মালদহে হামলা পুলিশের উপর
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের, তৃণমূল নেতাকে ‘অপহরণের’ চেষ্টা
ক ব্লক তৃণমূল নেতাকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল দলেরই অন্য ‘গোষ্ঠী আশ্রিত’ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।
আর সেই ঘটনাকে ঘিরে তেতে উঠল মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার বাজারতি গ্রাম। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে গিয়ে অন্য গোষ্ঠীর লোকেদের হামলার মুখে পড়ল পুলিশ। এই ঘটনায় মালদহে তৃণমূলের দলীয় দ্বন্দ্বের চেহারা ফের প্রকাশ্যে এসেছে।
শনিবার রাতের ওই ঘটনায় দুষ্কৃতী-হামলায় ৫ পুলিশ কর্মী জখম হন। পুলিশের একটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। আবদুল গনি নামে এক পুলিশ কর্মীর চোখে ভাঙা কাচের টুকরো ঢুকে গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “অভিযুক্তদের ধরতে বাজারতি গ্রামে পুলিশকর্মীরা ঢুকলে কিছু দুষ্কৃতী বোমা, গুলি ও ইট ছুড়ে হামলা করে। মালদহ থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। দু’জনকে ধরা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের পাল্টা অভিযোগ এনেছেন। তৃণমূলের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির আহ্বায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব অবশ্য বলেন, “ঘটনাটি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।”
অন্য দিকে, রবিবার বিকেলে উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ থানার নিমিচি হাসপাতালের কাছে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ভন্ডুল হয়ে যায় দলীয় সভাই। দু’পক্ষের মারপিটে জখম হন ১০ জন। কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চলে। হয় পথ অবরোধও। ফের গোলমালের আশঙ্কায় এলাকায় পুলিশি টহল শুরু হয়েছে। তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “দলীয় কর্মীদের উপরে আক্রমণ মেনে নেওয়া হবে না। তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে।”
পুলিশ ও তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, মালদহে দলের যে নেতাকে শনিবার ‘অপহরণ’-এর চেষ্টা হয়, সেই আতিকুর রহমান কালিয়াচক-৩ ব্লকের তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি। শনিবার রাতে একটি সলিশি সভা সেরে বাড়িতে ফেরার পথে কিছু দুষ্কৃতী তাঁকে অপহরণের চেষ্টা করে। ওই তৃণমূল নেতার চিৎকারে রাস্তায় টহলদারিতে থাকা পুলিশকর্মীরা ছুটে গেলে দুষ্কৃতীরা পালায়। এর পরেই ওই তৃণমূল নেতা বৈষ্ণবনগর থানায় দলেরই ৮ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রাতে বাজারতি গ্রামে গেলে আক্রান্ত হয়। পুলিশের উপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে স্থানীয় ২১ জন তৃণমূল সমর্থক-সহ ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। হামলায় জড়িত সন্দেহে ধৃত দু’জন তৃণমূল সমর্থক বলেই এলাকায় পরিচিত। বাজারতি গ্রামের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, তল্লাশি অভিযানের নামে পুলিশ গ্রামের ১০টি বাড়ি ভাঙচুর করে লুটপাঠ চালায়। আগুনও লাগিয়ে দেয়। যদিও বৈষ্ণবনগর থানার আইসি মানিক দেবনাথের দাবি, “হামলাকারীরা নিজেদের বাড়িতে নিজেরাই লুটপাঠ চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।”
জেলার রাজনীতিতে আতিকুর রহমান মালদহ জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের অনুগামী বলে পরিচিত। অন্য দিকে, আতিকুর যে ৮ জনের বিরুদ্ধে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন, তাঁরা ইংরেজবাজারের উপ-পুরপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারের অনুগামী। সাবিত্রীদেবী বলেন, “কিছু দুষ্কৃতী বাঁচার জন্য তৃণমূলের ঝান্ডা হাতে নিয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। পুলিশ সুপারকে বলেছি, কোনও রঙ দেখবেন না। যারা পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে, অপহরণ করা চেষ্টা করেছে, তাদের গ্রেফতার করুন।” দুলালবাবুর দাবি, অপহরণের চেষ্টা কিংবা পুলিশের উপরে হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। তিনি বলেন, “আসলে এটা সীমান্তে গরু পাচার নিয়ে দু’দল দুষ্কৃতীর লড়াই। অন্য কিছু নয়।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরীর কটাক্ষ, “অনেক দিন ধরেই বলছিলাম, কংগ্রেসকে ভাঙতে তৃণমূল সমাজবিরোধীদের দলে ঢোকাচ্ছে। আজ সেই অভিযোগ সত্যি হল। এখন সেই সমাজবিরোধীদের নিয়ে তৃণমূলের মধ্যেই লড়াই শুরু হয়েছে।” বাজারতি গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশও অভিযোগ করেন, এক সময়ে সিপিএম এবং কংগ্রেসের আশ্রয়ে থাকা দুষ্কৃতীরা তৃণমূলে ভিড়ছে। দু’মাস আগে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছে তাঁরা এ ব্যাপারে অভিযোগও জানিয়েছিলেন।

পুথির বাইরে শিক্ষার প্রসার চাইছে রাজ্য
রাজ্য সরকার পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও শিক্ষার প্রসার চাইছে বলে রবিবার জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। টাকী বয়েজ স্কুলের পুনর্মিলন উৎসবে যোগ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “পুথি-নির্ভর পড়ানোটা কখনওই আদর্শ শিক্ষা হতে পারে না। তাতে অনেক ফাঁক থেকে যায়।” সেই কারণেই সরকার স্কুলে এবং কলেজে পাঠ্যবই-বহির্ভূত পাঠ্যক্রমকে আরও প্রসারিত করার কথা ভাবছে বলে জানান মন্ত্রী।ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে পুনর্মিলন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্রাত্যবাবু। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তিনি ছাত্রদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। ছাত্রদের মধ্যে থেকেই একের পর এক প্রশ্ন উঠে আসে বর্তমান সরকারের শিক্ষানীতি প্রসঙ্গেও। পাশ-ফেল নীতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ব্রাত্যবাবু জানান, পাশ-ফেল তুলে দেওয়া হলেও সব স্কুলেই পরীক্ষা ব্যবস্থা বহাল থাকছে। ফলে রাজ্যে লেখাপড়ার মানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা দেখছেন না তিনি।রাজ্য সরকারের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ বছর বিনামূল্যে ন’টি বই দেওয়া হয়েছে। দু’টি বই বিনামূল্যে দেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ, যাঁরা পুস্তক শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন, এ ক্ষেত্রে তাঁদের রুজিরোজগারের কথা ভাবতে হয়েছে সরকারকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.