|
|
|
|
আমরির আঁচ |
সতর্কতা নেই হাসপাতালে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
যত্রতত্র ঝুলছে বিদ্যুতবাহী তার। বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিদ্যুতের সুইচবোর্ড খোলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। শুধু তাই নয়, ভিড় সামলাতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিদ্যুতের সুইচবোর্ডের নিচে সার দিয়ে বেড পেতে রোগীদের শুইয়ে রাখা হয়েছে। এমনকী প্রবল ঠাণ্ডার কারণে প্রসূতি বিভাগে প্রসূতি ও সদ্যোজাতদের শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে কর্তৃপক্ষের তরফে বিভিন্ন বেডের ওপরে ঝোলানো একাধিক বাল্বের বিদ্যুতবাহী তার ধাতব বেডের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। ওই তার অনেক সময় প্রসূতিদের শরীরের সংস্পশের্র্ চলে আসারও ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনা রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের। কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতিতে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে বড়সড় অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা করছেন চিকিৎসাধীন রোগী ও পরিবারের লোকজনেরা। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে জতুগৃহে পরিণত হয়েছে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড। রোগীরা আতঙ্কে রয়েছেন। যত্রতত্র ঝুলে থাকা বিদ্যুতবাহী তারের সংস্পর্শে এসে যে কোনও সময়ে চিকিৎসাধীন রোগী তড়িদাহত হয়ে বিপদের মুখে পড়তে পারেন বলেও আশঙ্কা করছেন পরিবারের লোকজনেরা। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তাঁদের অভিযোগ, কলকাতার আমরি হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরও রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিক্ষা নেননি। অবিলম্বে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্থায়ী ভাবে বিদ্যুৎ লাইনের মেরামতি করা না হলে রাজনৈতিক দলগুলির তরফে আন্দোলনে নামার হুমকি দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুতের লাইনের মেরামতি হয়নি। যত্রতত্র ঝুলে থাকা বিদ্যুতবাহী তারের জেরে যে কোনও সময়ে হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড-সহ বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ লাইন মেরামতির কাজ শুরু করা হবে।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে বিদ্যুৎ লাইনের মেরামতির কাজ হয়নি। বিভিন্ন ওয়ার্ডের কয়েকশো মিটার এলাকা জুড়ে বিদ্যতবাহী তার ঝুলে রয়েছে। রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজন ওই তারের নিচ দিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। রায়গঞ্জের কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা পেশায় স্কুল শিক্ষক বিশ্বজিত সরকার বলেন, “ডানহাত ভেঙে যাওয়ায় হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলাম। হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ-সহ যেভাবে যত্রতত্র বিদ্যুতবাহী তার ঝুলে রয়েছে তাতে আতঙ্কে ভর্তি হলাম না। বাইরে থেকে চিকিৎসা করাব।” উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল জতুগৃহে পরিণত হয়েছে। অবিলম্বে হাসপাতালে স্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ লাইনের মেরামতি করা না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য হাসপাতাল সুপারের দফতর ঘেরাও করা হবে।” জেলা বামফ্রন্টের সচিব অপূর্ব পাল বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে স্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ লাইন মেরামতির দাবি জানিয়ে আসছি। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কেনও হুঁশ ফিরছে না তা বুঝতে পারছি না। হাসপাতাল চত্বরে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান বিক্ষোভে বসতে বাধ্য হব।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অসীম ঘোষ বলেন, “পূর্বতন রাজ্য সরকারের আমলেই হাসপাতাল জতুগৃহে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের ঘটনা এড়াতে ও রোগীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দলের তরফে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কাছে বিদ্যুৎ লাইন মেরামতির দাবি জানিয়েছি। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকেও জানানো হয়েছে।” |
|
|
|
|
|