নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে কাঠ। ফাটলও ধরেছে কিছু জায়গায়। পা পড়লেই গুড়ো হয়ে যাচ্ছে কাঠ। এমনই হাল কালনা খেয়াঘাট থেকে জেটি পর্যন্ত ৪০ ফুট দীর্ঘ কাঠের সেতুটির। অন্য উপায় না থাকায়, ওই সেতু দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন স্থানীয় মানুষ। |
খেয়া পারাপারের সুবিধার জন্য বছর পাঁচেক আগে কালনার ঘাটে তৈরি হয় জেটিটি। ঘাট থেকে জেটি পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য তৈরি করা হয় সেতু। সেটির রেলিং লোহার হলেও পাটাতনটি কাঠের। লোহার থামের সঙ্গে ইস্পাতের চাকা দিয়ে বাঁধা সেতুটি। ইজারাদারদের তরফে সৌম্যদীপ তিওয়ারি বলেন, “সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খেয়া চালু থাকায় নদিয়া ও বর্ধমানের কয়েকহাজার মানুষ বাজার-হাট, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সরকারি কার্যালয়, মহকুমা আদালত, স্কুল-কলেজ সহ নানা প্রয়োজনে ভাগীরথী পারাপার করেন। যে কোনও সময়ে পায়ের চাপে ওই কাঠ ভেঙে পড়ে বিপদ ঘটতে পারে। সামনেই বর্ষার মরসুম। তার আগেই পাটাতনের কাঠ না বদলালে যাত্রীদের যাতায়াত বেশ ঝুঁকির হয়ে যাবে।” তাঁর দাবি, “ছ’মাস ধরে সেতুটির সংস্কারের জন্য আবেদন করা হয়েছে পুরসভাকে। কিন্তু কাজ হয়নি কোনও। খেয়াঘাটের ইজারাবাবদ পুরসভা প্রতি বছর টাকা পায়। পুরসভার উচিত বিষয়টির দিকে নজর দেওয়া।”
সেতুর এই বেহাল দশায় রীতিমতো আতঙ্কিত নিত্যযাত্রীরা। তাঁদের দাবি, হাঁটলেই শব্দ হচ্ছে কাঠের। কিছু কিছু জায়গায় কাঠ ভেঙে গিয়ে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। পা পড়লেই কয়েকটি জায়গায় গুড়িয়ে যাচ্ছে কাঠ। নিত্যযাত্রী বাসুদেব দাস বলেন, “অনেক জায়গাতেই পাটাতনের কাঠ নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। মোটর সাইকেল নিয়ে যাতায়াত করতে বেশ ভয় লাগে।” সৌম্যদীপবাবুর দাবি, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সেতু মেরামতে হাত লাগাতে হচ্ছে নিজেদেরকেই। |
অন্য দিকে রয়েছে জেটি সরে যাওয়ার সমস্যা। ইতিমধ্যেই থামের সঙ্গে লোহার শিকল দিয়ে বাঁধা জেটিটিও ভাগীরথীর দিকে এগিয়ে গিয়েছে কিছুটা। ঘাটের ইজারাদারদের আশঙ্কা, বর্ষার সময়ে ভাগীরথী প্লাবিত হলে জেটিটি আরও খানিকটা এগিয়ে যাবে। সেই চাপে ছিঁড়ে যেতে পারে লোহার শিকল। তাঁদের ক্ষোভ, জেটিটি যাতে নিরাপদ থাকে, তা দেখার কথা পুরসভার। কিন্তু পুরসভা বিষয়টি সম্পর্কে উদাসীন।
সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ কুণ্ড। তিনি বলেন, “পুরসভা ইতিমধ্যেই সেতুটির সংস্কার এবং অন্যান্য সমস্যার সমাধান করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে।”
|
ছবি: কেদারনাথ ভট্টাচার্য। |