চোখে ঝাপসা দেখেন অভিজিত ধর। মাথার ভিতরটাও মাঝে মাঝে কেমন করে। মুদির দোকান চালিয়ে কোনও রকমে দিন গুজরান হয় তাঁর। বিষ মদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় গত ৪ বছর ধরে অভিজিতের মতো বালুরঘাটের চকভৃগুর ময়ামারি এলাকার বিপ্লব ধর, বিশ্বজিত সরকার, রূপক সেনেরা শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন নানা উপসর্গ। ২০০৭ সালে এলাকার একটি সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত পানশালায় ভেজাল বিলিতি মদ খেয়েছিলেন তাঁরা। ওই ঘটনায় মারা যান ৮ জন। অসুস্থ হন প্রায় ত্রিশ জন যুবক। তাঁরা প্রাণে বাঁচলেও পুরো সুস্থ নন কেউই। উন্নত চিকিৎসার আশায় তাদের অনেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হচ্ছেন। কেউ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখছেন। কেউ বা এলাকার তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের কারামন্ত্রীর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। এ প্রসঙ্গে রবিবার কারামন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, “খবর পেয়েছি। তবে এখনই এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।” ওই ঘটনায় ময়ামারি এলাকায় ১১ জন অসুস্থ হয়েছিলেন। মারা যান দুই যুবক সুবীর দত্ত এবং দীপেন ধর। রবিবার বাড়ির সামনে বসে অভিজিতের মা বিউটি দেবী বলেন, “ওই সময় কেউ সাহায্য করেনি। নতুন সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাব।” একমাত্র ছেলে দীপেনকে হারিয়ে শোকে দিশেহারা বিধবা মা বাবলি দেবী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সংবেদনশীল। তাঁর কাছে চিঠি লিখে সব জানাব।” চোখের দৃষ্টিশক্তি পুরো ঠিক না-হওয়া তন্ময় দাসের বৃদ্ধা মা ছায়ারানি দেবীর কথায়, “ছেলের চোখের ভাল চিকিৎসা করার সামর্থ্য নেই। সাইকেল মেরামতি করে। ওর সামান্য রোজগারে কোনও মতে সংসার চলে। মুখ্যমন্ত্রী ভাল মানুষ। ওঁর উপর ভরসা আছে। চিঠি পেলে নিশ্চয়ই একটা ব্যবস্থা নেবেন।” |