রায়গঞ্জের কলেজে অধ্যক্ষ নিগ্রহের প্রতিবাদে ছাত্র পরিষদের পথ অবরোধের জেরে শুক্রবার দুপুরে দীর্ঘ ক্ষণ কার্যত স্তব্ধ রইল
উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা। দক্ষিণে হাজরা মোড় এবং উত্তরে মহাত্মা গাঁধী রোড ও কলেজ স্ট্রিটের সংযোগস্থলে বেলা ১২টা থেকে ঘণ্টাখানেকের পথ অবরোধে প্রবল যানজটের জেরে বিকেল পর্যন্ত দুর্ভোগ পোহাতে হল কলকাতাকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন মহাত্মা গাঁধী রোড ও কলেজ স্ট্রিটের সংযোগস্থলে অবরোধ শুরু হয় বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ। গাড়ির গতি থমকে যায় চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ও বিপিন বিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিটে। যানের জটে গতি স্লথ হয়ে পড়ে গোটা উত্তর ও মধ্য কলকাতার। মিনিট কুড়ি পরে অবরোধ উঠলেও জনা ষাটেক অবরোধকারী বিপিন বিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিট ও ফিয়ার্স লেনের সংযোগস্থল পর্যন্ত হেঁটে ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের চেষ্টা করেন। সেখানে দুই মহিলা-সহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্য দিকে, হাজরা মোড়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডে অবরোধের জেরে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় দক্ষিণ কলকাতার যানচলাচল। অবরোধে আটকে পড়ে হাসপাতালমুখো অ্যাম্বুল্যান্স। স্কুলফেরতা পড়ুয়া। সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়া বাস থেকে নেমে হেঁটে, মেট্রোয় চেপে গন্তব্যে পৌঁছতে বাধ্য হয়েছেন অনেকেই। বেলা ১টার পরে উত্তর ও দক্ষিণের ‘জোড়া’ অবরোধ উঠতে না উঠতেই বেলা আড়াইটে নাগাদ ছাত্র পরিষদ এবং দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেস সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখান মহাকরণের সেন্ট্রাল গেট-এর সামনে। সঙ্গে সঙ্গে ওই ঘটনায় ২৬ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।
দিনভর এই ভাবে কংগ্রেসের পথ অবরোধ কর্মসূচির সমালোচনা করে মহাকরণে তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “সব রাজনৈতিক দলের কাছে মুখ্যমন্ত্রী বারবার অনুরোধ করছেন বন্ধ, অবরোধের রাজনীতি বন্ধ করতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমাদের বন্ধুরা রাস্তা অবরোধ করে, নোংরামি করে সাধারণ মানুষের অসুবিধে সৃষ্টি করছেন।” একই সঙ্গে মন্ত্রীর অভিযোগ, “একটা ছোট্ট কলেজের ইস্যু। বন্ধুরা যা করছেন, যেন এটাই বড় কাজ। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, বন্ধ কারখানার সমস্যা যেন নেই। রায়গঞ্জ কলেজের ঘটনাই কি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যা? কখনও ইন্দিরা ভবন, কখনও ধানের দাম নিয়ে ধর্নার নামে কংগ্রেস রাস্তা অবরোধ করে অসভ্যতা করছে।” এর জবাবে প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “ফিরহাদ হাকিমের
নেত্রীই তো অবরোধের স্রষ্টা। দিনের পর দিন দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ করে রেখেছিলেন ওঁরা। ওঁরা সে সব কি ভুলে গিয়েছেন? অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে পথে তো নামতে হবেই।” |