|
পরিপূর্ণ মানুষ হিসাবে
গড়ে তোলাই
লক্ষ্যহীরেন্দ্রনাথ সমাদ্দার
প্রধান শিক্ষক |
|
সালটা ১৯৭৪। শিক্ষানুরাগী কিছু মানুষ সমাজের সর্বস্তরে শিক্ষার সুযোগ পৌঁছে দিতে এগিয়ে এলেন। এ কাজের জন্য সর্বাগ্রে যা প্রয়োজন সেই অর্থের ব্যবস্থাও করলেন তাঁরাই, ব্যক্তিগত দানের মাধ্যমে। এঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন প্রয়াত খগেন্দ্রনাথ চাকলাদার। তাঁর এবং অঞ্চলের বাসিন্দাদের মিলিত চেষ্টায় তৈরি হল গোয়ালবাগী খগেন্দ্রনাথ বিদ্যানিকেতন। ভূমিষ্ট হওয়ার পরে যা নানা প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ১২ বছর পরে ১৯৮৬ সালে জুনিয়র হাইস্কুলের সরকারি স্বীকৃতি পায়। এর পরে ধীরে ধীরে স্বীকৃতি অর্জন করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে। আজ এই বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৭৫০ জন। যাদের বেশিরভাগই এসেছে তফসিলি জাতি-উপজাতি এবং অনগ্রসর সম্প্রদায় থেকে। মূলত কৃষিপ্রদান এই অঞ্চলে পড়ুয়াদের অধিকাংশই চাষি এ দিনমজুর পরিবার থেকে আসা। গত কয়েক বছরে বিদ্যালয়ে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। এটা নিঃসন্দেহে নারীশিক্ষার প্রসারে আশাব্যঞ্জক। কয়েক বছর আগেও বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমের সমস্যা অত্যন্ত প্রকট ছিল। তবে সর্বশিক্ষা মিশনের অর্থানূকুল্যে সেই সমস্যা অনেকটাই মিটেছে। পঠনপাঠানের পরিকাঠামোর উন্নতি হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার উপযোগী কম্পিউটার শিক্ষা চালু করা হয়েছে বিদ্যালয়ে। তবে বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা প্রয়োজনেক তুলনায় কম থাকায় কিছু সমস্যা রয়েছে। সর্বোপরি যে সমস্যা বিদ্যালয়ের আরও উন্নতির পথে বাধা তা হল রে সংযোগকারী রাস্তা। গোয়ালবাগী মোড় থেকে অর্থাৎ বনগাঁ বাজিতপুর রোড থেকে বিদ্যালয়ের এক কিলোমিটার রাস্তাটি কাঁচা। যাতায়াতের একেবারে অনুপযোগী। আশা করি ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে প্রশাসন এ দিকে নজর দেবেন। পঠনপাঠনের পাশপাশি নিয়মিত খেলাধূলা ও প্রতি শনিবার বিদ্যালয়ে ছুটির পরে আগ্রহী ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সংস্কৃতি চর্চার ব্যবস্থা রয়েছে। যেখানে ছবি আঁকা, নাচ-গান, আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করে ছাত্রছাত্রীরা।
|
আমার চোখে
আসিফ ইকবাল মণ্ডল
ক্লাস
টেন-এর ফার্স্ট বয় |
|
|
পঞ্চম শ্রেণি থেকে এই বিদ্যালয়ের একজন ছাত্র আমি। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ছাত্রছাত্রীদের প্রতি সস্নেহ মনোভাব এবং তাদের যে কোনও সমস্যায় সহযোগিতা তাঁদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা বাড়িয়ে দেয়। স্কুলের পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা হয়তো পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে বাওধা সৃষ্টি করছে। কিন্তু তা যে বিদ্যলয়ের উন্নতির পথে অন্তরায় হতে পারে না তা স্কুলের সামগ্রিক ফলই পরিচয়। ছাত্রছাত্রীদের শুধুমাত্র পড়াশোনায় আবদ্ধ না রেখে তাদের জন্য খেলাধূলা ও সংস্কৃতি চর্চার ব্যবস্থা করে এক জন পরিপূর্ণ মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করছেন স্কৃল কর্তৃপক্ষ। এটা স্কুলের ছাত্র হিসাবে আমার কাছে অত্যন্ত গর্বের।
|