রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে প্রাকৃতিক বৈচিত্রে ভরপুর সুন্দরবন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। দেশি বিদেশি পর্যটকদের কাছেও সুন্দরবনের খুব আকর্ষণীয়। দিনের পর দিন পর্যটকদের ভিড় বাড়লেও রাস্তাঘাটের তেমন উন্নতি হয়নি। বেশিরভাগ জায়গায় এমন অবস্থা যে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সুন্দরবনে বেড়াতে আসা পর্যটকদের। দীর্ঘদিন ধরে কোনওরকম সংস্কার না হওয়ায় বহু রাস্তাই খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। চলাচলের অযোগ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পর্যটকদের কাছে সুন্দরবন যাওয়ার অন্যতম প্রধান সড়কপথ ক্যানিংয়ে মাতলা সেতু পেরিয়ে শিমুলতলা হাসপাতাল মোড় হয়ে বাসন্তী। মাতলা সেতু থেকে শিমুলতলা এবং শিমুলতলা থেকে বাসন্তী রোডের অবস্থা খুবই শোচনীয়। খারাপ রাস্তার কারণে রোজ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারিদের। আবার এই রাস্তাই উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মধ্যে অন্যতম সংযোগকারী রাস্তা। প্রতিনিয়ত এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে বিভিন্ন রুটের যানবাহন। কিন্তু বেহাল রাস্তার কারণে প্রায়ই খারাপ হচ্ছে গাড়ির যন্ত্রাংশ। ঘটছে দুর্ঘটনা। ক্যানিং-বাসন্তী রুটের এক অটোচালক প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে সারাই হয় না রাস্তাঘাট। ফলে এরকম খানাখন্দে ভরা রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে প্রায়ই খারাপ হচ্ছে গাড়ির যন্ত্রাংশ। পর্যটনের মরসুম। দু’পয়সা বাড়তি আয়ের জন্য বাধ্য হয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।” |
এই রাস্তার নিত্য যাতায়াতকারী বাসন্তীর আলাউদ্দিন মল্লিক বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা সারাই না হওয়ায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। অথচ রাস্তার সংস্কার নিয়ে স্থানীয় বিধায়কদের কোনও হেলদোল নেই।” সুন্দরবনে বেড়াতে আসা পশ্চিম মেদিনীপুরের সমীর রায় বলেন, “সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য সরকার ভ্রমণ কর বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ রাস্তাঘাট খারাপ হওয়া সত্ত্বেও সেদিকে কারও নজরই নেই।”
বাসন্তীর আরএসপির বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর বলেন, “জানি না এটা দলতন্ত্র না গণতন্ত্র। আমার বিধানসভা এলাকার সমস্ত রাস্তাঘাট সংস্কারের জন্য সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রীকে গত বছরের ১৭ অক্টোবর চিঠি দিয়েছিলাম। আজ পর্যন্ত একটিও সারাই হয়নি। এমনকী কোনও উদ্যোগও চোখে পড়ছে না।” সুন্দরবন উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল বলেন, “ গত সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে কাজের প্রস্তাব জমা নেওয়া হয়েছিল। উনি প্রস্তাব জমা দিতে দেরি করেছেন। তাই সমস্যা হচ্ছে।” তবে খুব শীঘ্রই সমস্ত রাস্তার সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হবে বলে মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। |