কপালে তিলক। হাতে জড়িবুটি। এই অবস্থায় বিষ্ণুপুর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ঢুকে উৎপাত চালাল এক মদ্যপ যুবক। কখনও সদ্যোজাতদের ফুল বেলপাতা খাওয়ানোর চেষ্টা করল। কখনও মোবাইলে ছবি তোলার চেষ্টা চালাল। রবিবার সকালে ঘণ্টা খানেক ধরে হুলস্থুল চললেও নিরাপত্তা রক্ষীদের দেখা মেলেনি। পরে রোগীর আত্মীয়েরাই ওই যুবককে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এই ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ‘বেআব্রু’ হয়ে পড়ল বলে অভিযোগ।
শিশু বিভাগে ভর্তি থাকা আত্মীয়কে দেখতে আসা রামসাগর গ্রামের সুবোধ বাউড়ি বলেন, “ওই যুবক মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তান্ত্রিক পরিচয় দিয়ে ওয়ার্ডের ভিতরে ঢুকে বাচ্চাদের ফুল বেলপাতা খাওয়ানোর চেষ্টা করছিল। আমরা বাধা দিই।” রোগীর আত্মীয়েরা জানান, প্রথমে ও দোতলায় শিশু ওয়ার্ডে ঢুকেছিল। তাড়া খেয়ে পাশের প্রসূতি ওয়ার্ডের ভিতরে ঢোকে। এক রোগিনী বলেন, “ওই লোকটাকে দেখেই বুক ঠাণ্ডা হয়ে গিয়েছিল। মোবাইল ফোন বের করে ছবিও তুলছিল। ওয়ার্ডের ভিতরে আমরা চিৎকার করি।”
হাসপাতালের সুপার রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “আমি ছুটিতে রয়েছি। তবে ঘটনাটি উদ্বেগজনক।” ভারপ্রাপ্ত সুপার তড়িৎকান্তি পাল বলেন, “স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে হাসপাতালের কর্মীরা তাড়া করে ওই মদ্যপ যুবককে ধরে। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।” প্রায় এক ঘণ্টা ধরে হাসপাতালের ভিতরে এক জন বহিরাগত ঢুকে উৎপাত চালাল কী করে তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। হাসপাতালের সুপার জানান, আগে নিরাপত্তা রক্ষী ছিল। তাঁদের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। নবীকরণ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। হাসপাতালে দিনরাত পুলিশ পাহারা চেয়ে বিষ্ণুপুর থানাকেও জানান হয়। কিন্তু পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “পুলিশ কর্মীর ঘাটতি রয়েছে। হাসপাতালে পুলিশ দেওয়া তাই যাচ্ছে না।”
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম শুভাশিস চট্টোপাধ্যায়। জয়পুর থানার ধাড়া গ্রামে তার বাড়ি। প্রাথমিক ভাবে তাঁকে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হওয়ায় বিকেলে পুলিশ ছেড়ে দেয়। ওই যুবকের স্ত্রী ’র দাবি, “স্বামী অপ্রকৃতস্থ। এখান সেখান ঘুরে বেড়ান। হাসপাতালে কেন গিয়েছিলেন বুঝতে পারছি না।” তবে বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা কেমন, তা রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা বুঝে গিয়েছেন। |