|
|
|
|
পূর্ব মেদিনীপুর |
জেলা সমাবেশে নেই লক্ষ্মণ, বুদ্ধের গলায় সেই নন্দীগ্রাম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তনের পরে পূর্ব মেদিনীপুরে সিপিএমের প্রথম জেলা সম্মেলনের সমাবেশে শেষমেশ দেখা গেল না এক সময়ের ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ নেতা লক্ষ্মণ শেঠকে।
শুধু লক্ষ্মণবাবুই নন, শুক্রবার তমলুকের নিমতৌড়িতে আয়োজিত সমাবেশে ছিলেন না জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর আরও দুই সদস্য অমিয় সাহু, অশোক গুড়িয়াও। মঞ্চের আশপাশে দেখা যায়নি হিমাংশু দাস, বিজন রায়ের মতো এক সময়ের ‘দাপুটে’ নেতাদেরও। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের মতো রাজ্যস্তরের নেতারা উপস্থিত থাকলেও নন্দীগ্রামের জেলায় সিপিএমের সম্মেলনে কোথাও ‘ফাঁক’ থেকেই গেল! যার কারণ দর্শাতে বিমানবাবু বললেন, “আমাদের দলের বহু নেতা-কর্মী-সমর্থকের নামে মিথ্যে মামলা রুজু করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। মিথ্যে মামলা হয়েছে বলে যাঁরা জানতে পারছেন, তাঁরা গ্রেফতার বরণ করতে এগিয়ে আসবেন না।” |
|
নিমতৌড়ির সভায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র। |
এ দিন থেকে শুরু হওয়া সিপিএমের ২১তম পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত এই সমাবেশ বিধানসভা নির্বাচনের পরে নন্দীগ্রামের জেলায় বুদ্ধবাবুদের প্রথম জনসভা। সমাবেশ নিয়ে বুদ্ধবাবু বলেন, “বহু কর্মী এলাকাছাড়া। তাই সমাবেশ কেমন হবে, তা নিয়ে চিন্তা ছিল। তবে মাঠে এসে মন ভরে গিয়েছে!” তাঁর বক্তব্যে ঘুরেফিরে এসেছে সেই নন্দীগ্রাম। শিল্পের পক্ষে সওয়াল করে তিনি বলেন, “আজ হলদিয়ায় এক লক্ষ মানুষ কাজ করেন। নন্দীগ্রামে আরও একটা হলদিয়া করতে চেয়েছিলাম।” এর পরেই তাঁর প্রশ্ন, “জমি নেওয়া হবে না জানানোর পরও কেন মাসের পর মাস গোলমাল হল নন্দীগ্রামে? মাওবাদীদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে অশান্তি তৈরি করল তো তৃণমূলই!” বেছে বেছে সিপিএম নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ধরা হচ্ছে দাবি করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তৃণমূলও অন্যায় করেছিল। শঙ্কর সামন্তকে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল। পুলিশ-কর্মীদের উপরে আক্রমণ হয়েছিল। কিন্তু ওদের কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না।” যাঁরা সিপিএম থেকে মুখ ফিরিয়েছেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনার কথাও বলেন বুদ্ধবাবু।
রাজ্য সরকারকে দুষে বুদ্ধবাবু বলেন, “সাত মাসে কী দেখছি? প্রথমেই চেষ্টা হল গরিবদের জমি কেড়ে নেওয়ার। কৃষকেরা চালকলে গিয়ে ধর্না দিচ্ছেন। সরকার ধান কিনছে না। ১১০০ টাকার ধান ৬০০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এটাই কী পরিবর্তন?” এর পরই শিল্পের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “শালবনি, রাজারহাটে উইপ্রো-ইনফোসিসের ব্যবস্থা আমরা করেছি। সাত মাসে একটাও নতুন কারখানা আসেনি। আসবে কী করে? শিল্পের জন্য তো জমি লাগবে! সরকার জমি দিতে পারছে না।”
একই সুরে বিমানবাবুও বলেন, “তৃণমূলের নীতি বড় মানুষকে সাহায্য করা। কৃষকেরা ঋণের জালে আবদ্ধ। ১২ জন আত্মহত্যা করেছেন।” আর বিরোধী দলনেতা সূর্যবাবু বলেন, “সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আমরা এই জেলা থেকেই আবার ফিরে আসতে চাই।” নন্দীগ্রাম-পর্বের পরে পঞ্চায়েত ভোটে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জেলা পরিষদ জিতেই মহাকরণ-জয়ের পথে যাত্রা শুরু হয়েছিল তৃণমূলের। |
|
|
|
|
|