পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল গুসকরায়। দল থেকে ‘বহিষ্কৃত’ গুসকরার পুরপ্রধান চঞ্চল গড়াইয়ের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন ওই এলাকার তৃণমূল নেতা নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়। চিঠির প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছেও। পুরপ্রধান চঞ্চলবাবু অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
কয়েক মাস আগেই দলীয় পুরপ্রধান চঞ্চলবাবুকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দুর্নীতি, দলবিরোধী কাজ, স্বজনপোষণ-সহ নানা অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করা হল বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক মলয় ঘটক। চঞ্চলবাবু অবশ্য পুরপ্রধানের পদে থেকে যান।
গুসকরা শহর তৃণমূল সভাপতি নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জলপ্রকল্প-সহ নানা বিভাগের মোট ৩২টি শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ হবে। নিয়োগ কমিটির সভা ডেকে আলোচনার পরে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তের পরেই পুরপ্রধান চঞ্চল গড়াই নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে বেআইনি ভাবে অনেকের কাছ থেকে লোকজন মারফত টাকা নিয়েছেন। নিত্যানন্দবাবু জানান, সম্প্রতি তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই অভিযোগে চিঠি পাঠিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে চিঠির প্রাপ্তিস্বীকারও করা হয়েছে বলে তাঁর দাবি।
নিত্যানন্দবাবুর অভিযোগ, “পুরপ্রধানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল দুর্নীতিমূলক কাজকর্মের জন্যই। তার পরেও তিনি পদ আঁকড়ে রেখেছেন। সামনের বছর পুর নির্বাচন। তার আগে তিনি চাকরি দেওয়ার নাম করে বাজার থেকে টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।” তিনি জানান, নাগরিকদের ঠিক মতো পরিষেবা দিতে অবিলম্বে পুরসভায় সরকারি প্রশাসক বসাতেও অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে।
পুরপ্রধান চঞ্চলবাবু অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “যে বোর্ড মিটিংয়ে ওই প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে, তাতে পুরসভার ১৬ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৫ জন উপস্থিত ছিলেন। ওই ৩২টি পদ দীর্ঘদিন ধরে খালি। বারবার সরকারের কাছে আবেদন জানানোর পরে রাজ্যের অর্থ মন্ত্রক ওই পদ পূরণে অনুমোদন দিয়েছে। এখনও চাকরির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি।” তাঁর পাল্টা দাবি, “কিছু লোক নিজেদের স্বার্থে চক্রান্ত করে জরুরি এই নিয়োগ বানচালের চেষ্টা করছে। তাই এমন অভিযোগ তুলছে। তবে নাগরিকেরা আমার পাশেই রয়েছেন।” দল থেকে বহিষ্কারের ব্যাপারে তাঁকে শুধু মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে চঞ্চলবাবুর দাবি, “আমি দলের রাজ্য কমিটির সদস্য। আমাকে বহিষ্কার করতে হলে রাজ্য তৃণমূলকে লিখিত ভাবে জানাতে হবে। শুধু জেলা পর্যবেক্ষকের মৌখিক বিবৃতিতে আমাকে বহিষ্কার করা যায় না।”
রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “আমি নিত্যানন্দবাবুর অভিযোগ সম্পর্কে কিছু জানি না। ঘটনাটি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হবে। নিয়োগের ব্যাপারে বেনিয়ম হলে অবশ্যই পদক্ষেপ করা হবে।” |