|
|
|
|
কেশপুর |
দ্বন্দ্ব রুখতে বিশেষ কমিটি তৃণমূলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সম্প্রতি কেশপুরে গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে তৃণমূল। দলীয় কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে জোর-জুলুমের অভিযোগও উঠছে। এই পরিস্থিতি ঠেকাতে ব্লক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ৮ সদস্যের একটি ‘বিশেষ কমিটি’ তৈরি করল জেলা তৃণমূল। শনিবার রাতে মেদিনীপুর শহরে বৈঠক শেষে এই কমিটি তৈরি করা হয়।
জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছেন, এই কমিটির সদস্যরা প্রতিটি অঞ্চলে গিয়ে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। কোথাও কোনও সমস্যা হলে খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে। এ দিকে, জেলা নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তে কেশপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি আশিস প্রামাণিকের অনুগামীরা ‘ক্ষুব্ধ’ বলে দল সূত্রে খবর। ওই সূত্র জানাচ্ছে, এই ‘বিশেষ কমিটি’ তৈরি হওয়ায় নিজেকে ‘অপ্রাসঙ্গিক’ মনে করে ঘনিষ্ঠ মহলে ব্লক সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন আশিসবাবু। জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ অবশ্য বলেন, “ব্লক সভাপতি ইস্তফা দেবেন, এমন কোনও খবর জেলা নেতৃত্বের কাছে নেই।” আশিসবাবুর ফোনও এ দিন বেজে গিয়েছে।
বাম জমানায় কেশপুর ছিল ‘লাল দুর্গ’। অঞ্চলস্তরে বিরোধীদের পার্টি অফিস পর্যন্ত ছিল না। স্থানীয় মানুষ ভেবেছিলেন, ‘পরিবর্তন’ হলে পরিস্থিতি পাল্টাবে। কিন্তু একের পর এক গোষ্ঠী সংঘর্ষে বর্তমান শাসকদল জড়িয়ে পড়ায় সেই ধারণা ভেঙে গিয়েছে। গোষ্ঠী সংঘর্ষের তাকিায় শেষ সংযোজন ট্যাঙাগেড়িয়া। ক’দিন আগে এখানে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। চলে বাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাট। আহন হন প্রায় ১২ জন। জখম হন আরও প্রায় ১৬ জন। এ ঘটনায় সামনে চলে আসে ব্লক তৃণমূল সভাপতি আশিস প্রামাণিকের সঙ্গে ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি শেখ আলহাজউদ্দিনের ‘বিরোধ’। এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েই গোলমাল। যদিও দুই নেতারই বক্তব্য, এ সব ‘অপপ্রচার’।
আগে কেশপুরের ব্লক সভাপতি ছিলেন চিত্ত গরাই। লাগাতার ‘অনভিপ্রেত’ ঘটনা ঘটতে থাকায় পালাবদলের ক’মাস পর তাঁকে সরিয়ে আশিসবাবুকে ব্লক সভাপতি করা হয়। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি বলে অভিযোগ। শেষমেশ শনিবার মেদিনীপুর শহরে বৈঠকে বসেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। ডাকা হয় কেশপুরের নেতাদের। উপস্থিত ছিলেন দাসপুরের বিধায়ক অজিত ভুঁইয়া, জেলা সভাপতি দীনেন রায়, কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ, জেলা নেতা আশিস চক্রবর্তী প্রমুখ। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঠেকানো যে সহজ নয়, তা বৈঠকেই বুঝে যান জেলা নেতৃত্ব। আলোচনা চলাকালীন চিত্ত গরাই ও আশিস প্রামাণিক- দু’জনেই একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে সরব হন। দলীয় সূত্রে খবর, বৈঠকে আশিসবাবু অভিযোগ করেন, চিত্তবাবু সব সময় তাঁর সঙ্গে অসহযোগিতা করছেন। কেশপুরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন! চিত্তবাবু পাল্টা জানান, ‘এলাকার মানুষ আমাকে ভালবাসে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করে। তাই যাই’।
বৈঠক শেষে ৮ সদস্যের যে কমিটি তৈরি করা হয়েছে, সেখানে অবশ্য চিত্তবাবু, আশিসবাবু দু’জনেই রয়েছেন। ‘বিরোধ’ দূরে সরিয়ে এই কমিটি কাজ করতে পারে কি না, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|