে ভিজিটিং আওয়ার্স। তার আগে ওই রোগী দোতালা থেকে হেঁটে সিড়ি দিয়ে নীচে নেমে নিরাপত্তা কর্মীর চোখ এড়িয়ে প্রধান গেট দিয়ে বের হয়ে রঘুনাথপুর এলাকার হাসপাতাল থেকে চার কিমি দূরে চলে এলেন! কর্তৃপক্ষের কারও নজরে পড়ল না?” ডিউটিতে থাকা নার্স ও আয়া কেউই মুখ খুলতে অস্বীকার করেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.