নিয়োগপত্র দেওয়ার পরে তিন মাস কেটে পরেও মালদহ মেডিক্যাল কলেজের ৩২ জন শিক্ষক চিকিৎসক কাজে যোগ দেননি। ওই ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। উদ্বিগ্ন রাজ্যের শিক্ষা স্বাস্থ্য অধির্কতাও। শুক্রবার মালদহ মেডিক্যাল কলেজের পরিদর্শনে এসে শিক্ষা স্বাস্থ্য অধিকর্তা সুশান্ত বন্দোপাধ্যায় বলেন, “শুধু মালদহ মেডিক্যাল কলেজেই নয়, রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজেই শিক্ষক চিকিৎসকের সঙ্কট রয়েছে। শীঘ্রই ফের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।” ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে দিল্লি থেকে মেডিক্যাল কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ইন্সপেকশনে আসবেন। মেডিক্যাল কাউন্সিলের শর্ত মেনে অক্টোবর মাসের শেষের দিকে রাজ্যের শিক্ষা স্বাস্থ্য দফতর মালদহ মেডিক্যাল কলেজে তিন দফায় ৬২ জন শিক্ষক চিকিৎসককে নিয়োগপত্র দেন। নভেম্বর মাসের মধ্যে সমস্ত শিক্ষক চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে বেশিরভাগ শিক্ষক চিকিৎসক কাজে যোগ না দেওয়ায় ডিসেম্বর মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। ৩১ ডিসেম্বরের চূড়ান্ত সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ৩২ শিক্ষক চিকিৎসক এখনও কাজে যোগ দেননি। মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, “৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যে সমস্ত শিক্ষক চিকিৎসক মেডিক্যাল কলেজে কাজে যোগ দেননি তাদের নিয়োগপত্র বাতিল করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণে শিক্ষক চিকিৎসক এখন যে মেডিক্যাল কলেজে কাজে যোগ দেননি তা রাজ্যের শিক্ষা স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে জাননো হয়েছে।” নভেম্বর থেকে মার্চ মেডিক্যাল কাউন্সিল সারা ভারতে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ইন্সপেকশন শুরু করেছে। মার্চ মাস পর্যন্ত এই ইন্সপেকসন চলবে। এর মধ্যে যদি মেডিক্যাল কাউন্সিল মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ইন্সপেকসনে আসে তবে যে সমস্যায় পড়তে হবে তা স্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, “ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে মেডিক্যাল কাউন্সিল ইন্সপেকসনে আসলে সমস্যায় পড়তে হবে। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে কিংবা মার্চ মাসে ইন্সপেকসনে আসার আগেই সম্ভবত নতুন শিক্ষক চিকিৎসক মালদহ মেডিক্যাল কলেজে কাজে যোগ দেবেন।” মালদহ মেডিক্যাল কলেজে পরিদর্শনের পাশাপাশি মালদহ সদর হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর হার কী করে কমানো যায় তা নিয়ে জেলাশাসক, জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক, সদর হাসপাতালের সুপার, মালদহ মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপালকে নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা। বৈঠকের শেষে রাজ্যের শিক্ষা স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, “শুধু মালদহেই নয়, গোটা রাজ্যে শিশু মৃত্যুর হার কমাতে রাজ্যের সমস্ত জেলার হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট খোলা হবে। মালদহ সদর হাসপাতালে এসএনসিইউর শয্যা সংখ্যা ১২ থেকে বাড়িয়ে ৩০টি করা হবে। মালদহ মেডিক্যল কলেজের বেশ কিছু শিক্ষক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কাজ না করে বেতন তোলার অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্যের শিক্ষা স্বাস্থ্য অধির্কতা বলেন, “মালদহ মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে সদর হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটা সমণ্বয়ের অভাব দেখা দিয়েছিল। মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাঁরা কাজ করবে না তাদের বেতন কাটা হবে। কড়া হাতে গোটা বিষয়টির মোকাবিলা করতে বলেছি। বেতন নেব আর কাজ করব না, এটা চলবে না।” |