|
|
|
|
|
|
|
বিড়লা অ্যাকাডেমির অদেখা সংগ্রহ |
ফিরে দেখা |
মোটামুটি গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে সংগ্রহের শুরু। সেই সংগ্রহ সাধারণের সামনে পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১৯৬২-তে। গড়া হয় পাবলিক ট্রাস্ট, তৈরি হতে থাকে এগারোতলা একটি বাড়ি। ১৯৬৭-তে সেই বাড়িটি, বিড়লা অ্যাকাডেমি অব আর্ট অ্যান্ড কালচারের উদ্বোধন করেন করণ সিংহ, এ শহরে ৪৫ বছরের এক শিল্প-ইতিহাসের সেই সূচনা। সে ইতিহাসে অনেক উজ্জ্বল অধ্যায়, উজ্জ্বলতমটি বোধহয় এ শহরে রদ্যাঁ-র প্রদর্শনী। এ ছাড়াও হেনরি মুরের প্রদর্শনী এবং পিকাসোর গ্রাফিক্স নিয়ে প্রদর্শনীও যথেষ্ট সাড়া জাগিয়েছিল। এ ভাবেই ক্রমে শহরের শিল্পচর্চায় বসন্তকুমার বিড়লা-দম্পতির এই উদ্যোগ স্মরণীয় হয়ে আছে। কিন্তু প্রায় অর্ধশতকে যে সংগ্রহ তৈরি হয়ে উঠেছে তার সবটা স্বাভাবিক ভাবেই অ্যাকাডেমির চারটি গ্যালারিতে দেখানো সম্ভব হয়নি। তাই এ বার ৪৫ বর্ষে পদার্পণ উদ্যাপনে অতীতে ফিরে যেতে চায় বিড়লা অ্যাকাডেমি। |
|
সেই উজ্জ্বল অতীতে চিত্র, ভাস্কর্য, অঙ্কন, ছাপচিত্র, মিনিয়েচার পেন্টিং, বস্ত্রশিল্প, পাণ্ডুলিপি কী নেই। শুধু দেশের নয়, বিদেশেরও। অবনীন্দ্রনাথ (সঙ্গে তাঁরই একটি ছবি)-গগনেন্দ্রনাথ-রবীন্দ্রনাথ, রামকিঙ্কর, অগুস্ত রদ্যাঁ, অমৃতা শের-গিল, এমনকী তুলুস লুত্রেক। সেই বিশাল সংগ্রহের কিছু নিয়ে আজ শুরু হচ্ছে প্রদর্শনী, ‘ওডিসি: আ জার্নি ইনটু টাইম উইথ দ্য কালেকশন’। চারটি তলে আধুনিক ও সমকালীন ভারতীয় শিল্প, প্রাচীন ও মধ্যযুগের শিল্প এবং আন্তর্জাতিক শিল্প এই ভাবে সাজানো হয়েছে প্রদর্শনীটি। অ্যাকাডেমির ডিরেক্টর তারণকুমার বিশ্বাস জানালেন, বিড়লাদের মোট সংগ্রহের পাঁচ শতাংশ মাত্র দেখানো হচ্ছে এই প্রদর্শনীতে। থাকছে বহু অ-দেখা কাজও। এই উপলক্ষে ৪০০-রও বেশি ছবি-সহ একটি ক্যাটালগ প্রকাশিত হচ্ছে, সম্পাদনায় নানক গঙ্গোপাধ্যায়। প্রদর্শনীর কিউরেটর নানক গঙ্গোপাধ্যায়, শাহিন মেরালি এবং তারণকুমার বিশ্বাস। আজ সাড়ে ছ’টায় প্রদর্শনীটির সূচনা করবেন দিল্লির ন্যাশনাল গ্যালারি অব মডার্ন আর্টের ডিরেক্টর রাজীব লোচন। চলবে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত (৩-৮টা, সোমবার ও ছুটির দিন বাদে)।
|
গর্বিত |
অনেক রকম সৈন্যবাহিনী তো দেখা গেল! কেমন হয় যদি এমন একটা সেনাদল তৈরি হয়, যারা সকলকে বার বার কেবল মনে করিয়ে দেবে যে, হিউম্যানিটিজ ও আর্টস অর্থাৎ মানববিদ্যা ও কলাবিদ্যা ছাড়া এ দুনিয়া নেহাতই অসম্পূর্ণ, অসহায়? আশ্চর্য ভাবনা! আত্ম-আবিষ্কারের ভাবনা। ৫ জানুয়ারি সন্ধেয় এই ভাবনা ভাবালেন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ডিন অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ ডিয়ানা সরেনসন (সঙ্গের ছবি)। বিজ্ঞান বা প্রযুক্তি বা বাণিজ্য বা আইন, সবেতেই লাগে মানববিদ্যার চর্চা, তার সাহায্য ছাড়া কি কোনও বড় ঘটনার বিশ্লেষণ করা যায়, সৃজনশীল প্রশ্ন তোলা যায়, সৃষ্টি, প্রকৃতি, মানুষকে অনুভব করা যায়? নেতাজি ভবনে আয়োজিত এক সভায় সে দিন তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসলেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য মালবিকা সরকার ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক সুগত বসু। আলোচনা অবশ্য মঞ্চেই থেমে থাকল না। দর্শকাসন থেকে মানববিদ্যার সংকট নিয়ে আলোচনায় যোগ দিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাশ এবং নিউজিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলিংটন-এর অধ্যাপক ও ঐতিহাসিক শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সন্ধের শহর গর্বিত হল এমন এক অসাধারণ ‘বাহিনী’র সাহচর্যে!
|
|
পথিকৃৎ |
চেকোস্লোভাকিয়ার বিশেষ প্রজাতির এক কুকুরকে নিয়ে গল্পের বাংলা অনুবাদ। এর জন্য ছবি আঁকবেন যিনি তিনি ছুটলেন অনুবাদকের কাছে। কুকুরটির ছবি চাই। অনুবাদক বিস্মিত! ও কুকুর কোনও দিন দেখেনইনি তিনি। যে কোনও কুকুরের ছবি এঁকে দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়! প্রস্তাব শুনে বিরক্ত শিল্পী দিনের পর দিন নানা লাইব্রেরি খুঁজলেন। শেষে মির্জা গালিব স্ট্রিটের এক পুরনো বইয়ের দোকান থেকে সাড়ে তিনশো টাকা খরচ করে কিনলেন একটা বই, যাতে কুকুরটির ছবি আছে। তবে শুরু হল অলংকরণ। শিল্পীর নাম? শক্তিপ্রসাদ রায়চৌধুরী। না, চেনা গেল না একেবারেই। প্রসাদ রায়? কিছুটা হয়তো পরিচিত। কিন্তু যদি নামটা হয় ময়ূখ চৌধুরী? এক ডাকে চেনেন অনেকেই। প্রকৃত নাম শক্তিপ্রসাদ, অলংকরণ করতেন প্রসাদ রায় নামে। তা ছাড়াও আরও তিন ছদ্মনাম ছিল তাঁর সূত্রধর গুপ্ত, আত্মনাম গুপ্ত আর রাজা রায়। মৌলিক কাহিনি ভিত্তি করে কমিক্স তৈরিতে বাংলায় পথিকৃৎ ময়ূখ চৌধুরী। শুরু ১৯৬২-তে (‘ঋণশোধ’)। তার পরে ছদ্মবেশী, দুরন্ত কাহিনি, শয়তানের দ্বীপ, প্রান্তরে মৃত্যুর হানা, দ্বৈরথ, অন্ধ মাকড়সা অ্যাডভেঞ্চার কমিকস, বিশেষত পশুচিত্রণে তিনি ইতিহাস। নতুন বছরে সুলভ হল সেই সব সৃজন, ময়ূখ চৌধুরী কমিক্স-সমগ্র-এর প্রথম খণ্ডটি প্রকাশিত হল লালমাটি থেকে। সম্পাদনায় বিশ্বদেব গঙ্গোপাধ্যায় ও সৌম্যেন পাল।
|
উত্তরণ |
‘পিসেমশাই আমি তোমার নাটকে অভিনয় করতে চাই’ এই ছিল সূত্র। গড়িয়া মোড়ে এক দিন কথা হচ্ছিল নাট্য-পরিচালক, লেখক দেবীপ্রসাদ চক্রবর্তীর সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত বন্ধু শিক্ষক গৌরীশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সে সময় এই আবদারটি করেছিল শিক্ষক-কন্যা টুপুর। টুপুরের কিছু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও হার মানেননি দেবীবাবু। কন্যা শর্মিষ্ঠার উৎসাহেই লেখা হল নাটক। ক্যাসেটবন্দি সেই পাঠ পৌঁছল টুপুরের কাছে। অতঃপর এক বছরের দীর্ঘ মহড়া। শর্মিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়ের কাহিনি ও পরিচালনায় এ বারে তৈরি পঞ্চাশ মিনিটের নাটক ‘আশা’। ‘পথযাত্রী’ নাট্যসংস্থার উদ্যোগে এটি মঞ্চস্থ হবে ১১ জানুয়ারি সন্ধে সাড়ে ছ’টায় তপন থিয়েটারে। এ নাটক প্রতিবন্ধকতার বাইরে গিয়ে এক নারীর উত্তরণের কাহিনি। নাম-ভূমিকায় স্বয়ং টুপুর ওরফে সুপ্তি বন্দ্যোপাধ্যায়, আর পিতার ভূমিকায় দেবীপ্রসাদ চক্রবর্তী।
|
শতবর্ষে |
বঙ্গভঙ্গ-প্রতিরোধ আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় সরকারি স্কুল-কলেজ থেকে বিতাড়িত ছাত্রদের বিকল্প শিক্ষার জন্য তৈরি হয়েছিল জাতীয় শিক্ষা পরিষদ। ১৯০৬-এর ১৪ অগস্ট অরবিন্দ ঘোষের অধ্যক্ষতায় এর সূচনা। ১৯৫৫-য় ওই পরিষদ থেকেই গড়ে ওঠে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সেই উত্থানপর্বে উপাচার্য ত্রিগুণা সেনের যোগ্য সহযোগী ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম রেজিস্ট্রার প্রবীরচন্দ্র বসুমল্লিক। সম্পর্কের নিরিখে যিনি জাতীয় শিক্ষা পরিষদ-এর প্রথম দাতা রাজা সুবোধচন্দ্র বসুমল্লিকের জ্যেষ্ঠ পুত্র। ১৯১১-র ১ জুলাই প্রবীরচন্দ্রের জন্ম। সেন্ট জেভিয়ার্স, রানি ভবানী, প্রেসিডেন্সি কলেজের পাঠ শেষ হলে ইংল্যান্ডে যান এবং ট্রিনিটি কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে দেশে ফেরেন। তাঁর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ ১৪ জানুয়ারি, বিকেল তিনটেয় ইন্দুমতী সভাগৃহে এক স্মরণ-অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। স্মৃতিচারণা করবেন পঙ্কজ সাহা, প্রবীরচন্দ্রের পুত্র দীপঙ্করচন্দ্র বসুমল্লিক প্রমুখ। পরে বিশ্ববিদ্যালয়-প্রশাসনের অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনায় যোগ দেবেন আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়, হীরক ঘোষ ও অজয়কুমার রায়।’
|
অপ্রচলিত |
দেশের প্রথম অপ্রচলিত শক্তি কলেজের উদ্বোধন হল ইস্টার্ন বাইপাসের ধারে মুকুন্দপুরে। ইন্দিরা গাঁধী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অপ্রচলিত শক্তি দফতরের সৌজন্যে। কী ভাবে অপ্রচলিত শক্তি ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণ কমানো যায়, এখানকার পড়ুয়ারা সেই পাঠই পাবেন। কলেজটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘অর্ক’। এর চেয়ারম্যান শান্তিপদ গণচৌধুরী বলেন, “আমাদের দেশে সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি এবং অন্যান্য অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার দিন কে দিন বাড়ছে। কিন্তু তার ব্যবহার সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লোক খুবই কম। এই কলেজ অপ্রচলিত শক্তির প্রযুক্তিবিদ তৈরি করবে।” অস্ট্রেলীয় প্রযুক্তিবিদেরা এসে এখানে প্রশিক্ষণ দেবেন। এ ব্যাপারে নিউ সাউথ ওয়েলস সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তিও হয়েছে। গত ২ জানুয়ারি নোবেলজয়ী পরিবেশবিদ রাজেন্দ্রকুমার পাচৌরি এর উদ্বোধন করেন। সেই দিন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে কলেজের পঠন-পাঠন।
|
পাল্টাচ্ছে |
চেহারাটা পাল্টাচ্ছে। লিটল ম্যাগাজিন পাল্টে গিয়েছিল আগেই। ক্ষীণতনু হয়েছে বিশালবপু, ন্যাড়ান্যাড়া হয়েছে ঝাঁ-চকচকে। এ বার পাল্টাচ্ছে লিটল ম্যাগাজিন মেলা-র চেহারাটাও। রংবেরং-এ, শিল্পীর কল্পনায় ‘আকর্ষণীয়’ হচ্ছে মেলা। চালু হচ্ছে ‘থিম’, এ বার মুর্শিদাবাদ। সে জেলার পত্রিকাগুলির স্টল বসবে একসঙ্গে। স্টলের সংখ্যাও বেড়েছে, গত বারের চেয়ে প্রায় একশো। স্মারক-গ্রন্থ, আলোচনা-বিতর্ক তো আছেই। ১১ জানুয়ারি রবীন্দ্র সদন চত্বরে মেলার সূচনায় হাংরি জেনারেশনের অন্যতম প্রবক্তা শৈলেশ্বর ঘোষ। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির আয়োজনে এই চতুর্দশ লিটল ম্যাগাজিন মেলা চলবে ১৫ পর্যন্ত।
|
সুধা তোমাকে ভোলেনি |
শতাধিক অভিনয় করেছিল সুধার ভূমিকায় রবীন্দ্রনাথের ‘ডাকঘর’-এ। ভারত-জার্মান নাট্য প্রযোজনায় মুনমুন (দত্ত) চক্রবর্তী-র নৃত্যের মুদ্রায় ফুল তোলা কিংবা নম্র স্বরে অন্তিম সংলাপ ‘সুধা তোমাকে ভোলেনি’-র উচ্চারণ দর্শকের স্মৃতিতে এখনও অম্লান। রবীন্দ্রনাথের ‘রাজা’য় সুরঙ্গমা, ‘রথের রশি’, ‘গ্রহণ করেছ যত’ (রবীন্দ্রনাথের জার্মানি ভ্রমণ নিয়ে নাট্য কোলাজ), অথবা ‘নিয়তি ও দেবযান’-এর (হ্যোল্ডারলিনের জীবন ও রচনা নিয়ে নাট্য কোলাজ, রচনা: অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত) প্রাণবন্ত শ্যামলা এই মেয়েটি দুর্ঘটনায় অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতালে (আমরি) আগুন লাগার সময় শেষ বারের মতো তার স্বামীকে ভোর রাতে মোবাইলে আর্তস্বরে ডেকেছিল। সংবর্ত-র স্মরণসন্ধ্যায় ছিল কথা-গান-কবিতা, ওমনা-র অনুষ্ঠানে কলামন্দিরে বাজল শান্তনু গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর রেকর্ড করা শেষ সংলাপ। রয়ে গেল আধুনিক কবিতার ক্যাসেট ‘জীবন যেমন’-এ কিংবা সুকুমার সেনকে নিয়ে তথ্যচিত্রে (পরিচালনা: রাখী ঠাকুর) ৩৬ বছরেই হারিয়ে যাওয়া এই মেয়ের কণ্ঠ ও ছবি।
|
ছোটবেলায় |
১৬ নং ম্যান্ডেভিল গার্ডেন্স-এ সাউথ পয়েন্ট ইস্কুল শুরু হয় ১৯৫৪-য়। গেটের পাশেই একটা বটগাছ। সেই গাছের পাশ দিয়ে কাঁকর বিছানো একটা রাস্তা সোজা চলে গিয়েছে টালির ছাদে ঢাকা ক্লাসঘরগুলোর দিকে। ‘আজকের সাউথ পয়েন্টের সঙ্গে সেদিনের সাউথ পয়েন্টের প্রায় কোনো মিলই ছিল না।’ স্বীকারোক্তি দীপংকর দাশগুপ্তের। তাঁর আশ্চর্য স্মৃতিগদ্যে ১৬ নং ম্যান্ডেভিল গার্ডেন্স (তালপাতা, ১৫০.০০) আমাদের সামনে যেন সশরীর তুলে আনে বাঙালির কৃষ্টি-সংস্কৃতির হারিয়ে-যাওয়া একটা সময়। সেখানে পাঁচটির মধ্যে দু’টি অধ্যায়ের নামই যেমন ‘উৎপল দত্ত অনন্তের মুখোমুখি’ আর ‘শেষের কথা শ্রীকমলকুমার মজুমদার।’ স্কুলটিকে ঘিরে এমন আরও কিছু গুণী মানুষ আর তাঁদের অদ্ভুত কাণ্ডকারখানার গল্প, লিখতে-লিখতে ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছেন লেখক।
|
নায়কদের নিয়ে |
‘ওহো, আপনি তো বড্ড বড়ো হয়ে গেলেন, বড্ড লম্বা। ঠিক আছে, বসুন’। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সত্যজিতের প্রথম সংলাপ। তখন অবশ্য অপরাজিত-র অপু খুঁজছেন সত্যজিৎ। পরে অপুর সংসার-এর জন্য ডাকেন সৌমিত্রকে। এমনই সব গল্প ছড়িয়ে আছে সত্যজিতের নায়কদের নিয়ে। সে সব তাঁরা নিজেরাই বলবেন এক আড্ডায়। দ্য বেঙ্গল চেম্বারে (৬ নেতাজি সুভাষ রোড) সেই আড্ডায় থাকবেন সৌমিত্র ছাড়া ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, বরুণ চন্দ, প্রদীপ মুখোপাধ্যায় এবং অরুণ মুখোপাধ্যায়। সঞ্চালনা করবেন অলকানন্দা রায়, আয়োজক ‘দ্য বেঙ্গল চেম্বার’ ও ‘অন্যমন’। এ দিকে চার দশক পরে সত্যজিৎ-এর ‘সিকিম’ ডিভিডিতে প্রকাশ করছে এঞ্জেল ভিডিয়ো। ১৪ তারিখ থেকে তা পাওয়া যাবে। সঙ্গে সত্যজিতের নব্বই বছরে ওরাই প্রকাশ করছে ১০টি ডিভিডি-র সংগ্রাহক সংকলন। থাকছে কিছু দুষ্প্রাপ্য স্থিরচিত্র এবং একটি পুস্তিকাও।
|
নটসম্রাট |
আমি তাঁর কিছুই গোপন করতে চাইনি। আত্মীয়তা ভুলে গিয়েছি, সব কিছু দেখতে চেয়েছি নির্মোহ ভাবে। এমনকী, তাঁর যৌনজীবন পর্যন্ত।” বলছিলেন সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বপনকুমারের জীবনী লিখেছেন তিনি, ‘নটসম্রাট’ স্বপনকুমারের। ১৯৬০-’৮০ যাত্রার ইতিহাসে যে বিশিষ্ট সময়টিতে ভেঙে যাচ্ছে শহর-গ্রামের বিভাজন, প্রচারে আসছে অভিনব কৌশল সেই সময়েই স্মরণীয় হয়ে ওঠেন স্বপনকুমার। তাঁকে কেন্দ্র করেই যাত্রায় তারকাপ্রথার পুনর্নির্মাণ। স্বপনকুমারকে যাত্রার উত্তমকুমার বলা যেতেই পারে। কিন্তু উত্তমকুমারের মতোই, তাঁর প্রকৃত জীবনীও এত দিন ছিল না। মঞ্চ ও যাত্রার আধুনিক নট লিখলেন সেই জীবনী। তার সঙ্গে শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুকুল ঘোষের নেওয়া স্বপনকুমারের সাক্ষাৎকার, ‘নটসম্রাট’-এর নিজের লেখা ও প্রভাতকুমার দাসের সংযোজন মিলিয়ে তৈরি হয়েছে একটি বই, যাত্রায় স্বপনকুমার (থীমা)। আজ সাড়ে ছ’টায় প্রকাশকের ঘরে তার আনুষ্ঠানিক প্রকাশ। লেখক উপস্থাপন করবেন বইটি, দেখা যাবে স্বপনকুমারের অভিনয়ও, ভিডিয়োতে। সঙ্গের ছবি ‘শের আফগান’ থেকে। |
|
|
|
অভিনেত্রী |
অতএব বিখ্যাত জুয়েলার হরেন্দ্রকৃষ্ণ দাসের কন্যা, যে সুশ্বেতা ছদ্মনাম নিয়ে অবিনাশ ঘোষালের বিখ্যাত ‘বাতায়ন’ পত্রিকায় পরবর্তী কালে কয়েকটা গল্প লিখেছে, সে সর্বসম্মতিক্রমে ‘হাতি মার্কা’ নিউ থিয়েটার্সের নবতন নায়িকা ‘ভারতী’ হয়ে গেল।’’ শান্তিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ ভাবেই নিজের সিনেমায় আসার গল্প বলেছিলেন ভারতী দেবী। ব্যক্তিজীবনের নানা টানাপোড়েনের সময়ই বিষ্ণুচরণ ঘোষের উদ্যোগে তাঁর সিনেমায় নামা। প্রথম ছবির নাম ‘ডাক্তার’, পরিচালক ফণি মজুমদার, কাহিনি ও চিত্রনাট্য শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের। নায়ক জ্যোতিপ্রকাশ, সঙ্গীত পরিচালক পঙ্কজকুমার মল্লিক। ১৯৩৪-এ ডাক্তার মুক্তি পেতেই শুরু হয় এক দীর্ঘ জনপ্রিয় যাত্রার। তার পথিকের নাম ভারতী দেবী। সম্প্রতি প্রয়াত হলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এই উজ্জ্বল অভিনেত্রী। সতেরো বছর বয়সে চলচ্চিত্রজগতে এসেছিলেন। দীর্ঘ সত্তর বছরের অভিনয়-জীবনে অভিনয় করেছেন শতাধিক ছবিতে। কাশীনাথ, সহযাত্রী, নার্স, ইন্দ্রজাল, সাগর সঙ্গমে, নায়ক, পথে হল দেরি, নির্জন সৈকতে, আলো আমার আলো, গল্প হলেও সত্যি ইত্যাদি বহু ছবির বেশ কয়েকটি এখন লুপ্তির পথে। হিন্দি ‘সমাপ্তি’ ছবিতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেন মেহমুদ। উত্তমকুমারের সঙ্গে তাঁর প্রথম ছবি ‘মনের ময়ূর’। সত্যজিতের পরিচালনায় কাজ করেছেন ‘পরশ পাথর’, ‘নায়ক’ ছবিতে। দেবকীকুমার বসু-র ‘সাগর সঙ্গমে’-র জন্য পান স্বর্ণকমল। পরে তপন সিংহের ‘নির্জন সৈকতে-র জন্যও পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। ১৯২২-এ এই শহরেই জন্ম, মৃত্যুও হল এই কলকাতায়, ঢাকুরিয়ার বাসভবনে। তাঁকে নিয়ে একটি স্মরণসভার আয়োজন করেছে নন্দন ও তপন সিংহ ফাউন্ডেশন, ১৩ জানুয়ারি নন্দন ৩-এ। দেখানো হবে নির্জন সৈকতে। সঙ্গের ছবিটি সরিৎ মিত্রের তোলা। |
|
|
|
|
|
|
|