সীমানা পাঁচিলের বেহাল দশা। একাধিক জায়গায় ইট খুলে পড়েছে। ওই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দুষ্কৃতীরা সক্রিয় রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাসে। কাঠ চুরি তো হচ্ছেই, এমনকী পর্যটকদের কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল কেড়ে নিয়ে চম্পট দিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। বনকর্মীদের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানানো হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই পরিস্থিতির পরেও বন দফতর এতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। বনকর্মীদেরও অভিযোগ, সমস্যার কথা দফতরের কর্তাদের বলা হলেও পক্ষীনিবাসের পরিকাঠামোর উন্নয়নের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন সম্প্রতি পক্ষীনিবাস পরিদর্শন করে দফতরের কর্তাদের কাছ থেকে সমস্যার কথা জেনে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার কুলিক পক্ষিনিবাসের পরিকাঠামোর উন্নয়নের ব্যাপারে একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হয়ে যাবে।” কুলিক পক্ষিনিবাস রেঞ্জের অফিসার প্রদীপ চৌধুরী জানান, বরাদ্দ না মেলায় পক্ষীনিবাসের পরিকাঠামোর উন্নয়নের কাজ আটকে রয়েছে।” বনকর্মীরা জানান, পক্ষী নিবাসের সংরক্ষিত এলাকায় পর্যটকদের বসার জন্য ৭টি কংক্রিটের বেঞ্চের মধ্যে ৫টি ভেঙে গিয়েছে। ৪টি শৌচাগার নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় দুর্গন্ধে পর্যটকরা সেগুলি ব্যবহার করতে পারছেন না। পক্ষী নিবাস চত্বরে পর্যটকদের জলের বোতল নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ। অথচ সংরক্ষিত এলাকায় পর্যটকদের জন্য পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। পর্যটকদের প্রায় এক কিলোমিটার দূরের টিকিট কাউন্টার সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে নলবাহী ট্যাপকল থেকে জল সংগ্রহ করতে হয়। এ ছাড়া পক্ষী নিবাস চত্বরের স্লুইস গেট দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে যাওয়ায় সংলগ্ন কুলিক নদী থেকে একাধিক ক্যানালে জল সরবরাহ বন্ধ। জল শুকিয়ে যাওয়ায় পাখিদের খাবার সংগ্রহ করতে অসুবিধা হচ্ছে। জলের অভাবে মাছ, সাপ ও বিভিন্ন জলজ প্রাণী মরে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। পক্ষী নিবাস চত্বরে দুষ্কৃতীরা ঢুকে কাঠ ও গাছের ডাল ভেঙে চুরি করে পালাচ্ছে। পক্ষী নিবাসে ১৮ জন অস্থায়ী নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছেন। সপ্তাহে তিন জন নিরাপত্তা রক্ষীকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ডিউটি দেওয়া হয়। স্থায়ী কর্মী ৯ জন। তাঁদের অভিযোগ, বার বার বন কর্তাদের সমস্যার কথা জানানো হলেও ব্যবস্থা হচ্ছে না।” |